Advertisement
০৭ মে ২০২৪
S jaishankar

মেরু-বিভক্ত বিশ্বে সেতু ভারত, মত জয়শঙ্করের

এ বারের আমেরিকা সফরে রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে ও পার্শ্ব-বৈঠকে একশোরও বেশি দেশের বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে জয়শঙ্করের। বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বৈঠকও করেছেন তিনি।

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি: পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:২৫
Share: Save:

আজ বিশ্ব যখন বিভিন্ন মেরুতে বিভক্ত, তখন ভারত সেতুর কাজ করছে। অনগ্রসর দেশগুলির কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার মঞ্চে গত কালের বক্তৃতার পরে বললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

এ বারের আমেরিকা সফরে রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে ও পার্শ্ব-বৈঠকে একশোরও বেশি দেশের বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে জয়শঙ্করের। বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বৈঠকও করেছেন তিনি। নিউ ইয়র্কের পরে এ বার তাঁর গন্তব্য ওয়াশিংটন। এই সফরে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেন নিয়ে আলোচনার পরেই রাষ্ট্রপুঞ্জের বক্তৃতায় জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রায়শই প্রশ্ন করা হয়, আমরা কোন পক্ষে। প্রতি বারই আমাদের উত্তর হল, ভারত শান্তির পক্ষে এবং সেটাই দৃঢ় অবস্থান। আমরা তাদের পক্ষে, যারা রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ ও তার মূল নীতিগুলিতে বিশ্বাস রাখে।’’ সম্প্রতি উজ বেকিস্তানে এসসিও সম্মেলনের ফাঁকে পার্শ্ব-বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, এ যুগ যুদ্ধের নয়। মোদীর সেই বার্তায় কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছিল আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়া। যদিও রাশিয়া মনে করে, ভারত বরাবর যা বলে আসছে, তার বেশি কিছু বলেনি। এ দিকে, রাশিয়া থেকে ভারতের সস্তায় তেল কেনাও জারি রয়েছে।

এই আবহে সাংবাদিকদের জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশন নিঃসন্দেহে বিভিন্ন মেরুতে বিভক্ত বিশ্বের বর্তমান চেহারাটা তুলে ধরছে। এক অর্থে তার ফলে এটাই দেখা যাচ্ছে যে, ভারতের গুরুত্ব এখন আরও বেশি। আমরা একটি সেতু, একটি কণ্ঠস্বর, একটি দৃষ্টিভঙ্গি অথবা একটি চ্যানেল।’’ বিদেশমন্ত্রীর মতে, বর্তমানে যখন সাধারণ কূটনীতি তেমন কাজে দিচ্ছে না, তখন ভারতের নানাবিধ সম্পর্ক, যোগাযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে আদান-প্রদানের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলি স্পর্শ করার ক্ষমতা রয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে খাবার, জ্বালানি ও সারের মূল্যবৃদ্ধি এবং ঋণের পরিস্থিতি যখন বহু দেশের পক্ষে উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে, তখন ভারতকে দেখছেন অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর দেশগুলির কণ্ঠস্বর হিসেবে। বিদেশমন্ত্রী বলেন, বিদেশেও কাজ করে দেখানোটা নরেন্দ্র মোদীর বিশেষ গুণ। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ভারতের এই গুরুত্ব বৃদ্ধির বড় কারণ মোদীর নেতৃত্ব। গত বছর গ্লাসগোর জলবায়ু সম্মেলনে মোদীর ভূমিকার কথা অনেকে তাঁর কাছে তুলেছেন। ডিসেম্বরে জি-২০ গোষ্ঠীর সভাপতিত্ব পেলে ভারত সব সদস্যের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রেখে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগোতে চায় বলে তিনি জানান।

সন্ত্রাস প্রসঙ্গে নাম না করে চিন-পাকিস্তান অক্ষের সমালোচনা করেছেন বিদেশমন্ত্রী। ২৬/১১ হামলার অন্যতম অভিযুক্ত লস্কর জঙ্গি সাজিদ মিরকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করতে চেয়ে ভারত ও আমেরিকার প্রস্তাব গত সপ্তাহেই রাষ্ট্রপুঞ্জে আটকে দিয়েছিল চিন। চলতি বছরেই জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের ভাই আব্দুল রউফ আজহার এবং পাক জঙ্গি আব্দুল রহমান মাক্কির নাম রাষ্ট্রপুঞ্জের কালো তালিকায় তোলা আটকে যায় চিনের আপত্তিতেই। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘আশা করব, যুক্তির জয় হবে ও কেউ ইচ্ছেমতো বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। রাষ্ট্রপুঞ্জে সকলেই একমত হবেন, সন্ত্রাস একটি সার্বিক বিপদ। সেটিই যদি কারও অবস্থান হয়, তা হলে নীতি এবং কাজকর্মও তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

S jaishankar United Nations
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE