ফাইল চিত্র।
ইমরান খানের অপসারণের পর ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনও বদল হয় কি না, এ বার সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা আন্তর্জাতিক মহল। ভারতের সঙ্গে সবচেয়ে জটিল এবং বৈরিতাসম্পন্ন এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রাতারাতি কোনও বাঁক নেবে না বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। যদিও সদ্য প্রাক্তন দলনেতা এবং নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফ সে দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শোধরাতে পারে, এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে তাঁর দল এবং পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম।
কিন্তু সাউথ ব্লক বিষয়টি নিয়ে এখনই আশাবাদী নয়। বরং তারা কোনও স্বর না তুলে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে চাইছে। পাকিস্তান প্রসঙ্গে নাটকীয় কোনও পরিবর্তন নয়াদিল্লি এখনই আশা করছে না।
পাকিস্তানের রাজনীতিতে শাহবাজ শরিফ পরিচিত বাস্তববাদী নেতা হিসাবে। কিছু দিন আগেই স্থানীয় টিভি চ্যানেলে তাঁকে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়ে দেন, “পাকিস্তান এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে তাদের নিজেদের পছন্দমাফিক বিদেশনীতি তৈরি করার কোনও উপায় নেই।” সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর ওই মন্তব্যকে ইমরান খানের করা বিদেশনীতিতে সম্মান ও গৌরবের তকমা লাগানোর নীতির সঙ্গে তুলনা শুরু হয়েছে।
শাহবাজের ঘনিষ্ঠ নেতা এবং পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর সাংসদ সামিউল্লা খান সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাঁর নেতা ভারতের সঙ্গে নতুন নীতির পথ খুঁজবেন। তাঁর কথায়, “শাহবাজের নেতৃত্বে ভারত সংক্রান্ত নতুন নীতি নিয়ে আসবে পাকিস্তান। আসলে ইমরান খানের জমানায় ভারত সম্পর্কে যাবতীয় দুর্বল পন্থা ও নীতি নেওয়া হয়েছিল। আর সে কারণেই ভারত যখন জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে দেয়, পাকিস্তান অসহায় ভাবে তা বসে বসে দেখে।”
২০১৪ সালের মে মাসে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসেন। সেই বছর ডিসেম্বরের পর থেকেই বন্ধ হয়ে রয়েছে দু’দেশের আলোচনা। তৈরি হয়েছে আস্থার চরম ঘাটতি। ২০১৮ সালে ইমরান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে গড়বেন। কিন্তু তার কিছু দিনের মধ্যেই পুলওয়ামা হামলার পরে পরিস্থিতি গভীর খাদে পড়ে যায়।
পাকিস্তানের তরফ থেকে নতুন করে ইতিবাচক ইঙ্গিত আসার অন্যতম কারণ নওয়াজ শরিফের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত রসায়ন। শাহবাজকেও ‘মোদী কি ইয়ার’ হিসাবেই দেখে সে দেশের রাজনৈতিক মহল। তবে এ কথাও ঠিক যে, শাহবাজ বা অন্য যিনিই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হোন, তিনি হবেন খুবই স্বল্পমেয়াদের জন্য। আর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে ব্যক্তিগত রসায়ন বলে কিছু হয় না। আগামী বছরেই পাকিস্তানে নির্বাচন হওয়ার কথা। ফলে এই স্বল্প সময়ের মধ্যে পাকিস্তানের নতুন যে সরকারই আগ বাড়িয়ে ভারতের শর্তে সম্পর্ক ভাল করার চেষ্টা করবে, ঘরোয়া রাজনীতিতে বা ভোটে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া তাদের মোকাবিলা করতে হবে।
পাশাপাশি কাশ্মীর নিয়ে ভারতের দিক থেকে কোনও দরজা না খুললে ইসলামাবাদের কোনও নেতার পক্ষেই নয়াদিল্লির দিকে এগোনো সম্ভব নয়। যে সব জঙ্গি সংগঠন সীমান্তে সক্রিয়, তাদের নির্মূল করা একান্তই অসম্ভব ইসলামাবাদের কোনও নেতৃত্বের পক্ষে। কূটনীতিকেরা বলছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সংশোধনে এগুলো নিতান্তই জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy