Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জাল্লিকাট্টু বিতর্ক, আজ থেকে অনশনে রহমান, সরব বিশ্বনাথনও

প্রতিবাদের পারদ ক্রমশ চড়ছে। জাল্লিকাট্টু (ষাঁড়ের দৌড়) ফেরানোর দাবিতে চেন্নাইয়ের মেরিনা সৈকতে বৃহস্পতিবারও জমায়েত অটুট রইল। তবে বিক্ষোভের মূল কেন্দ্রে চলে এল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম। কারণ মুখ্যমন্ত্রী ও পনীরসেলভম মোদীর সঙ্গে দেখা করার পরেও আশার আলো দেখাতে পারেননি।

সংবাদ সংস্থা
চেন্নাই শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:১৮
Share: Save:

প্রতিবাদের পারদ ক্রমশ চড়ছে। জাল্লিকাট্টু (ষাঁড়ের দৌড়) ফেরানোর দাবিতে চেন্নাইয়ের মেরিনা সৈকতে বৃহস্পতিবারও জমায়েত অটুট রইল। তবে বিক্ষোভের মূল কেন্দ্রে চলে এল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম। কারণ মুখ্যমন্ত্রী ও পনীরসেলভম মোদীর সঙ্গে দেখা করার পরেও আশার আলো দেখাতে পারেননি। তাতেই আগুনে ঘি পড়ে। মোদী-বিরোধী চেহারা নেয় বিক্ষোভ। প্রতিবাদী পড়ুয়ারা পাশে পেয়েছে বিশ্বনাথন আনন্দ এবং এ আর রহমানের মতো সেলিব্রিটিদেরও।

কাল প্রতিবাদীদের শান্ত করতে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জাল্লিকাট্টু নিয়ে অর্ডিন্যান্স আনার কথা তুলবেন। কিন্তু নয়াদিল্লিতে এসে বৈঠকের পরে অর্ডিন্যান্স নিয়ে কিছুই জানাতে পারেননি পনীরসেলভম। তিনি দাবি করেন মোদী তাঁকে বলেছেন, ‘‘এই বিষয়টি নিয়ে তামিলনাড়ুর মানুষের ভাবাবেগ আমি বুঝতে পারছি।’’ কিন্তু জাল্লিকাট্টু নিয়ে অর্ডিন্যান্সের প্রসঙ্গ তুলতেই প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দেন, বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে এখনও বিচারাধীন। তাই কেন্দ্রের পক্ষে অর্ডিন্যান্স আনা সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় সরকার এর আগেই এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তাদের জাল্লিকাট্টু নিয়ে রাজ্য সরকার যে পথে এগোবে তাতে তাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু শেষ কথা বলবে সুপ্রিম কোর্টই।

বৈঠকে পনীরসেলভম ও মোদী। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

মোদীর এই অবস্থান তামিল সংস্কৃতির পক্ষে অপমানজনক— বলছেন বিক্ষোভকারীরা। মেরিনা সৈকতে আজ মোদীর ছবি আঁকা প্ল্যাকার্ডে কালি মাখিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি পনীরসেলভম, এডিএমকে সাধারণ সম্পাদক শশিকলা এবং নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী মেনকা গাঁধীর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন পড়ুয়ারা। সপ্তাহের গোড়া থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে তামিলনাড়ুর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেক মুখই সমর্থন জানিয়েছেন। এ বার সেই সেলিব্রিটি তালিকায় জুড়ল সঙ্গীতকার এ আর রহমানের নাম। তিনি বলেছেন, তামিলনাড়ুর এই প্রতিবাদী চরিত্রকে সম্মান জানাতে আগামিকাল থেকে অনশনে বসবেন। প্রাক্তন বিশ্বসেরা দাবাড়ু বিশ্বনাথন আনন্দ টুইটারে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, ‘‘ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্তির লক্ষ্যে জেগে উঠেছে আমার রাজ্য। তামিলনাড়ুর মানুষ হওয়ায় গর্বিত আমি।’’ ডিএমকে কার্যনির্বাহী সভাপতি এম কে স্ট্যালিন জাল্লিকাট্টু নিয়ে সর্বদল বৈঠক করার অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। শুক্রবার বিধানসভায় এ নিয়ে আলোচনা চেয়েছেন তিনি।

কিন্তু তামিলনাড়ু জুড়ে এই প্রতিবাদ থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে দেশের শীর্ষ আদালত। জাল্লিকাটুর সমর্থনে মেরিনা সৈকতে যাঁরা রাত কাটাচ্ছেন, তাঁদের কোনও নিরাপত্তা নেই বলে সুপ্রিম কোর্টে এক ব্যক্তি আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই সূত্রে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ আবেদনকারীর উদ্দেশে আজ বলেছে, ‘‘এ নিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্টকেই ভাবতে দিন। আপনিও সেখানে যান। সব কিছু নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চলে আসেন কেন?’’ মাদ্রাজ হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট অ্যাসোসিয়েশন অবশ্য আজ জানিয়েছে, রাজ্যে চলতে থাকা প্রতিবাদের সমর্থনে শুক্রবার তারা আদালত বয়কট করবেন। তবে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জি মহানকৃষ্ণণ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘‘ষাঁড়কে পোষ মানানোর খেলায় সুপ্রিম কোর্টের যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, আমরা তার বিরোধিতা করছি না। আমরা শুধু পেটা-র (পিপল ফর দি এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অব অ্যানিম্যালস) বিরুদ্ধে।’’

তামিলনাড়ু পেরিয়ে প্রতিবাদের ঢেউ ছুঁয়েছে শ্রীলঙ্কা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়ার তামিল বাসিন্দাদের মনেও। এত রকম চাপের মুখে কেন্দ্র যদি অবস্থান বদল করে অর্ডিন্যান্স আনার কথা ভাবে, আইনি পথে পেটা এর মোকাবিলা করবে বলে জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE