ফ্রান্সের সঙ্গে ২৬টি ‘রাফাল মেরিন’ (রাফাল-এম) যুদ্ধবিমানের চুক্তি নিয়ে আলোচনা প্রায় শেষ পর্যায়ে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৮ এপ্রিল ভারত এবং ফ্রান্সের মধ্যে রাফাল চুক্তি সই হতে পারে। ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়েঁ লেকোনিউ থাকতে পারেন এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে। তবে এই চুক্তি কোথায় সই হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
সংবাদ সংস্থা এনআইএ সূত্রে খবর, আগামী ২৮ এপ্রিল ৬৩ হাজার কোটি টাকার চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে ভারত এবং ফ্রান্সের মধ্যে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক সূত্রের দাবি, সাউথ ব্লকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সদর দফতরের সামনেই দুই দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে চুক্তি সই হবে। এই চুক্তি উপলক্ষে ২৭ এপ্রিল ভারতে আসতে পারেন ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার কমিটি ভারত-ফ্রান্সের মধ্যে এই রাফাল চুক্তির বিষয়ে অনুমোদন দেয়। তার পরই চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে তোড়জোড় শুরু হয়। এর মধ্যে ২২টি এক আসনের নৌ-সংস্করণ, যেগুলি ভারতীয় নৌসেনাকে দেওয়া হবে। বাকি চারটি দুই আসনের প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
২০১৬ সালে ফ্রান্স থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান ভারতে আনার চুক্তি হয়। সেইমতো রাফালের প্রথম ব্যাচটি এসে পৌঁছোয় ২০২০ সালের জুলাই মাসে। এ বার বায়ুসেনার পাশাপাশি নৌসেনার হাতেও ২৬টি যুদ্ধবিমান এলে জলপথ থেকেই আক্রমণ শানাতে পারবে ভারত। ক্যাটোবার প্রযুক্তি থাকায় বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ থেকেই উড়ান কিংবা অবতরণ করতে পারবে রাফাল-এম। বায়ুসেনা রাফাল যুদ্ধবিমানগুলি বর্তমানে হরিয়ানার অম্বালা এবং আলিপুরদুয়ারের হাসিমারার দুই ঘাঁটি থেকে পরিচালিত হয়।
এক দশক আগে ফরাসি সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে রাফাল চুক্তির সময়ই বায়ুসেনা জানিয়েছিল, তাদের দরকার ১২৬টি যুদ্ধবিমান। কিন্তু সেই সময় ফরাসি সংস্থা রাফালকে বরাত দেওয়া হয় ৩৬টি যুদ্ধবিমানের। অন্য দিকে, ধাপে ধাপে মিগ-২১ বাতিল হওয়ায় ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানের ভাঁড়ারে সংখ্যার ঘাটতি তৈরি হয়েছে। শুধুমাত্র রাফাল বা দেশে তৈরি তেজসের নয়া সংস্করণ ‘মার্ক-১এ’-র সাহায্যে তা পূরণ করা সম্ভব নয়। ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে ৪২টি ফাইটার স্কোয়াড্রন থাকার কথা। কিন্তু তা এখন ৩২-এ নেমে এসেছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর। সেই পরিস্থিতিতে আকাশপথের পাশাপাশি জলপথেও শক্তি বৃদ্ধি করতে নতুন রাফাল চুক্তি খুবই উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা।