ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পাল্টা পাকিস্তান শুরু করে ‘অপারেশন বুনিয়ান-আন-মারসুস’। তাদের দাবি ছিল, চিনা প্রযুক্তির উপর ভর করে তৈরি সেই প্রতিরক্ষা প্রাচীর ‘অভেদ্য’। যদিও সেই ‘অভেদ্য’ প্রাচীর সহজেই ভেদ করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। কিন্তু ভারতের প্রতিরক্ষা প্রাচীর ভেদ করতে পারেনি পাকিস্তান। ভারতেই তৈরি ‘আকাশতির’ টেক্কা দিয়েছে চিনা প্রযুক্তিকে। কী ভাবে কাজ করেছে এই প্রযুক্তি, তা নিজেদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে ডিডি নিউজ়।
অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তানের ন’টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছে ভারতীয় সেনা। তার পরে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ান-আন-মারসুস’ শুরু করে। আল জাজ়িরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এটি একটি আরবি শব্দবন্ধ। এর অর্থ ‘শিসার তৈরি কাঠামো’। সেই অভিযানে ৯-১০ মে রাতে ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা লক্ষ্য করে একের পর এক ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে পাকিস্তান। তখন প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই ‘আকাশতির’। পাকিস্তানের ছোড়া ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র, ছোট ইউএভি (আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকল) ভারতীয় আকাশসীমায় প্রবেশ করতে দেয়নি ‘আকাশতির’ প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি তৈরি হয়েছে ভারতেই। তৈরি করেছে ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজ়েশন (ডিআরডিও), ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র (ইসরো) এবং ভারত ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেড (বিইএল)।
বুধবার ডিডি নিউজ় এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে বেশ কয়েকটি পোস্ট দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, এই ‘আকাশতির’ কী ভাবে পাকিস্তানের ছোড়া ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে। ডিডি নিউজ়ের পোস্ট বলা হয়েছে, এআই চালিত স্বয়ংক্রিয় এই প্রযুক্তি রেডার থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। আবহাওয়া, ভূখণ্ড সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে সময় বুঝে প্রত্যাঘাতের জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেয়। অন্য দিকে, পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা (এডি) নেটওয়ার্কে রয়েছে চিনের তৈরি এইচকিউ-৯ এবং এইচকিউ-১৬, যা ভারতের হানা রুখতে ব্যর্থ হয়েছে।
হামলার সময়ে এই ‘আকাশতির’ প্রযুক্তি প্রতি মুহূর্তের ছবি পাঠায় কন্ট্রোল রুম, রেডার এবং এয়ার ডিফেন্স গানকে। এই প্রযুক্তির তিনটি অংশ রয়েছে, রেডার যন্ত্র, সেন্সর এবং যোগাযোগের প্রযুক্তি। বিভিন্ন উৎস থেকে নথি সংগ্রহ করে ‘আকাশতির’। তার পর তা ‘প্রসেস’ করে প্রয়োজনমতো সিদ্ধান্ত নেয়। অন্য প্রযুক্তির সঙ্গেও সংযোগ রক্ষা করে ‘আকাশতির’। এই প্রযুক্তিকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে তার ‘বুদ্ধিমান যুদ্ধকৌশল’। সেই সঙ্গে অনেক নীচে থাকা বিমানঘাঁটি এবং হানাদার অস্ত্রের উপর নজর রাখতে সক্ষম এটি। অন্য প্রযুক্তি যখন রেডার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে, তখন ‘আকাশতির’ নিজেই নজরদারি চালাতে পারে। ডিডি নিউজ়ের পোস্ট বলছে, এই প্রযুক্তির ক্ষমতা বর্ণনা করতে গেলে বলতে হয় যে, এটি বিপদ আঁচ করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্ত নিতে তাকে সাহায্য করে এআই প্রযুক্তি। তার পর প্রত্যাঘাত করে। যানে চাপিয়ে একে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায় সহজেই।