ভারতও আপাতত নিজেদের আফগান-নীতিকে পুরো অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। ফাইল চিত্র।
ভারতের ডাকা আফগানিস্তান সংক্রান্ত বৈঠকে পাকিস্তানের পথে হেঁটে চিনও যে গরহাজির থাকবে, তা আগেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই কারণে যাতে বৈঠকটির গুরুত্ব না কমে, তা নিশ্চিত করতে আজ থেকেই কোমর বেঁধে নেমেছে নয়াদিল্লি।
দু’দিনের বৈঠকের প্রথম দিন, আজ, মঙ্গলবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল আলোচনায় বসেছেন তাজিকিস্তান এবং উজ়বেকিস্তানের নিরাপত্তা কর্তাদের সঙ্গে। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, আলোচনায় প্রাথমিক ভাবে গুরুত্ব পেয়েছে তালিবান সরকারের জমানায় আফগান মুলুক থেকে সন্ত্রাসবাদ এবং মৌলবাদ চুঁইয়ে অন্য দেশেও ডালপালা বিস্তারের সম্ভাবনা। দ্বিতীয়ত, আফগানিস্তানের মানুষের কাছে ত্রাণ এবং সাহায্য পৌঁছে দেওয়া। আগামিকাল রাশিয়া এবং ইরানের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডোভালের।
গোড়া থেকেই পাকিস্তান এবং চিন এই আলোচনাকে ভেস্তে দিতে চেয়েছে বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। পাকিস্তান স্পষ্ট বলেছে, আফগান রাজনীতিতে নাক গলিয়ে সব পণ্ড করতে চাইছে ভারত। চিন স্বাভাবিক ভাবেই প্রকাশ্যে এমন ভারত-বিরোধিতার রাস্তায় হাঁটেনি। কিন্তু এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, “বৈঠকের দিনক্ষণ যে রকম, তাতে যোগ দেওয়া চিনের পক্ষে অসুবিধাজনক।” কিন্তু এ যে নেহাতই কথার মোড়ক, তা বুঝতে অসুবিধা নেই সাউথ ব্লকের। আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরে যে অস্থিরতা সেখানে তৈরি হয়েছে, তার সুযোগ নিতে চায় চিন। সেখানে পাকিস্তানের সাহায্য নিয়ে নানা ভাবে নিজেদের প্রভাব বাড়ালে, গোটা অঞ্চলে আধিপত্য কায়েম করতে সুবিধা হবে বলেই মনে করছে বেজিং।
ভারতও আপাতত নিজেদের আফগান-নীতিকে পুরো অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। রাশিয়ার উপরে এ ক্ষেত্রে সব চেয়ে বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আজ তাজ়িকিস্তানের নিরাপত্তা প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে দু’পক্ষই উল্লেখ করেছে, গত কয়েক মাসে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদের বাড়-বাড়ন্তের কথা। দু’দেশ একমত যে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানবিক সঙ্কট। পাশাপাশি উজ়বেকিস্তানের সঙ্গে বৈঠকে একই ভাবে উঠে এসেছে সন্ত্রাস প্রসঙ্গ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, দু’টি দেশই একমত যে, আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ ঠিক করবেন সে দেশের সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ। দু’দেশের নিরাপত্তা কর্তাই মনে করেন, আন্তর্জাতিক আঙিনায় স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টার আগে আফগান সরকারের উচিত আগে নিজেদের দেশে তা পাওয়া। আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলি যাতে আফগানবাসীর কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাধাহীন সংযোগ স্থাপন করতে পারে, সে ব্যাপারেও তৎপর হওয়ার চেষ্টা করা হবে। উজ়বেকিস্তান এবং ভারত উভয়েই মনে করে, কাবুলের পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy