Advertisement
E-Paper

‘অপমান করে, ভয় দেখিয়ে চুপ করানো হয়’! ইন্ডিগোর অন্দরের পরিস্থিতি প্রকাশ করে খোলা চিঠি ‘দীর্ঘ দিন চাকরিরত কর্মচারীর’

চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, এই মুহূর্তে ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিমানসংস্থাটির পতনের জন্য সংস্থার সিইও পিটার এলবার্স এবং অন্যান্য শীর্ষকর্তাই দায়ী। চিঠির শুরুতে নিজেকে ‘ইন্ডিগোর দীর্ঘ দিনের কর্মী’ হিসাবে পরিচয় দিয়ে সংস্থার অন্দরের নানা অব্যবস্থাও প্রকাশ্যে এনেছেন লেখক।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:৩৫
ইন্ডিগোর শীর্ষকর্তাদের উদ্দেশে লেখা সেই ‘খোলা চিঠি’।

ইন্ডিগোর শীর্ষকর্তাদের উদ্দেশে লেখা সেই ‘খোলা চিঠি’। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ইন্ডিগোর এই ‘পতন’ একদিনে হয়নি। বরং বছরের পর বছর ধরে সংস্থার অন্দরে চরম অব্যবস্থা, পাইলট ও কর্মীদের দিনের পর দিন অমানুষিক পরিশ্রম করতে বাধ্য করা, শীর্ষকর্তাদের ‘স্বেচ্ছাচার’— এ সব দেখে অনেক দিন আগে থেকেই না কি ইন্ডিগোর পতন আঁচ করতে পেরেছিলেন সংস্থার কর্মীরা। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে এ বার সংস্থার সিইও-সহ অন্যান্য শীর্ষকর্তার উদ্দেশে ‘খোলা চিঠি’ লিখে সেই ক্ষোভ উগরে দিলেন ইন্ডিগোরই এক কর্মী।

চার পৃষ্ঠার ওই চিঠি ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তা নিয়ে জল্পনাও শুরু হয়েছে বিস্তর (লেখক বা চিঠি— কোনওটিরই সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, এই মুহূর্তে ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিমানসংস্থাটির পতনের জন্য সংস্থার সিইও পিটার এলবার্স এবং অন্যান্য শীর্ষকর্তাই দায়ী। চিঠির শুরুতে নিজেকে ‘ইন্ডিগোর দীর্ঘ দিনের কর্মী’ হিসাবে পরিচয় দিয়ে সংস্থার অন্দরের নানা অব্যবস্থাও প্রকাশ্যে এনেছেন লেখক। চিঠিতে ইন্ডিগোর আট শীর্ষকর্তার নাম উল্লেখ করে তাঁদের বিরুদ্ধে নানা বিস্ফোরক অভিযোগও তোলা হয়েছে।

ইন্ডিগোর কর্মীর লেখা সেই চিঠি।

ইন্ডিগোর কর্মীর লেখা সেই চিঠি। ছবি: এক্স।

চিঠির শুরুতেই লেখা হয়েছে, ‘‘সংস্থার কর্মী হিসাবে নয়, বরং একজন ভারতীয় হিসাবে আমি এই চিঠি লিখছি। কারণ, বিমানসংস্থাটির আজকের এই অবস্থা এখন আর শুধু অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়, বরং দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি চাই আপনারা এমন কারও কাছ থেকে অন্দরের কথা শুনুন যিনি দীর্ঘ দিন ধরে সংস্থায় কাজ করেছেন। তা হলেই আপনারা বুঝতে পারবেন, ঠিক কী ভাবে আমরা এই ভাঙনের পর্যায়ে পৌঁছোলাম। অবশ্য ইন্ডিগোর সমস্ত কর্মচারী আগে থেকেই জানতেন, এই দিন আসবে। কারণ, বিমানসংস্থাটি এক দিনে ভেঙে পড়়েনি, বরং বছরের পর বছর ধরে জেনেশুনে এই অব্যবস্থা তৈরি করা হচ্ছিল।’’

শীর্ষকর্তাদের স্বেচ্ছাচার, চরম অব্যবস্থা, অযোগ্যদের পদোন্নতি এবং কাজের খারাপ পরিবেশ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ওই কর্মী। তাঁর কথায়, ‘‘একটি ইমেল পর্যন্ত লিখতে পারেন না, এমন লোকেদের সংস্থার শীর্ষপদগুলিতে বসানো হয়েছিল!’’ কর্মীদের কথাও নাকি ভাবতেন না ইন্ডিগোর কর্তারা। বিশ্রাম কিংবা ঘুমের সময় না দিয়ে রাতের পর রাত কাজ করতে বাধ্য করা হত। পর্যাপ্ত সংখ্যায় কর্মী নিয়োগ করা হত না, ফলে কখনও কখনও তিন জনের কাজও করতে হত কর্মীদের। মাঝে মধ্যেই কাটা যেত বেতনও। গ্রাউন্ড স্টাফ, পাইলট থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়ার— সকলেই এই শোষণের শিকার হতেন বলে দাবি। কোনও পাইলট প্রতিবাদ করলে তাঁকে কেবিনে ডেকে অপমানও করতেন সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মীরা। চিঠিতে ওই কর্মী লিখেছেন, ‘‘আসলে ওঁরা মনে করতেন, আমরাই শেষ কথা। সেই গর্বই পরে অহংকারে পরিণত হয়, উন্নতি পরিণত হয় লোভে।’’

গত পাঁচ দিন ধরে উড়ান সঙ্কট চলছে ইন্ডিগোর। অসংখ্য উড়ান বাতিল হয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে পাল্লা দিয়ে ভিড় বেড়েছে অপেক্ষমান যাত্রীদের। রবিবারও দিল্লি এবং মুম্বই বিমানবন্দর থেকে ২২০টি উড়ান বাতিল করেছে বিমানসংস্থাটি। মুম্বই বিমানবন্দর থেকে বাতিল হয়েছে ইন্ডিগোর ১১২টি উড়ান। দিল্লি থেকে বাতিল হয়েছে ১০৯টি। শনিবারই এ নিয়ে ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষকে শো কজ় করেছে দেশের উড়ান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ। এমন চরম অব্যবস্থা কেন, বিশদে জানতে চাওয়া হয়েছে তা-ও। তবে ইন্ডিগো জানিয়েছে, রবিবার মোট ৬৫০টি উড়ান বাতিল হলেও ১,৬৫০টি উড়ান নির্ধারিত সূচি মেনেই চলছে। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদী ইন্ডিগো।

Indigo Flight IndiGo Pilot
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy