E-Paper

ইরানের তেল কিনতে কি ট্রাম্পের দ্বারস্থ ভারত

ইরান ও ভেনেজ়ুয়েলার তেল আমদানির উপরে আমেরিকা বহু দিন ধরেই ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি করে রেখেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৫৩
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক-জরিমানার কোপের মুখে পড়তে হয়েছে। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমাতে হলে কি ইরান ও ভেনেজ়ুয়েলা থেকে তেল কেনার জন্য মোদী সরকার আমেরিকার অনুমতি চাইছে!

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের আমেরিকা সফরে নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। মোদী সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, রাশিয়া থেকে ভারতকে তেল কেনা কমাতে হলে ইরান, ভেনেজ়ুয়েলা থেকে তেল আমদানি করার অনুমতি দিতে হবে। আজ বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ভারত সরকারের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, তার জন্য আমেরিকার সরকারের কেন অনুমতি চাওয়া হচ্ছে? কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরার কটাক্ষ, “নরেন্দ্র মোদী এখন আমেরিকার কাছে আত্মসমর্পণ করে ইরান-ভেনেজ়ুয়েলা থেকে তেল আমদানির অনুমতি চাইছেন। এই দেশে কে সরকার চালাচ্ছেন? নরেন্দ্র মোদী না ডোনাল্ড ট্রাম্প?”

ইরান ও ভেনেজ়ুয়েলার তেল আমদানির উপরে আমেরিকা বহু দিন ধরেই ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি করে রেখেছে। তার জেরে ইরানের কাছ থেকে ভারতের সরাসরি তেল আমদানিও ২০১৯ থেকে বন্ধ। ভেনেজ়ুয়েলার থেকে তেল কেনার উপরে আমেরিকা কড়াকড়ি শুরু করায় চলতি বছরে সেখান থেকেও আমদানি কার্যত বন্ধ। ট্রাম্প রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতীয় পণ্যে ২৫% শুল্কের উপরে বাড়তি ২৫% জরিমানা চাপিয়েছেন।

এ বার ভারত কি সত্যিই ইরান ও ভেনেজ়ুয়েলা থেকে তেল আমদানি করতে চায়? বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জায়সওয়াল জানিয়েছেন, তাঁর এ বিষয়ে কিছু জানা নেই। কেন্দ্রীয় তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী সরাসরি এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি। তবে বলেন, “ভারত বরাবরই ইরান ও ভেনেজ়ুয়েলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা পালন করে এসেছে। কারণ ভারত আন্তর্জাতিক মঞ্চের দায়িত্বশীল সদস্য। কিন্তু রাশিয়া থেকে তেল কেনার উপরে নিষেধাজ্ঞা নেই।” তাঁর বক্তব্য, রাশিয়া পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী দেশ। প্রতিদিন ১ কোটি ব্যারেল অশোধিত তেল সরবরাহ করে রাশিয়া। সেখানে বাধা এলে জ্বালানি খরচ কমাতে হবে। তার গুরুতর প্রভাব পড়বে। তাই রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, তুরস্কের মতো দেশও রাশিয়া থেকে তেল কিনছে।

আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনায় গতি আনতে বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল আমলাদের নিয়ে ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রির ও ভারতে নবনিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত সের্গিও গোরের বৈঠক হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাব্য আকার নিয়ে মত বিনিময় হয়েছে। দ্রুত চুক্তি চূড়ান্ত করতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই আলোচনার পথে বরফ গলাতে আমেরিকাতেই পীযূষ গয়াল বলেছিলেন, ভারত আমেরিকার থেকে আরও বেশি তেল কিনবে। আমেরিকার শক্তি দফতরের সচিব ক্রিস রাইট তার পরে আশা প্রকাশ করেন, আগামী দিনে আমেরিকা থেকেই তেল কিনবে ভারত। যদিও বাণিজ্য মন্ত্রকের জুলাই মাসের তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকা থেকে কেনা তেলের জন্য রাশিয়ার তুলনায় অনেক বেশি দাম গুণতে হয়েছে। তেলমন্ত্রী অবশ্য আজ জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে রাশিয়া থেকে যে অনেক সস্তায় তেল মিলছে, এমন নয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Iran america

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy