Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
আদানি গোষ্ঠী থেকে বাজেট, কেন্দ্রীয় অর্থসচিব টি ভি সোমনাথনকে প্রশ্ন করলেন প্রেমাংশু চৌধুরী
Finance Secretary T. V. Somanathan

সরকারি বিমা সংস্থা বা সঞ্চয়ে চিন্তা নেই, একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন কেন্দ্রীয় অর্থসচিব

কোনও নির্দিষ্ট সংস্থার ভাগ্য নিয়ে মন্তব্য করা আমার এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। কোনও সংস্থার ভাগ্য তার নিজের উপরে নির্ভর করছে। সে তার নিজের পায়ে দাঁড়াবে।

Picture of T. V. Somanathan.

অর্থসচিব টি ভি সোমনাথন। ফাইল চিত্র।

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:০৫
Share: Save:

প্রশ্ন: বাজেটের পরে শেয়ার বাজারের উত্থান তো আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দরের পতনের ধাক্কায় চুপসে গেল! কী বলবেন?

উত্তর: নির্দিষ্ট একটি বেসরকারি সংস্থার শেয়ার দর উঠছে না নামছে, সেটা ভাল না খারাপ, তার মধ্যে ঢুকব না। কোনও নির্দিষ্ট সংস্থার ভাগ্য নিয়ে মন্তব্য করা আমার এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। কোনও সংস্থার ভাগ্য তার নিজের উপরে নির্ভর করছে। সে তার নিজের পায়ে দাঁড়াবে। শেয়ার বাজার সংক্রান্ত বিষয় শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা দেখবে।

প্রশ্ন: কিন্তু জীবন বিমা নিগম বা এলআইসি কোটি কোটি টাকা আদানির শেয়ারে লগ্নি করেছে। স্টেট ব্যাঙ্ক হাজার হাজার কোটি টাকা আদানি গোষ্ঠীকে ঋণ দিয়েছে। এলআইসি, স্টেট ব্যাঙ্কে সাধারণ মানুষের অর্থ গচ্ছিত রয়েছে। সেই সঞ্চয়ের অর্থ কি সুরক্ষিত?

উত্তর: এটা ন্যায্য প্রশ্ন। এ বিষয়ে আমি স্পষ্ট করে, জোর দিয়ে বলতে চাই, সরকারি আর্থিক সংস্থা, তা সে বিমা সংস্থা হোক বা ব্যাঙ্ক, সেখানে কোনও বিপদের আশঙ্কা নেই। কারণ, কোনও একটি নির্দিষ্ট সংস্থায় এলআইসি-র লগ্নি তার মোট লগ্নির তুলনায় এতটাই সামান্য যে সেই সংস্থার ভাগ্যের উপরে এলআইসি-র ভাগ্য নির্ধারণ করে না। একই ভাবে স্টেট ব্যাঙ্ক মোট যে ঋণ দিয়েছে, সেই তুলনায় কোনও একটি সংস্থাকে দেওয়া ঋণের পরিমাণ খুবই সামান্য। ফলে এলআইসি-তে যাদের বিমা রয়েছে বা স্টেট ব্যাঙ্কে যাদের সঞ্চয় রয়েছে, তাদের কোনও চিন্তার কারণ নেই। এলআইসি বা স্টেট ব্যাঙ্কের শেয়ারে যারা লগ্নি করেছেন, তাদের উপরেও খুবই সামান্য প্রভাব পড়বে। কারণ, কোনও একটি সংস্থার শেয়ারের ওঠানামার উপরে এলআইসি, স্টেট ব্যাঙ্কের শেয়ার দর নির্ভর করে না। যে বেসরকারি সংস্থাটি এই সপ্তাহে খবরে রয়েছে, সেই সংস্থায় এলআইসি, স্টেট ব্যাঙ্কের ১ শতাংশেরও কম অর্থ আটকে রয়েছে। ফলে সঞ্চয়কারীদের অর্থের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তার দরকার নেই। সামগ্রিক অর্থনীতির দিক থেকেও চিন্তার কারণ নেই।

(সাক্ষাৎকারটির পরবর্তী অংশটি পড়তে ক্লিক করুন নীচের লিঙ্কে)

প্রশ্ন: বাজেটে আয়করদাতাদের নতুন আয়কর কাঠামোকে আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সেখানে জীবন বিমা, স্বাস্থ্য বিমা, বাড়ির ঋণের সুদে কোনও ছাড় মিলবে না। সরকার কি চাইছে মানুষ আরও বেশি করে শেয়ার বাজারে লগ্নি করুক?

উত্তর: একেবারেই না। বলা উচিত, কোনও কিছুতেই উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে না। যে যার নিজের আয়-ব্যয়, সঞ্চয়ের প্রয়োজন বুঝে লগ্নি করবেন। এত দিন কর ছাড়ের জন্য কিছু ক্ষেত্রে জীবন বিমা, স্বাস্থ্য বিমায় উৎসাহিত করা হচ্ছিল। কিছু ক্ষেত্রে বাড়ির ঋণ নিয়ে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছিল। এখন সব সমান।

প্রশ্ন: বলা হচ্ছে, যাঁদের আয় বেশি, তাঁরাই নতুন আয়কর কাঠামোয় সুবিধা পাবেন। তা সত্যি হলে কত জন নতুন কর কাঠামো বেছে নেবেন?

উত্তর: বছরে ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত যাঁদের আয়, তাঁরা সকলেই নতুন কর কাঠামো বেছে নেবেন। ৭ লক্ষের উপরে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের সিংহভাগও নতুন কর কাঠামো বেছে নেবেন। তাত্ত্বিক ভাবে পুরনো কর কাঠামোয় দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়ে কর ছাড় মিললেও, কম আয়সম্পন্ন সকলের পক্ষে অতখানি টাকা সঞ্চয় করা সম্ভব হয় না। কারণ সংসারের ন্যূনতম খরচ, গাড়ি না হোক স্কুটার-বাইক কেনার খরচ, জ্বালানি, সন্তানের শিক্ষার খরচ থাকে। শুধু ইপিএফ-এর সঞ্চয়ে পুরো কর ছাড়ের সুবিধা মেলে না। কোথায় লগ্নি করলে ভাল হবে, পুরো কর ছাড়ের সুবিধা মিলবে, সে বিষয়ে এই কম আয়ের মানুষেরা উপযুক্ত পরামর্শও পান না। ফলে ভুল করেন। নতুন আয়কর কাঠামোয় এত ঝঞ্ঝাট নেই। তবে কেউ চাইলে পুরনো আয়কর কাঠামোয় থাকতেই পারেন। কিন্তু উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, যাঁর আয় ৭ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, তিনি পুরো দেড় লক্ষ টাকা সঞ্চয় করলেই পুরো কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন। যাঁর আয় ১০ লক্ষ টাকা, তিনি ২ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা কর ছাড় নিতে পারলেই পুরো সুবিধা পাবেন। তা না হলে নতুন আয়কর কাঠামোয় বেশি সুবিধা মিলবে। ফলে আমার মনে হয়, অর্ধেকের বেশি করদাতা নতুন কর কাঠামো বেছে নেবেন।

প্রশ্ন: নতুন আয়কর কাঠামোয় লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়করে ছাড় বাদ দিলে আর কোনও জনমোহিনী ঘোষণা নেই। মনে করা হচ্ছে, বছর আরও গড়ালে, লোকসভা ভোট আরও এগিয়ে এলে সাধারণ মানুষের জন্য কিছু উপহার ঘোষণা হবে। যেমন গত লোকসভা নির্বাচনের আগে পিএম-কিসান প্রকল্প ঘোষণা করে চাষিদের হাতে টাকা দেওয়া হয়েছিল। এটা কি সত্যি?

উত্তর: (মুচকি হেসে) এ বিষয়ে অন্তত আমার কাছে কোনও তথ্য নেই।

(সাক্ষাৎকারের পরবর্তী পর্ব রবিবার)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE