সংঘর্ষবিরতির পর সোমবার প্রথম আলোচনায় বসতে চলেছে ভারত এবং পাকিস্তান। দু’দেশের সামরিক বাহিনীর ‘ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন্স’ (ডিজিএমও) স্তরে বৈঠক হবে। দুপুর ১২টায় ওই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। ওই বৈঠকে কোন কোন বিষয় উঠে আসতে পারে তা নিয়ে ইতিমধ্যে জল্পনা এবং কৌতূহল দানা বাঁধতে শুরু করেছে আমজনতার মনে। বৈঠকের আলোচ্য বিষয়বস্তু নিয়ে ভারতের তরফে এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে পাকিস্তান কী কী বিষয়ে আলোচনা চাইছে, তার একটি আভাস পাওয়া গিয়েছে সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফের মন্তব্যে।
রবিবার পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা। সেখানে সিন্ধু জলচুক্তি এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রসঙ্গের পাশাপাশি কাশ্মীর সমস্যার প্রসঙ্গও পাকিস্তান আলোচনায় তুলে ধরতে পারে বলে দাবি খোয়াজার। রবিবার সন্ধ্যায় ভারতের তিন বাহিনী একটি যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেছে। সেখানে ভারতীয় সেনার ডিজিএমও রাজীব ঘাইও উপস্থিত ছিলেন। সোমবার তাঁর সঙ্গেই আলোচনায় বসতে চলেছেন পাক সেনার ডিজিএমও। তবে বৈঠকে ভারত কী কী বিষয় তুলে ধরতে পারে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি ঘাই।
এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা ওই সাংবাদিক বৈঠকে ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মূল লক্ষ্যই ছিল জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা। পাকিস্তান হামলা করায় প্রত্যাঘাত করতে হয়েছে। পাকিস্তান কী ভাবে হামলা চালিয়েছিল, ভারত কী ভাবে প্রত্যাঘাত করেছে, তা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যাও দেওয়া হয় ভারতের তরফে। কোনও ধরনের আগ্রাসী মনোভাব যে বরদাস্ত করা হবে না, সে বিষয়টিও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সেনার ডিজিএমও ঘাই জানিয়েছেন, শনিবার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের বিষয়ে ইতিমধ্যে হটলাইনে বার্তা দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানি ডিজিএমওকে। এই পরিস্থিতিতে সোমবারের বৈঠকেও সংঘর্ষবিরতি এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
বস্তুত, পহেলগাঁও কাণ্ডের পরে ভারত এবং পাকিস্তান উভয়েই একে অন্যের বিরুদ্ধে বেশ কিছু তাৎক্ষণিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ করেছিল। তার মধ্যে অন্যতম হল ভারতের তরফে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করে দেওয়া। শনিবার মার্কিন মধ্যস্থতায় সংঘর্ষবিরতিতে দু’দেশের সমঝোতা হলেও সিন্ধু জলচুক্তি এবং অন্য কূটনৈতিক পদক্ষেপগুলি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। ভারত সরকারের সূত্রকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে, সংঘর্ষবিরতিতে দু’দেশ সম্মত হলেও ওই কূটনৈতিক পদক্ষেপগুলির বিষয়ে নতুন করে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। যদিও কেন্দ্রের তরফে এই বিষয়ে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।