Advertisement
E-Paper

মিলল না সমাধানসূত্র, মণিপুরে নতুন করে অশান্তি না ছড়ালেও বন্‌ধ চলছেই

গত ৮ মার্চ মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় লালগৌথাং সিংসিত নামে এক কুকি বিক্ষোভকারীর। সারা দিনে রাজ্য জুড়ে পৃথক পৃথক হামলার ঘটনায় জখম হন কমপক্ষে ২৭ জন নিরাপত্তাকর্মী। এর পরেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্‌ধের ডাক দেয় কুকিদের সংগঠন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৫ ১৪:২৮
মণিপুরে সংঘর্ষের চিত্র।

মণিপুরে সংঘর্ষের চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।

অনির্দিষ্টকালের জন্য মণিপুরের বিভিন্ন প্রান্তে বন্‌ধ ডেকেছেন কুকি বিক্ষোভকারীরা। তিন দিন হয়ে গেলেও এখনও স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। সেই আবহে গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক চলল মণিপুরের কাংপোকপি জেলা প্রশাসন এবং কুকি-জো নেতাদের। তবু মিলল না সমাধানসূত্র।

গত ৮ মার্চ মণিপুরে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় লালগৌথাং সিংসিত নামে এক কুকি বিক্ষোভকারীর। সারা দিনে রাজ্য জুড়ে পৃথক পৃথক হামলার ঘটনায় জখম হন কমপক্ষে ২৭ জন নিরাপত্তাকর্মী। এর পরেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্‌ধের ডাক দেয় কুকিদের সংগঠন। রাজ্যে শান্তি ফেরাতে কুকিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রশাসনিক কর্তারা। কাংপোকপিতে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয় কুকি-জো কাউন্সিল (কেজ়েডসি) এবং উপজাতি ঐক্য কমিটি (সিওটি‌ইউ)-র সদস্যদের। কুকি নেতারা মূলত দু’টি দাবিতে অনড় ছিলেন। এক, ‘অবাধ চলাচল’ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। এবং দুই, কাংপোকপির পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্ত শুরু করতে হবে এবং অবিলম্বে তাঁকে বদলি করার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে কর্তৃপক্ষ এই দাবিগুলির একটিও পূরণ করতে রাজি না হলে শেষমেশ আলোচনাটি ভেস্তে যায়। এর পরেই কুকি-জো নেতৃত্ব জানিয়ে দেয়, রাজ্যের সমস্ত কুকি অধ্যুষিত অঞ্চলে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্‌ধ চলবে।

কাংপোকপি জেলা হাসপাতালের মর্গে এখনও দাবিহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে লালগৌথাং সিংসিতের মৃতদেহ। ৮ মার্চ থেকে পালা করে করে হাসপাতালে জড়ো হয়ে লালথাংয়ের দেহের সামনে শোকজ্ঞাপন করছেন কুকি গোষ্ঠীর মহিলারা। অন্য দিকে, সিওটিইউ-র মুখপাত্র এনজি লুন কিপগেন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, অবিলম্বে প্রশাসন পদক্ষেপ না করলে আন্দোলন তীব্রতর হবে। সেই আবহে সোমবার রাতেও মণিপুরে শান্তি, ঐক্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জিরিবামের ডেপুটি কমিশনার। উস্কানিমূলক খবর বা গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। তবে সে সবে গলছেন না কুকিরা।

প্রসঙ্গত, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পদত্যাগের পর থেকে রাষ্ট্রপতি শাসনের আওতায় মণিপুরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন রাজ্যপাল অজয়কুমার ভল্লা। গত ২ মার্চ ভল্লা এবং অন্য আধিকারিকদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মণিপুরের পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন তিনি। বৈঠকের পরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ৮ মার্চ থেকে মণিপুরের সব রাস্তা যেন সচল থাকে। সেইমতো ৮ মার্চ সকাল থেকে রাস্তাঘাট ‘সচল’ করার প্রয়াসে নামে পুলিশ ও সেনার যৌথ দল। তার বিরোধিতায় শনিবার সকালে কাংপোকপি জেলায় যান চলাচল রুখতে পথ অবরোধ করেন কুকি জনগোষ্ঠীর কিছু মহিলা। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী লাঠিচার্জ শুরু করে। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। তাতে বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারী আহত হন। বিক্ষোভকারীরাও বাস লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন। কয়েকটি গাড়িতে আগুনও লাগিয়ে দেন তাঁরা। তখনই নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় লালগৌথাংয়ের। উল্টো দিকে, মণিপুর পুলিশের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, ওই ঘটনায় নিরাপত্তাবাহিনীর অন্তত ২৭ জন কর্মীও আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর পরেই কুকি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্‌ধের ডাক দেওয়া হয়। নবগঠিত কুকি-জো কাউন্সিল (কেজ়েডসি) বিবৃতি দিয়ে জানায়, ওই অঞ্চলে শান্তি না ফেরা পর্যন্ত এবং কুকিদের রাজনৈতিক দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সরকারের ‘অবাধ চলাচল’ উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করবেন তাঁরা।

Manipur Kuki Militants Shutdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy