Advertisement
E-Paper

চাবাহার নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি চায় না ইরান

ভারত ও ইরানের সম্পর্ক এখন এ নিয়েই ঘুরপাক খাচ্ছে । সম্প্রতি পাকিস্তানে গিয়ে ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফ চাবাহার বন্দর নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে ক্ষুব্ধ নয়াদিল্লি। তবে এখন এই বিতর্কে জল ঢালতে উদ্যোগী হয়েছে তেহরান।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০৬:১৬

চাবাহার তুমি কার!

ভারত ও ইরানের সম্পর্ক এখন এ নিয়েই ঘুরপাক খাচ্ছে । সম্প্রতি পাকিস্তানে গিয়ে ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফ চাবাহার বন্দর নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে ক্ষুব্ধ নয়াদিল্লি। তবে এখন এই বিতর্কে জল ঢালতে উদ্যোগী হয়েছে তেহরান। তাই ভারতকে সঙ্গে নিয়ে চাবাহারে বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য শীঘ্রই একটি প্রচার অনুষ্ঠান করতে চলেছে ইরান। তাতে আমন্ত্রণ জানানো হবে সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলিকে। অনুষ্ঠানে ভারত ও ইরান যৌথ ভাবে চাবাহারে তৈরি হওয়া অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে চলেছে।

বিতর্কের সূত্রপাত ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফের সাম্প্রতিক পাকিস্তান সফরে। ইসলামাবাদের প্রতি মৈত্রীর বার্তা দিতে গিয়ে জারিফ পাকিস্তানের গ্বদর এবং ইরানের চাবাহার বন্দরের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর কথা বলেন। স্বাভাবিক ভাবেই তা রক্তচাপ বাড়িয়েছে সাউথ ব্লকের। চাবাহার বন্দরটিকে নিয়ে সদ্য একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সই করেছে ভারত, ইরান এবং আফগানিস্তান।

যার মূল উদ্দেশ্য, পাকিস্তানকে এড়িয়ে কাবুল তথা মধ্য এশিয়ায় ভারতীয় পণ্য রফতানির বহু আকাঙ্ক্ষিত দরজা খোলা। ইতিমধ্যে চাবাহার বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আফগানিস্তানের জন্য একদফা খাদ্যশস্য পাঠানোও হয়েছে। কৌশলগত ভাবে বিষয়টি নয়াদিল্লির কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যে পাকিস্তানকে এড়াতে দীর্ঘ দিনের প্রয়াসের পরে চাবাহার বন্দরে নিজেদের ঘাঁটি বানানো হল, এখন সেই ইসলামাবাদকেই কেন সেখানে আহ্বান করছেন ইরানি বিদেশমন্ত্রী— কূটনৈতিক চ্যানেলে এ কথা তেহরানের কাছে জানতে চেয়েছিল নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, সে দেশের পক্ষ থেকে নয়াদিল্লিকে আশ্বস্ত করে বলা হয়েছে, প্রতিশ্রুতি ভাঙার কোনও প্রশ্নই নেই। ইরানের জাতীয় নীতির বাধ্যবাধকতার কারণেই ইসলামাবাদকে বার্তা দেওয়া প্রয়োজন ছিল যে চাবাহার ভারত-ইরান সংযোগ বাড়ানোর ক্ষেত্র হলেও পাকিস্তান-বিরোধিতার কৌশলগত মঞ্চ নয়।

সে কারণেই পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ জাভেদ জারিফ ইসলামাবাদে গিয়ে চাবাহার এবং গ্বদরের সংযোগের কথা বলে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উষ্ণতা তৈরি করতে চেয়েছেন। তবে এই নিয়ে যাতে ভারত এবং ইরানের মধ্যে কোনও আস্থার অভাব না ঘটে, সে জন্যই প্রচার অনুষ্ঠানটির কথাও ভাবা হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে নয়াদিল্লি।

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, চাবাহার বন্দরের উন্নয়ন এবং কার্যকলাপ নিয়ে ইরান যে ভারতের সঙ্গে ইতিমধ্যেই চুক্তিবদ্ধ, এটা গোপন বিষয় নয়। ওই বন্দরের রাশ যে ভারতের হাতেই সেটাও সবার জানা। ফলে পাকিস্তান যদি চাবাহারকে ব্যবহার করে কোনও বাণিজ্যিক
সুফল পেতে চায়, তা হলে তাদের বকলমে ভারতের নেতৃত্ব মেনে নিতে হবে। যা কার্যত অসম্ভব ইসলামাবাদের পক্ষে।

তা ছাড়া, ইরানের বিদেশমন্ত্রী পাকিস্তানকে চাবাহর বন্দর ব্যবহার করার প্রস্তাব দেননি, সে দেশের গ্বদর বন্দরের সঙ্গে চাবাহারের যোগাযোগ বাড়ানোর কথাও বলেছেন। সেটিও কার্যত অসম্ভব পাকিস্তানের কাছে। কারণ, গ্বদরের আসল চাবি চিনের হাতে। এটিও গোপন নয় যে গ্বদর শুধুমাত্র একটি বাণিজ্যিক বন্দরই নয়, এটি ছদ্মবেশে চিনের কৌশলগত ঘাঁটি। ফলে ইরান সেখানে নাক গলাক, তা চাইবে না চিনও।

Chabahar Port India Iran চাবাহার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy