উদয়পুরে কাকে বাদ দিয়ে কার উদয় ঘটবে, চিন্তন শিবিরের আগে তা নিয়েই কংগ্রেসের অন্দরে নতুন অশান্তি শুরু হয়েছে।
পুনরুত্থানের রাস্তা খুঁজতে আগামী শুক্রবার থেকে উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবির বসছে। কিন্তু শিবিরে কাদের ডাকা হচ্ছে, কাদের ডাকা হচ্ছে না, তা নিয়ে দলের মধ্যে ক্ষোভ তুঙ্গে। এই ‘নব সঙ্কল্প’ চিন্তন শিবিরে প্রায় চারশো জন প্রতিনিধির যোগ দেওয়ার কথা। তিন দিনের শিবিরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আপাতত মাত্র তিন জন ডাক পেয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী, রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য ও লোকসভার সাংসদ আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী।
আজ চিন্তন শিবিরের প্রস্তুতিতে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসেছিল। দলের মধ্যে ক্ষোভের আঁচ পেয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী সেখানে বলেন, ‘‘চারশো জনের মতো প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করবেন। তাঁদের সিংহভাগই সংগঠন বা সরকারের পদে রয়েছেন বা ছিলেন। আমরা প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রাখার সবরকম চেষ্টা করেছি। সব দৃষ্টিকোণ থেকেই।’’
কংগ্রেসের অন্দরমহলে প্রধান ক্ষোভ, মূলত জাতীয় স্তরে পদাধিকারীদের শিবিরে ডাকার ফলে তরুণ প্রজন্মের সিংহভাগ নেতাই বাদ পড়ে যাচ্ছেন। দলের ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় খুঁজতে, তাঁদের মতামত শোনার কোনও জায়গাই দেওয়া হচ্ছে না। বহু প্রাক্তন সাংসদওও শিবিরে ডান পাননি। ফলে সংগঠন চাঙ্গা করতে ‘নব সঙ্কল্প’-র ডাক দেওয়া হলেও, নতুন ভাবনা কীভাবে উঠে আসবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ২০১৩-য় কংগ্রেসের জয়পুর প্লেনারিতে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, যাঁরা সংগঠনে কোনও পদে নেই, তাঁদের জন্য দলের দরজা খুলে দেওয়া উচিত। উদয়পুরের ক্ষেত্রে সেই নীতি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে মাত্র তিন জনের ডাক পাওয়া নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, সাংসদ ও পরিষদীয় দলনেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এআইসিসি-কে রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতাদেরও ডাকা হচ্ছে। সেই মাপকাঠিতেই অধীর, প্রদীপ ও আবু হাসেম আমন্ত্রিত। রাজ্য বিধানসভায় কংগ্রেসের কোনও বিধায়ক নেই। এআইসিসি-তে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত এ চেল্লাকুমার তামিলনাড়ুর সাংসদ, ওয়ার্কিং কমিটির স্থায়ী আমন্ত্রিত। সেই হিসাবে তিনি আমন্ত্রিত।
আজ কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য, স্থায়ী আমন্ত্রিত, বিশেষ আমন্ত্রিত, প্রদেশ সভাপতি, বিধানসভা ও বিধান পরিষদের দলনেতা, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাক্তন ক্যাবিনেট ও স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী, এআইসিসি-র সম্পাদক ও যুগ্ম-সম্পাদক, বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদ, মহিলা-যুব-ছাত্র কংগ্রেসের জাতীয় পদাধিকারী ও সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের ডাকা হয়েছে।’’ তরুণ প্রজন্ম বাদ পড়ে যাচ্ছে, এই অভিযোগের জবাবে সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘৫০% প্রতিনিধি ৫০ বছরের কম বয়সি। ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশর বয়স ৪০ বছরেরও কম। ২১% মহিলা। সমাজের সমস্ত শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব থাকছে।’’