Advertisement
E-Paper

না-চাইলে আর খাবার নয় ট্রেনে

অনেক সংস্থার বিমানে টিকিটের সঙ্গে খাবারের দাম নেওয়ার বন্দোবস্ত উঠে গিয়েছে আগেই। এ বার খাবার নিয়ে অভিযোগের মোকাবিলায় ট্রেনে খাবারের ব্যাপারটা ঐচ্ছিক করে দিচ্ছে রেলও। অর্থাৎ ট্রেনে খাবার আদৌ নেবেন কি না এবং টিকিট কাটার সময়ে তার দাম মিটিয়ে দেবেন কি না, সেটা ঠিক করবেন যাত্রীরাই।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩৮

অনেক সংস্থার বিমানে টিকিটের সঙ্গে খাবারের দাম নেওয়ার বন্দোবস্ত উঠে গিয়েছে আগেই। এ বার খাবার নিয়ে অভিযোগের মোকাবিলায় ট্রেনে খাবারের ব্যাপারটা ঐচ্ছিক করে দিচ্ছে রেলও। অর্থাৎ ট্রেনে খাবার আদৌ নেবেন কি না এবং টিকিট কাটার সময়ে তার দাম মিটিয়ে দেবেন কি না, সেটা ঠিক করবেন যাত্রীরাই।

রাজধানী, শতাব্দী এবং দুরন্ত এক্সপ্রেসে মেনু বদল হয়েছে। এ বার উঠে যাচ্ছে ট্রেনে চড়লেই খাবার পাওয়ার ‘ট্র্যাডিশন’। ট্রেন-সফরে খাবারের বিষয়টি যাত্রীর ইচ্ছে-অনিচ্ছের উপরে ছেড়ে দিচ্ছে রেল। নতুন ব্যবস্থায় কোনও যাত্রী চাইলে তবেই টিকিটের সঙ্গে খাবারের জন্য টাকা নেওয়া হবে। আবার সফরকালে কী খাবেন, ট্রেনে উঠে মেনু দেখে তা ঠিক করে মোবাইল-অ্যাপের মাধ্যমেও জানিয়ে দেওয়া যাবে। সে-ক্ষেত্রে টাকা দিতে হবে অ্যাপের মাধ্যমে বা ট্রেনে হাতে হাতে। যাত্রীদের কে কী খাবেন, তা বেছে নিতে হবে রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন বা আইআরসিটিসি-র মেনু থেকেই।

চলতি জানুয়ারিতেই এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে বলে রেল সূত্রের খবর। তবে সব দুরন্ত, রাজধানী বা শতাব্দীতে এখনই বন্দোবস্ত পাল্টাচ্ছে না। পরীক্ষামূলক ভাবে নতুন ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে নিজামুদ্দিন-মুম্বই সেন্ট্রাল অগস্তক্রান্তি রাজধানী, নিউদিল্লি-পটনা রাজধানী, পুণে-সেকেন্দরাবাদ শতাব্দী ও হাওড়া-পুরী শতাব্দী এক্সপ্রেসে। ওই চারটি কুলীন ট্রেন সফল হলে যাত্রীদের মতামত নিয়ে নতুন ব্যবস্থা কায়েম হবে সব রাজধানী, শতাব্দী, দুরন্ত এক্সপ্রেসেই।

চিরাচরিত প্রথায় বদল কেন?

রেল সূত্রের খবর, কয়েক বছর ধরেই ট্রেনে খাবার নিয়ে যাত্রীদের অসন্তোষ বাড়ছে। খাবারের স্বাদ-গন্ধ-মান নিয়ে অনুযোগ তো আছেই। মেনু নিয়েও অভিযোগের অন্ত নেই। খাবার নিয়ে গোলমাল গড়াচ্ছে হাতাহাতি পর্যন্ত। রেলের ইন্টারনেট পোর্টালগুলোয় যাত্রীদের অভিযোগের অধিকাংশই জমা পড়েছে খাবারদাবার নিয়েই। তাই ব্যবস্থা বদল। গত রেল বাজেটে এমন পরিবর্তনের আভাস দিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুও।

অভিযোগ এড়াতে খাবারের পুরো ব্যবস্থাটাই ঘাড় থেকে নামিয়ে দিচ্ছে রেল। খাবার সরবরাহ থেকে ঠিকাদার নিয়োগ, মেনু— সব দায়িত্বই দেওয়া হচ্ছে আইআরসিটিসি-কে। রেলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আইআরসিটিসি-র কর্তারা বলছেন, এতে ট্রেনের খাবার নিয়ে অভিযোগ কমবে। ‘‘নতুন যে-মেনু তৈরি হবে, তাতে যাত্রীদের পছন্দই গুরুত্ব পাবে,’’ বলেন আইআরসিটিসি-র এক কর্তা।

বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তে রেলের ভাবমূর্তি অনেকটাই ফিরবে বলে মনে করছেন রেলের অনেক প্রাক্তন কর্তা। তাঁদের অনেকের বক্তব্য, এতে খাবার নিয়ে অনুযোগ-অভিযোগের সম্ভাবনা তো কমবেই। সার্বিক ভাবে রেল পরিষেবারও উন্নতি হবে। কী ভাবে?

প্রাক্তন রেলকর্তা সুভাষরঞ্জন ঠাকুরের বক্তব্য, এখন তো মোবাইল-অ্যাপের মাধ্যমে খাবার কেনা যায়। তাই খাবারের ব্যাপারটা যাত্রীদের উপরে ছেড়ে দিলে মঙ্গল রেলেরই। ‘‘কেননা খাবারদাবারের মান নিয়ে মাথাব্যথা কমলে ট্রেন চালানো, যাত্রী-সুরক্ষার মতো বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজে বেশি করে মনোনিবেশ করতে পারবে রেল,’’ বলছেন সুভাষবাবু।

আইআরসিটিসি-র পূর্বাঞ্চলের গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিস চন্দ্র বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত চালু হলে পুরনো মেনু ফিরিয়ে আনব আমরা। সঙ্গে নতুন মেনুও যুক্ত হবে।’’ হাওড়া, শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনগুলিতে কবে নতুন নিয়ম চালু হবে, সে-দিকে এখন তাকিয়ে যাত্রীরা। কেননা, নতুন নিয়মে অনেক কিছুর সঙ্গে ফিরতে পারে রাজধানীর জিভে জল আনা সেই ফিশফ্রাইও!

Indian Railway Food Service Optional Food Service
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy