সরুসজাই স্টেডিয়ামে বিজেপির কর্মিসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার গুয়াহাটিতে উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।
অসমের স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশকে জমি হস্তান্তর করা হবে দু’দেশের স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়ে এমনই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কেন্দ্রে ইউপিএ সরকারের আমলে অসমের কিছুটা জমি বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার ‘স্থলসীমান্ত চুক্তি’ নিয়ে বিরোধিতায় সরব হয়েছিল বিজেপি। কিন্তু আজ মোদী বলেন, “অসমের স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই জমি হস্তান্তর করা হবে। তবে কোনও ভাবেই অসমের লোকসান হতে দেব না।” প্রধানমন্ত্রী স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়ে এগোবার ইঙ্গিত দেওয়ায় আসু উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য বলেন, “বিজেপি এমন কিছু করার আগে যেন প্রাক-নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কথা মনে রাখে।” এ দিন মোদী আরও বলেন, “জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রেও দেশ ও রাজ্যের স্বার্থ আগে দেখা হবে। এটুকু বিশ্বাস রাখতে পারেন, যে প্রকল্পই করা হোক না কেন, তাতে অসমের উন্নতি হবে।”
আজ গুয়াহাটির সরুসজাই ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে বিজেপি কর্মিসভায় বক্তৃতা দেন প্রধানমন্ত্রী। লোকসভা ভোটের আগে অসমের উন্নয়নের জন্য দেওয়া সমস্ত প্রতিশ্রুতি পূরণের কথা জানান। বাংলাদেশ থেকে অসমে অনুপ্রবেশ বন্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ করার আশ্বাসও দেন। একই সঙ্গে মোদী বললেন, “অসম বা উত্তর-পূর্বকে কোনও শক্তি আঘাত করতে পারবে না। পারবে না দুর্বল করতেও। যারা এ রকম কিছু করতে চায়, কেন্দ্র তাদের খুঁজে বের করে সাজা দেবে।” প্রধানমন্ত্রী জানান, গত কাল মেঘালয় পর্যন্ত রেল যোগাযোগের সূচনার জেরে, ভবিষ্যতে উত্তর-পূর্ব আরও দ্রুত বিকাশের শরিক হবে।
জমি হস্তান্তর চুক্তি ও বৃহৎ নদীবাঁধ তৈরি নিয়ে এক সময় ইউপিএ সরকারকে তুলোধোনা করেছিল বিজেপি। কিন্তু কেন্দ্রে সরকার গঠনের পর তারাই নদীবাঁধ তৈরির কথা বলেছে। বাঁধের কাজে বাধা দেওয়ায় অসমের কয়েকটি সংগঠনগুলির নিন্দা করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। প্রদেশ বিজেপি নেতাদের একাংশের বক্তব্য, এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বার অসম সফরে এসে তাই নরেন্দ্র মোদী জানিয়ে গেলেন, অসমের উন্নয়নের দিকে নজর রেখেই তিনি সমস্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর অসম সফরের ঠিক আগে, ভবিষ্যতে সরুসজাই স্টেডিয়ামে খেলা সংক্রান্ত অনুষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনও সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। এ দিন তার পাল্টা জবাব হিসেবে বক্তৃতার শুরুতে রাজনৈতিক স্লোগানের বদলে স্টেডিয়ামে উপস্থিত দলীয় সদস্য-সমর্থকদের শৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ জানালেন মোদী। সভার পর মাঠ সাফাই করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও আদায় করলেন। ৩৫ হাজার দর্শকের ক্ষমতাসম্পন্ন সরুসজাইতে তখন ৫০ হাজার ভিড়। অনেকে মাঠে ঢুকতে না পেরে বাইরে দাঁড়িয়ে। প্রধানমন্ত্রীকে দেখার জন্য হুড়োহুড়িতে জখমও হন কয়েক জন।
পাঁচ দিনের মধ্যে প্রদেশ বিজেপি এত বড় সভার আয়োজন করায় বিস্ময় প্রকাশ করে মোদী বলেন, “দেশের মানুষ কংগ্রেসের সরকার দেখেছেন। রাজ্যে রাজ্যে জোট সরকার দেখেছেন। তাই তাঁরা বর্তমানে ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকারের কাজের সঙ্গে পুরনো আমলের তুলনা করতে পারেন। তখন সকলেই বুঝতে পারবেন, এই সরকারের একটাই মন্ত্র বিকাশ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy