Advertisement
E-Paper

রাঁচীতে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের বিক্ষোভ, গৃহবন্দি করা হল ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চম্পইকে

রাঁচীতে রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট মেডিক্যাল সায়েন্সেস (রিম্‌স) তাদের আরও একটি ক্যাম্পাস তৈরি করতে চলেছে। সেই কারণে নাগরি এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এরই বিরোধিতায় সরব হয়েছে আদিবাসী এবং কৃষক সংগঠনগুলি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৫ ২০:২৬
চম্পই সোরেন।

চম্পই সোরেন। —ফাইল চিত্র।

রাঁচীতে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছেন ঝাড়খণ্ডের বেশ কয়েকটি আদিবাসী সংগঠন। সেই আন্দোলনে যোগ দিতে যাওয়ার আগেই রবিবার সকালে গৃহবন্দি করা হল ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চম্পই সোরেনকে। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে নিজেই এই খবর দেন তিনি। লেখেন, “আদিবাসী কৃষকদের জন্য সরব হওয়ায় আমার কণ্ঠস্বরকে দমানোর জন্য গৃহবন্দি করল ঝাড়খণ্ড সরকার।” সংবাদমাধ্যমকে চম্পই জানান, রবিবার সকাল ৭টা নাগাদ পুলিশের ডিএসপি তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে বলেন এবং বাইরে বেরোতে নিষেধ করেন।

রাঁচীতে রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট মেডিক্যাল সায়েন্সেস (রিম্‌স) তাদের আরও একটি ক্যাম্পাস তৈরি করতে চলেছে। সেই কারণে নাগরি এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এরই বিরোধিতায় সরব হয়েছে আদিবাসী এবং কৃষক সংগঠনগুলি। তারা ‘হাল জোতো, রোপো রোপো’ (চাষ করব, ফসল ফলাব) আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। আঁটসাঁট পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই মুখে ঝাড়খণ্ড আন্দোলনের নেতা, সদ্যপ্রয়াত শিবু সোরেনের ছবি দেওয়া মুখোশ পড়ে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, জমিতে চাষ করতে না-পারলে খাব কী? যদিও ঝাড়়খণ্ড সরকারের বক্তব্য, প্রস্তাবিত এলাকায় কোনও কৃষকের জমি নেই।

রবিবার এই আন্দোলনেই যোগ দেওয়ার কথা ছিল ঝাড়খণ্ড আন্দোলনে একদা শিবুর সঙ্গী চম্পইয়ের। কিন্তু তিনি বাড়ি থেকে রওনা দেওয়ার আগেই তাঁকে গৃহবন্দি করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি রাঁচী যাওয়ার পথে আটক করা হয় চম্পইয়ের পুত্র বাবুলাল এবং তাঁর সঙ্গীদের। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পুলিশ বিনা প্ররোচনায় লাঠিচার্জ করেছে। চম্পইকে গৃহবন্দি করা প্রসঙ্গে রাঁচীর ডেপুটি পুলিশ সুপার কেভি রমন সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বলেন, “আদিবাসী সংগঠনের প্রতিবাদ কর্মসূচির প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ওঁকে (চম্পই) গৃহবন্দি করা হয়েছে।” অশান্তির আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই চম্পইয়ের বাড়ির সামনে এবং রাঁচীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। চম্পই শিবিরের বক্তব্য, ‘অগণতান্ত্রিক আচরণ’ করছে ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেনের সরকার।

২০২৪ সালের ৩১ জানুয়ারি ঝাড়খণ্ডে জমি দুর্নীতি সংক্রান্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় হেমন্তকে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গ্রেফতারির আগে মুখ্যমন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। হেমন্তের অনুপস্থিতিতে তৎকালীন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-এর নেতা এবং সোরেন পরিবারের আস্থাভাজন বলে পরিচিত চম্পইকে মুখ্যমন্ত্রী মনোনীত করেন দলীয় নেতৃত্ব। পাঁচ মাস রাঁচীর বিরসা মুন্ডা জেলে বন্দি থাকার পরে ওই বছরেরই ২৮ জুন ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টের নির্দেশে মুক্তি পান হেমন্ত। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আবারও মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন তিনি। পদ ছাড়তে হয় চম্পইকে। তবে রেখে দেওয়া হয় মন্ত্রিসভায়। তবে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়া নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে মতপার্থক্য হয় তাঁর। তার পর ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। সিংভূম অঞ্চলে চম্পইয়ের দারুণ প্রভাব। সেই অঙ্ক মাথায় রেখেই তাঁকে দলে নিয়েছিল পদ্মশিবির। তবে নিজের সরাইকেল্লা আসনটি ধরে রাখলেও বিজেপিকে সরকারে আনতে পারেননি চম্পই। ফের মুখ্যমন্ত্রী হন শিবু সোরেনর পুত্র হেমন্তই।

Champai Soren House Arrest Jharkhand JMM BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy