মণিপুরের চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি। ছবি: পিটিআই।
মণিপুরে ছাত্র-ছাত্রী খুনের ঘটনায় চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। আরও দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তার পর থেকে মণিপুরে আবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ইন্টারনেট পরিষেবা আরও কিছু দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল মণিপুর সরকার। রবিবার, একটি নির্দেশিকা জারি করে সরকারের তরফে জানানো হয়, ৬ অক্টোবর অর্থাৎ শুক্রবার পর্যন্ত মণিপুরে মোবাইলে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে পরিষেবা। তার পর পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরিষেবা চালু করার চিন্তাভাবনা করতে পারে মণিপুর সরকার। নির্দেশিকায় জানানো হয়, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটারের মাধ্যমে নানা রকম অসত্য বার্তা ছড়িয়ে যেতে পারে। মণিপুরের জনতার উপর সেই বার্তাগুলির কোনও রকম হিংসাত্মক প্রভাব যেন না পড়ে, সে উদ্দেশ্যেই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়।
প্রায় দু’মাস বন্ধ থাকার পর গত ২৫ জুলাই আংশিক ভাবে মণিপুরে ইন্টারনেট পরিষেবা ফিরেছিল। প্রাথমিক ভাবে যাঁদের স্থায়ী ব্রডব্র্যান্ড সংযোগ রয়েছে, তাঁদেরই কেবল ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) সফ্টওয়্যার কম্পিউটার থেকে আনইনস্টল করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। মণিপুর হাই কোর্টের নির্দেশ মেনেই ইন্টারনেট ব্যবহারে ছাড়পত্র দিয়েছিল মণিপুরের বিজেপি সরকার। পরবর্তী সময়ে পরিষেবা অনেকটা স্বাভাবিকও হয়েছিল। কিন্তু কয়েকটি এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানোর গুজব ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতেই নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
পূর্বে জারি করা নির্দেশিকা অনুযায়ী, মণিপুরে মোবাইলে ইন্টারনেট ডেটা পরিষেবার উপর সাময়িক বিধিনিষেধ ১ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত বহাল থাকার কথা ছিল। নির্দেশিকায় এ-ও জানানো হয়েছিল যে পরিষেবা স্তব্ধ করার বিষয়টি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। সম্প্রতি মণিপুরে নিখোঁজ দুই স্কুলপড়ুয়ার খুনের দৃশ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে (যদিও এর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তারই ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ বলে সরকারি সূত্রের খবর। ‘আপৎকালীন পরিস্থিতি এবং জননিরাপত্তা আইন’ মেনে সাময়িক ভাবে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
রবিবার মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল থেকে ৫১ কিলোমিটার দূরে চূড়াচাঁদপুর থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ। চার জন অভিযুক্তের মধ্যে দু’জন পুরুষ এবং দু’জন মহিলা। আটক আরও দু’জনেই মহিলা। ধৃতদের নাম পাওমিনলুন হাওকিপ, মালসন হাওকিপ, লিঙ্গনেইচঙ বাইতে, তিন্নেইখোল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত ছাত্রীর বন্ধু ছিলেন ধৃত বাইতে। গত জুলাই থেকে নিখোঁজ ছিল দুই ছাত্র এবং ছাত্রী। ২৬ সেপ্টেম্বর সমাজমাধ্যমে একটি ছবি প্রকাশিত হয়। তাতে দেখা যায়, জঙ্গলে সশস্ত্র গোষ্ঠীর কোনও এক শিবিরে তারা বসে রয়েছে। তাদের দু’জনের বয়স ১৭ বছর। তাদের খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও এখনও তাদের দেহ উদ্ধার হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy