Advertisement
E-Paper

পাশ মার্ক কমিয়ে পরিবেশে ‘ভাল ছাত্র’ দিল্লি!

প্যারিসের জলবায়ু চুক্তিতে কার্বন নিঃসরণ এবং উষ্ণায়ন রোধে ভারত ২০৩০-এর মধ্যে যে তিনটি লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিল, ইতিমধ্যে তার দু’টি অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব হয়েছে।  

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:০৪

ডিসেম্বরের গোড়ায় পোলান্ডে রাষ্ট্রপুঞ্জের ২৪ তম পরিবেশ সম্মেলনে (যার পোশাকি নাম কপ-২৪) ভাল ছাত্রের মার্কশিট নিয়েই যোগ দিতে যাচ্ছে ভারত।

জানা গিয়েছে, প্যারিসের জলবায়ু চুক্তিতে কার্বন নিঃসরণ এবং উষ্ণায়ন রোধে ভারত ২০৩০-এর মধ্যে যে তিনটি লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিল, ইতিমধ্যে তার দু’টি অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব হয়েছে।

প্রতি দু’বছর অন্তর একটি করে রিপোর্ট এই সম্মেলনে পেশ করা হয়। প্যারিস চুক্তিতে ভারত যে তিনটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেগুলি হল (১) ২০০৫ সালে ভারতে কার্বন নিঃসরণের যে মাত্রা ছিল, তা ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ কমানো। (২) দেশের মোট ব্যবহৃত শক্তির ৪০ শতাংশ সৌর এবং অন্যান্য পরিবেশ বান্ধব উৎস থেকে নেওয়া হবে। (৩) তিনশো কোটি টন কার্বনের মোকাবিলা করা যায়, এমন ভাবে গাছ লাগানো হবে। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, প্রথম দু’টিতে এখনই প্রায় ২০৩০-এর লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে ভারত। তবে বৃক্ষরোপণের প্রশ্নে এখনও অনেক পিছিয়ে দেশ।

আরও পড়ুন: ‘দিল্লির পরিস্থিতি এত ভয়াবহ! মর্নিং ওয়াকেও বেরোতে পারি না’, তোপ বিচারপতির

পরিবেশবিদদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, এই রিপোর্টে যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে, তা সরকারের নিজেরই হিসেব কষে ঠিক করা। প্যারিস চুক্তির সময়েই দেখা গিয়েছিল যে, বিভিন্ন দেশের জলবায়ু এবং পরিবেশ দূষণের মাত্রা এক এক রকম। সেগুলি সেই সব দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, শিল্পায়নের চাহিদা, জনসংখ্যা-সহ একাধিক বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। তাই একে কোনও একটি নির্দিষ্ট ছকে ফেলা যাবে না। প্রত্যেকটি দেশ স্থির করবে তার ‘ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন’ বা এনডিসি। ফলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের রেকর্ড পেশ করার প্রশ্নে প্রাথমিক মাপকাঠিটিকে অনেকটাই নীচে রেখে দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছে। এই ক্ষেত্রে ভারত ২০০৫ সালের তুলনায় ৩৫ শতাংশ দূষণ কমানোর (২০৩০ সালের মধ্যে) লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে। ঝুঁকি নিয়ে ২০১৬ সালের দূষণকে (যে বছর প্যারিস চুক্তি হয়) প্রাথমিক মাপকাঠি হিসেবে নেয়নি। সে কারণেই দূষণ রোধে এখনও অনেক পথ হাঁটতে হবে।

আরও পড়ুন: শবরীমালা নিয়ে শুনানিতে রাজি শীর্ষ আদালত

দূষণ ঠেকাতে এখনও বহু পথ হাঁটা বাকি মেনে নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, ভারতের কৃতিত্ব কিছু কম নয়। কারণ কার্বন নিঃসরণের প্রশ্নে একেবারে গোড়ার দিকে থাকা ২৫টি দেশের মধ্যে মাত্র ৯টি দেশ তাদের দেওয়া লক্ষ্যপূরণে সক্ষম হয়েছে। ভারত ছাড়াও এই তালিকায় রয়েছে চিন, জাপান, রাশিয়ার মতো দেশগুলি।

নিজেদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার পাশাপাশি জোট বেঁধে ধনী দেশগুলিকে কোণঠাসা করার পরিকল্পনা নিয়েছে নয়াদিল্লি। পরিবেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘উন্নত দেশগুলির কাছ থেকে পরিবেশ দূষণ রোধ সংক্রান্ত প্রযুক্তি এবং তার সঠিক ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলির ১০ হাজার কোটি ডলার পাওয়ার কথা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে হাজার কোটিও জোটেনি!’’ জানা গিয়েছে, ভারত, চিন, মালয়েশিয়া, মিশর-সহ ২৪টি দেশের গোষ্ঠী একটি যৌথ ঘোষণাপত্র তৈরি করেছে। পরিবেশ মন্ত্রকের একটি সূত্রের কথায়, ‘‘আমরা পোলান্ড বৈঠকে উন্নত দেশগুলির কাছে জানতে চাইব, ২০২০ সালের ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন প্ল্যান’ (জলবায়ু অ্যাকশন প্ল্যান) নিয়ে কত দূর এগিয়েছে তারা। এ ব্যাপারে ধনী দেশগুলির দেওয়া আর্থিক প্রতিশ্রুতি নিয়েও জানতে চাওয়া হবে।’’

24th Conference of Parties COP24 Poland Paris Climate Global Warming
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy