E-Paper

বিশেষ অধিবেশনের দাবিতে ‘ইন্ডিয়া’ একজোট

‘আমরা’ বলতে কংগ্রেস ছাড়াও এসপি, ডিএমকে, উদ্ধবপন্থী শিবসেনা, আপ, বাম দল, জেএমএম, আইইউএমএল-এর মতো দলগুলির কথা উল্লেখ করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২৫ ০৯:২১
বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র চতুর্থ বৈঠকে বিরোধী নেতানেত্রীরা।

বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র চতুর্থ বৈঠকে বিরোধী নেতানেত্রীরা। ছবি: পিটিআই।

সামনে লোকসভা ভোট নেই। তাই ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চে কংগ্রেসের সঙ্গে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে কোনও পদক্ষেপ করারও প্রশ্ন নেই বলেই অবস্থান তৃণমূলের। তাদের যুক্তি, তৃণমূলই বিরোধী জোটের একমাত্র দল, যাদের সঙ্গে কোনও স্তরেই কংগ্রেসের কোনও ভোট-সমঝোতা নেই। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সাম্প্রতিক বাজেট অধিবেশনে ওয়াকফ বিল নিয়ে সরকারের সঙ্গে লড়াইয়ে কংগ্রেসের ডাকা বিরোধী বৈঠকে যোগ দিয়েছিল তৃণমূল। তার মাস দেড়েকের মধ্যেই ফের ইন্ডিয়া মঞ্চের সমন্বয়ের চেহারা স্পষ্ট হল রাজধানীতে। পহেলগামের জঙ্গি হামলার পরে সংসদের বিশেষ অধিবেশনের দাবি নিয়ে বিরোধীরা ঐক্যের ছবিকেই তুলে ধরছেন। আজ তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের বক্তব্য, “আমরা যারা বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াই করছি, সংসদের বিশেষ অধিবেশনের দাবি নিয়েও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেই এগোচ্ছি।” তৃণমূল শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, “কংগ্রেস এবং তৃণমূল যদি একসঙ্গে পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে সেটা তাৎপর্যপূর্ণ তো বটেই।”

‘আমরা’ বলতে কংগ্রেস ছাড়াও এসপি, ডিএমকে, উদ্ধবপন্থী শিবসেনা, আপ, বাম দল, জেএমএম, আইইউএমএল-এর মতো দলগুলির কথা উল্লেখ করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, আরজেডি-র নেতা তেজস্বী যাদবের সঙ্গে কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ঘণ্টা দেড়েক কথা বলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে। শরদ পওয়ারের নাম এই তালিকায় নেই, কারণ তিনি বেসুরে বাজছেন বলেই জানাচ্ছে তৃণমূল।

এর মধ্যে জুনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি আসতে পারেন। এই নিয়ে আজ ডেরেক বলেন, “তৃণমূলের একজন সাংসদ হিসাবে আমি তো অবশ্যই চাইব আমাদের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সনদিল্লিতে আসুন।”

বিশেষ অধিবেশনের দাবি নিয়ে কংগ্রেসও মুখ খুলেছে। লোকসভায় দলের উপদলনেতা গৌরব গগৈ বলেন, “সবার প্রথমে রাহুল গান্ধী খুব স্পষ্টভাবে বিশেষ অধিবেশনের দাবি তুলেছিলেন। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবও বিভিন্ন মঞ্চে এই দাবি তুলেছেন। আমি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি পড়েছি। উনিও এই দাবি করেছেন। আমরা ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা এই বিষয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছি।” এই প্রসঙ্গে এনসিপি-র শরদ পওয়ার আগেই জানিয়েছেন, সামরিক বাহিনীর অভিযানের মতো স্পর্শকাতর এবং নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা উচিত নয়। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা পাল্টা বলেছেন, “আমরা তো সেনাবাহিনীর খুঁত ধরার জন্য অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনা চাইছি না। প্রথমে যা বলেছিলাম, এখনও তাই বলছি— সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে আমরা একসঙ্গে রয়েছি, বিশেষ অধিবেশনে আমরা সেই বার্তা দেব। আর পহেলগাম সন্ত্রাস কেন ঘটল, কোথায় গোয়েন্দা ব্যর্থতা থেকে গেল, সেই জঙ্গিরা এখন কোথায়, সরকার কেন সিদ্ধান্ত নিল সংঘর্ষ বিরতির— এই প্রশ্নগুলির উত্তর পাওয়া দরকার। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কেন ভারতের আগেই সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করে দিলেন, এই বিষয়টিও স্পষ্ট ভাবে জানতে চাইছি।”

সূত্রের খবর, সরকারের কাছ থেকে যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে এটাই মনে করা হচ্ছে যে, বিশেষ অধিবেশনে খুব একটা ইচ্ছুক নয় কেন্দ্র। সরকারের মনোভাব, অপারেশন সিঁদুর এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সমস্ত তথ্য ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। দু’দুটি সর্বদলীয় বৈঠকেও সব বলা হয়েছে। তা ছাড়া বাদল অধিবেশন আসছে। সেখানে যত সময় বিরোধীরা চাইবেন, অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনার জন্য তা দেওয়া হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy