কূটনীতিকদের চর হিসেবে চিহ্নিত করার পালা চলছিলই। এ বার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উত্তাপ আরও বাড়িয়ে ভারত ও পাকিস্তান পরস্পরের রাজধানী থেকে রাষ্ট্রদূতও সাময়িক ভাবে প্রত্যাহার করে নিতে পারে দিল্লি ও ইসলামাবাদ। অন্তত তেমনটাই দাবি পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের। তবে বিষয়টিকে ‘জল্পনা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতীয় কূটনীতিকরা।
সম্প্রতি দিল্লিতে পাক হাইকমিশনের কর্মী মেহমুদ আখতার চরবৃত্তির দায়ে আটক হওয়ার পরেই ফের বেড়েছে উত্তেজনা। দিল্লি পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়, মেহমুদকে জেরা করে পাক হাইকমিশনের কর্মীদের মধ্যে আরও পাঁচ চরকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তাঁদের নামও প্রকাশিত হয় ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে। সেই পাঁচ জনকেও দেশে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয় ইসলামাবাদ। পাল্টা হিসেবে ভারতীয় হাইকমিশনের আট জন কর্মীকে চর হিসেবে চিহ্নিত করেছে পাক সরকার। তাঁদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে ভারত সরকার।
পাক বিদেশ মন্ত্রক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সে দেশের এক সংবাদপত্র জানিয়েছে, এই উত্তেজনার জন্য ভারতই দায়ী বলে মনে করে ইসলামাবাদ। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাক কূটনীতিকের কথায়, ‘‘প্রত্যেক দেশের দূতাবাসেই কয়েক জন অফিসার আসল পরিচয় গোপন করে কাজ করেন। সেটা সংশ্লিষ্ট দু’দেশের সরকারই জানে। কিন্তু ভারত সেই বোঝাপড়া ভেঙে আসল পরিচয় প্রকাশ করে দিয়েছে।’’ ওই কূটনীতিকের মতে, এ বার পাক হাইকমিশনার আব্দুল বসিতকেও দিল্লি থেকে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভারতও সরাতে পারে ইসলামাবাদে তাদের দূত গৌতম বাম্বাওয়ালেকে। এই পদক্ষেপ করা হলে রীতি অনুযায়ী দু’দেশের হাইকমিশনে কর্মীর সংখ্যাও কমানো হবে। ভারত-পাক উত্তেজনার জেরে কূটনীতিকদের টানাপড়েন নতুন বিষয় নয়। ২০০১ সালের ডিসেম্বর মাসে সংসদে হামলা চালায় পাকিস্তানি জঙ্গিরা। তার পরে ইসলামাবাদ থেকে তৎকালীন হাইকমিশনার বিজয় নাম্বিয়ারকে দেশে ফেরায় অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার। ২০০২ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তান দিল্লি থেকে ফিরিয়ে নেয় তাদের তৎকালীন দূত আশরফ জাহাঙ্গির কাজিকে।
২০০২ সালেই পাক হাইকমিশনের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান (শার্জে দাফেয়ার) জলিল আব্বাস গিলানির বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত কনফারেন্সকে অর্থ জোগানোর অভিযোগ আনে দিল্লি। গিলানি ও হাইকমিশনের চার কর্মীকে বহিষ্কারও করে অটল সরকার। জবাবে ভারতীয় হাইকমিশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান সুধীর ব্যাস ও চার কর্মীকে সরায় ইসলামাবাদ।
গত কাল এক প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেন, ‘‘রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে করা হয়।’’ আজ অবশ্য সরকারি ভাবে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি দু’দেশ। তবে পুরো বিষয়টিকেই ‘জল্পনা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতীয় কূটনীতিকরা। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘এমন জল্পনার কোনও অর্থই হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy