সিঁদুর অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছে ভারত। ভারতের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র রুখতে ব্যর্থ হয় পাকিস্তানের রেডার এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ওই ব্যবস্থাকে ঘোল খাইয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করতে ‘ডামি যুদ্ধবিমান’ পাঠায় ভারতীয় সেনা। বিষয়টি বুঝতে পারেনি পাকিস্তান। প্রত্যাঘাত করতে সক্রিয় হয় তারা। আর তাতেই ধরা পড়ে যায় তাদের লুকিয়ে রাখা রেডারের অবস্থান। তা বুঝে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করে ভারত। আর তাতেই সফল ‘অপারেশন সিঁদুর’।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই সিঁদুর অভিযান শুরু করার আগে ভারতীয় বায়ুসেনা বেশ কয়েকটি ‘ডামি যুদ্ধবিমান’ নিয়োগ করেছিল। ওই বিমানগুলিতে চালক ছিলেন না। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ওই ‘ডামি যুদ্ধবিমান’-কেই আসল ভেবে বসে। তার ফলে ‘শত্রু যুদ্ধবিমান’কে চিহ্নিত করার জন্য নিজেদের রেডার যন্ত্র, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে তোলে পাক সেনা। এর ফলে তাদের রেডার যন্ত্রের অবস্থান ধরে ফেলে ভারতীয় সেনা। আর তার পরেই সেই রেডার যন্ত্র, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নিশানা করা হয়। ইজরায়েলে তৈরি হারোপ ছোড়ে ভারত।
দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার আবহে পাকিস্তান নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গোপন এক স্থানে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। চিনের তৈরি এইচকিউ-৯ মোতায়েন করেছিল তারা। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সেই নতুন অবস্থান অজানা ছিল ভারতের। কিন্তু ভারতের পাঠানো ‘ডামি যুদ্ধবিমান’-এর টোপে পাকিস্তান পা দিতেই তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঠিক অবস্থান ধরা পড়ে যায় এ দেশের সেনার কাছে। এর ফলে তাতে আঘাত হানতে সুবিধা হয়। অন্য দিকে, পাকিস্তানের ছোড়া ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র নষ্ট করে দেয় ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ‘আকাশতির’। দেশীয় প্রযুক্তিতেই এই প্রাচীর তৈরি করেছে ভারত, যা রুখে দিয়েছে পাকিস্তানের হামলা।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারান। পাকিস্তানের দিকে আঙুল তোলে ভারত। যদিও তারা অস্বীকার করে। এর পরে ৭ মে থেকে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করার জন্য সিঁদুর অভিযান শুরু করে ভারত। ৯-১০ মে রাতে ভারতের হানায় পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি বায়ুসেনাঘাঁটিও আক্রান্ত হয়। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের ১২টি গুরুত্বপূর্ণ বায়ুসেনাঘাঁটির মধ্যে ১১টি আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানান যে, ওই অভিযানে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল সেনা। তাতে ‘রাতের অন্ধকারে দিন’ দেখেছে পাকিস্তান। ভারত এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, পাক সেনাঘাঁটিতে হামলা সেনাবাহিনীর লক্ষ্য ছিল না। জঙ্গিঘাঁটিকেই নিশানা করা হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান সেনা তাতে ‘নাক গলানো’-র কারণেই তাদের ঘাঁটিতে হানা দিতে বাধ্য হয়েছে ভারত। পাকিস্তানের অনুরোধের পরে ১০ মে ভারত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে।