ইসলামাবাদকে দীপাবলির বার্তা পাঠাল নয়াদিল্লি এবং সেই বার্তা গেল কাবুলের পথ ধরে—কাবুলে ভারতের ‘টেকনিক্যাল মিশন’কে পূর্ণাঙ্গ দূতাবাসে পরিণত করার ঘোষণার সিদ্ধান্তকে এ ভাবেই দেখছে কূটনৈতিক শিবির।
২০২১ সালে তালিবান আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসার পরে এই দূতাবাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে তা ‘টেকনিক্যাল মিশন’ হিসেবেই চালাচ্ছিল ভারত। সম্প্রতি তালিবানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির নয়াদিল্লি সফরে স্থির হয় কাবুলে দূতাবাস খোলার। এই সিদ্ধান্তের ১০ দিনের মধ্যে তা বাস্তবায়িত করা হল এবং তা হল এমন সময়ে যখন পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের সীমান্ত সংঘাতপূর্ণ।
তবে কার্যত স্বীকৃতি দিলেও এখনও পর্যন্ত তালিবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি ভারত। রিপোর্ট অনুযায়ী, কাবুলে দূতাবাসের প্রধান কূটনীতিকের ‘শার্জ দ্য’ফেয়ার’-এর মর্যাদা থাকবে। যেহেতু ভারত তালিবান শাসনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি, তাই সেখানে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা হবে না। তালিবানের মুখপাত্র সুহেল শাহিন গোটা বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক আবহ তৈরি করতে জানিয়েছেন, কাবুলে ভারতের দূতাবাস আঞ্চলিক শান্তির পথ প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে। তালিবানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা ইয়াকুবের কথায়, কাবুল ভারতের সঙ্গে সমঝোতা শক্তিশালী করবে, জাতীয় স্বার্থের কাঠামোর মধ্যেই। প্রসঙ্গত, তালিবানের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত মোল্লা ওমরের পুত্র এই ইয়াকুব একদা ইসলামাবাদের হাতেই তামাক খেতেন। সে কারণে মুত্তাকির ভারত সফরের ১২ দিন পর তাঁর এই মন্তব্যকে নজরে রেখেছে নয়াদিল্লি। এই ইয়াকুবই কাতারে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত বিরতি চুক্তির রফা করতে। আফগানিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের আবহে পাকিস্তান বারবার দাবি করে এসেছে, ভারত এই সংঘাতে ইন্ধন দিচ্ছে। তালিবান সেই দাবি অস্বীকারই করে এসেছে।
বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাবুলে ভারতের টেকনিক্যাল মিশনকে ভারতীয় দূতাবাসের মর্যাদায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আফগান বিদেশমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরের সময় ঘোষিত সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তা করা হল। এই সিদ্ধান্ত পারস্পরিক স্বার্থে নেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও গভীর করার সংকল্পে এই পদক্ষেপ। কাবুলে ভারতীয় দূতাবাস আফগান সমাজের অগ্রাধিকার ও আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সে দেশের উন্নয়ন, মানবিক সহায়তা ও দক্ষতা বৃদ্ধির চেষ্টা করবে।'
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)