Advertisement
০৩ মে ২০২৪
IT Survey In BBC Office

‘ভদ্র ভাবে বলুন’, আয়কর কর্তার চড়া সুরে পাল্টা বিবিসি কর্মীর, প্রকাশ্যে ‘সমীক্ষা’র ভিডিয়ো

আয়কর দফতরের এক আধিকারিক বিবিসি অফিসে ঢুকতে গেলে সেখানকার এক কর্মী তাঁকে ওয়ারেন্ট (প্রবেশ করার বৈধ অনুমতিপত্র) দেখাতে বলেন।

 Inside footage of BBC Delhi office.

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ আয়কর দফতরের দল এসে পৌঁছয় দিল্লি এবং মুম্বইয়ে বিবিসির দফতরে। ছবি: টুইটার।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৫০
Share: Save:

২৪ ঘণ্টা পার হয়েছে। এখনও বন্ধ হয়নি ব্রিটেনের জাতীয় সম্প্রচারকারী ‘ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন’ (বিবিসি)-এর মুম্বই এবং দিল্লির কার্যালয়ে আয়কর দফতরের ‘সমীক্ষা’। তার মধ্যেই প্রকাশ্যে এল বিবিসির দিল্লি কার্যালয়ের অন্দরে আয়কর দফতরের আধিকারিক এবং বিবিসির এক কর্মীর কথা কাটাকাটির ভিডিয়ো। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।

ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, আয়কর দফতরের এক আধিকারিক বিবিসি অফিসে ঢুকতে গেলে সেখানকার এক কর্মী তাঁকে ওয়ারেন্ট (প্রবেশ করার বৈধ অনুমতিপত্র) দেখাতে বলেন। এর পর ওই আয়কর দফতরের আধিকারিককে সুর চড়িয়ে প্রথমে নিজের পরিচয় দিতে দেখা যায় এবং পরে বিবিসি কর্মীদের ফোন রেখে দেওয়ার নির্দেশ দিতে দেখা যায়। প্রকাশ্যে আসা ওই ভিডিয়োতে এক মহিলাকণ্ঠও শোনা গিয়েছে। মহিলাকে ভিডিয়োতে না দেখা গেলেও তাঁকে ওই সরকারি আধিকারিককে ভাল ভাবে এবং চিৎকার না করে ‘ভদ্র ভাবে’ কথা বলেন। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, এর পরই সরকারি আধিকারিক আরও খানিক সুর চড়িয়ে জানতে চান, কেন বিবিসির কর্মীরা দশ মিনিট ধরে কার্যালয়ের গেট খুলছিলেন না? সংক্ষিপ্ত ওই ভিডিয়োটি টুইটারে পোস্ট করেছেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির নাগাল্যান্ডের মিডিয়া কোঅর্ডিনেটর সুজাতা পাল।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ আয়কর দফতরের দল এসে পৌঁছয় দিল্লি এবং মুম্বইয়ে বিবিসির দফতরে। অফিসে ঢুকেই বিবিসির সমস্ত সাংবাদিক এবং সংবাদকর্মীদের মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ জমা নিয়ে নেন আয়কর আধিকারিকরা। তার পর শুরু হয় ‘সমীক্ষা’। ২৪ ঘণ্টা পেরিয়েও যে ‘সমীক্ষা’ চলছে।

সূত্রের খবর, আয়কর কর্মীরা ২০১২ সাল থেকে বিবিসির সমস্ত লেনদেনের তথ্য খতিয়ে দেখছেন। পাশাপাশি আয়কর দফতরের তরফে বিবিসির ব্যবসা পরিচালনার বিভিন্ন নথিও খতিয়ে দেখা চলছে।

বিবিসির তরফে টুইট করে আয়কর দফতরের সঙ্গে সমস্ত রকম সহযোগিতার বার্তা দেওয়া হলেও এই সরকারি দফতরের অভিযান ঘিরে তোলপাড় হয়েছে দেশের রাজনীতি। ব্রিটেনের ঋষি সুনকের সরকার পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি জারি করেছে ‘এডিটরস গিল্ড’। আয়কর দফতরের ‘সমীক্ষা’র নিন্দা করে বিবৃতি প্রকাশ করেছে ‘প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া’-ও।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে বিবিসির দুই পর্বের বিতর্কিত তথ্যচিত্র নিয়ে দেশের রাজনীতি এমনিতেই সরগরম ছিল। দু’দশক আগে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদীর জমানায় গোধরাকাণ্ড এবং তদ্‌পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা তুলে ধরা হয়েছে এক ঘণ্টার তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’-এ। এই তথ্যচিত্র নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তির কথা জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। নিষিদ্ধও করা হয়েছিল তথ্যচিত্রটি। একে ‘অপপ্রচার’ আখ্যা দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, এই তথ্যচিত্র ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে তৈরি হয়েছে। যদিও বিবিসির দাবি, যথেষ্ট গবেষণা করে তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হয়েছে। মোদী সরকারের ওই পদক্ষেপকে বিরোধী দলের নেতারা ‘সেন্সরশিপ’ আখ্যা দিয়েছেন। কেন্দ্রের তরফে এই তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করার পরও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এই তথ্যচিত্র দেখানো হচ্ছে। বিবিসি-র এই তথ্যচিত্র নিয়ে মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টেও। সেই আবহেই বিবিসি-র দুই শহরের কার্যালয়ে আয়করের সমীক্ষা অভিযান বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BBC BBC Documentary BBC News income tax
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE