Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের অ্যাকাউন্টের তথ্য পেল দিল্লি

সুইস ব্যাঙ্কে টাকা রাখা ভারতীয়দের সম্পর্কে এই তথ্য হাতে পেতে ওই দেশের কর বিভাগের সঙ্গে (ফেডারেল ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এফটিএ) চুক্তি সই করেছিল মোদী সরকার, প্রথম দফায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব  সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২৬
Share: Save:

সুইস ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকা ভারতীয়দের বিষয়ে তথ্য সম্প্রতি হাতে পেয়েছে দিল্লি— এই প্রথম। দু’দেশের চুক্তির দৌলতে এ বার থেকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর তা আসতে থাকবে কেন্দ্রের কাছে। কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যা বড় সাফল্য বলে সরকারি পক্ষের দাবি। তবে চুক্তির পরে খোলা নয়া অ্যাকাউন্ট কিংবা তথ্য পাঠানোর আগেই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া কালো টাকার কারবারিরা ছাড় পেয়ে যাবেন কি না, সে প্রশ্ন থাকছে।

সুইস ব্যাঙ্কে টাকা রাখা ভারতীয়দের সম্পর্কে এই তথ্য হাতে পেতে ওই দেশের কর বিভাগের সঙ্গে (ফেডারেল ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এফটিএ) চুক্তি সই করেছিল মোদী সরকার, প্রথম দফায়। দাবি করেছিল, কালো টাকার বিরুদ্ধে ‘জিহাদে’ বিদেশ থেকে এই গোপন তথ্য আনার চু্ক্তি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এফটিএ-র মুখপাত্র সংবাদসংস্থা পিটিআইকে সোমবার জানিয়েছেন, সম্প্রতি সেই তথ্যেরই প্রথম ভাগ হাতে পেয়েছে দিল্লি। পরবর্তী তথ্য মিলবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ।

সুইস কর বিভাগের সঙ্গে এমন তথ্য লেনদেনের চুক্তি আছে মোট ৭৫টি দেশের। কিন্তু এই চুক্তিতে ইউরোপীয় দেশটির রাজি হওয়ার প্রথম শর্তই হল, চূড়ান্ত গোপনীয়তা রক্ষার প্রতিশ্রুতি। সেই কারণে যে তথ্য ইতিমধ্যে ভারতকে পাঠানো হয়েছে, তাতে কাদের নাম রয়েছে, কতগুলি অ্যাকাউন্ট, অর্থের অঙ্ক মোট কত—তার কিছুই জানাতে চাননি এফটিএ মুখপাত্র। তবে সরকারের ঘরে পাঠানো তথ্যে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের নাম, তাঁদের ঠিকানা, অর্থের পরিমাণ ইত্যাদি বিস্তারিত রয়েছে বলে খবর।

এফটিএ জানিয়েছে, কোনও দেশের করদাতারা আয়করের রিটার্নে বিদেশে গচ্ছিত রাখা সম্পদের পরিমাণ ঠিকঠাক দেখাচ্ছেন কি না, তা যাচাই করতে এই তথ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতেও, কালো টাকার কারবারিদের চিহ্নিত করতে কেন্দ্রের হাতিয়ার হতে পারে এই তথ্য। কারণ, শুধু সুইস অ্যাকাউন্টে থাকা টাকার অঙ্ক নয়, সেখানে লেনদেনের সব খুঁটিনাটিও এর মাধ্যমে আসবে কেন্দ্রের কাছে।

সুইস ব্যাঙ্কে টাকা রাখা মানেই যে তা কালো টাকা, এমন নয়। ব্যবসার প্রয়োজনে কিংবা কর দেওয়ার পর সঞ্চয়ের জন্য কেউ টাকা রাখতেই পারেন সেখানে। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কযেক জন অফিসারের দাবি, এই তথ্যে ব্রিটেন, আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের বাসিন্দা তথা বেশ কিছু সন্দেহভাজন ব্যবসায়ীর নাম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে একই সঙ্গে আশঙ্কা রয়েছে ‘জাল গলে মাছ পালানোরও’। কারণ, এই চুক্তি হওয়ার সময়েই ঠিক হয়েছিল যে, তা কার্যকর হওয়ার আগে যে সমস্ত অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে, তাদের সম্পর্কে কোনও তথ্য আর পাবে না কেন্দ্র। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে চুক্তির আগে ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে অন্তত ১০০টি অ্যাকাউন্টের, যেগুলির বড় অংশ ছিল সন্দেহভাজন করখেলাপিদের নামে। অনেকের সম্পর্কে করফাঁকির প্রমাণও পেশ করেছিল কেন্দ্র। এঁদের অনেকে যুক্ত ছিলেন গাড়ি যন্ত্রাংশ, রাসায়নিক, বস্ত্র, আবাসন, ইস্পাত, হিরে এবং গয়না ব্যবসার সঙ্গে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Black Money Swiss Bank Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE