উত্তপ্ত অসম। জ্বলছে অসমের পশ্চিম কার্বি আংলং জেলা। এখনও পর্যন্ত হিংসার ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত আরও অনেকে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন এক বাঙালিও। শুধু তা-ই নয়, সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ঘায়েল হয়েছে পুলিশও। পরিস্থিতি সামাল দিতে দুই জেলায় কার্ফু জারি করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে মোবাইলের ইন্টারনেট পরিষেবাও। বুধবার সকাল থেকে থমথমে পশ্চিম কার্বি আংলং জেলা।
পশ্চিম কার্বি আংলং জেলা এবং সংলগ্ন কার্বিং আংলং জেলায় বহিরাগতদের উচ্ছেদ নিয়ে টানাপড়েন চলছে অনেক দিন ধরে। জমির অধিকার নিয়ে কার্বি জনগোষ্ঠীর লড়াই চলছে। বহিরাগতদের বসতি উচ্ছেদ করা এবং ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত অঞ্চলে কার্বি জনগোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষার দাবিতে গত ১৬ দিন ধরে অনশন আন্দোলন চলছিল। মঙ্গলবার অনশনরত কার্বি জনগোষ্ঠীর এক আন্দোলনকারীকে হাসপাতালে পাঠানোর পরই পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। খবর ছড়ায়, কার্বি নেতাকে তুলে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ!
পুলিশের মতে, এক বিক্ষোভকারী নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ভুল তথ্য ছড়ায়, যার জেরে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। ডিজিপি হরমিত সিংহ বলেন, ‘‘মঙ্গলবার এই এলাকায় একসঙ্গে অনেকে জড়ো হন। অনশনের কারণে এক বিক্ষোভকারীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল। কিন্তু খবর রটে যায় আমরা নাকি তাঁকে গ্রেফতার করেছি।’’
আরও পড়ুন:
পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা এলাকার একটি সেতুর দখল নিতে চেয়েছিলেন। তাতে বাধা দিতে গেলেই তেড়ে আসেন তাঁরা। পুলিশের উপর হামলা শুরু করেন। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশও। তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর উড়ে আসতে থাকে। তাতে অনেক পুলিশকর্মী জখম হন। পুলিশর ডিজিপি এবং আইজিপি (আইনশৃঙ্খলা) অখিলেশ সিংহ বলেন, ‘‘আমাদের উপর ককটেল এবং পাথর ছোড়া হয়। আমার উপর তির-ধনুক নিয়ে আক্রমণ করেন বিভোক্ষকারীরা।’’
কার্বিদের অভিযোগ, বহিরাগতেরা তাঁদের জমি দখল করে রেখেছে। তাদের উচ্ছেদের কথা বার বার বলা হলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন। দিন কয়েক আগে রাজ্যের মন্ত্রী রনজ পেগু পশ্চিম কার্বি আংলং জেলার খেরোনিতে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করেন। আগামী ২৬ ডিসেম্বর, শুক্রবার কার্বি আংলং স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা সরকারের। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন মন্ত্রী। তবে তার পরেও মঙ্গলবার দিনভর ওই এলাকায় অশান্তি ছিল। খেরোনিতে দোকান এবং বাজারে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।