বুধবার রাতে হেমন্ত সোরেনের ইস্তফার পরে রাজভবনে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কের সমর্থনপত্র নিয়ে সরকার গড়ার দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতির বিকেল গড়িয়ে গেলেও জেএমএন নেতা চম্পই সোরেনকে সরকার গড়ার আমন্ত্রণ জানাননি রাজ্যপাল। এই পরিস্থিতিতে ঝাড়খণ্ডে ক্রমশ বিধায়ক কেনাবেচার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা দানা বাঁধছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চম্পই বলেন, ‘‘বুধবার রাতে রাজ্যপালের কাছে জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডির ৪৭ জন বিধায়কের সমর্থনপত্র দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও সরকার গড়ার আমন্ত্রণ পাইনি। প্রতীক্ষায় রয়েছি।’’ তিনি জানান, অন্য রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার দু-তিন ঘণ্টা পরেই সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের নেতাকে সরকার গড়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ১৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে সাংবিধানিক সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলেও তাঁর আশঙ্কা।
আরও পড়ুন:
ঝাড়খণ্ডের বিজেপি-বিরোধী শিবিরের অনেক নেতাই এখন অতীতে উত্তরাখণ্ড, অরুণাচল, কর্নাটক কিংবা হালফিলের মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের মতো ‘বিধায়ক কেনাবেচা’ করে সরকার বদলের আশঙ্কা করছেন। ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ভাবে গরিষ্ঠতার অঙ্ক নিয়ে পরস্পরবিরোধী দাবি রয়েছে ঝাড়খণ্ডের ‘মহাজোটে’ও। চম্পই ৪৭ বিধায়কের সমর্থন দাবি করলেও কংগ্রেস বিধায়ক আলমগীর আলমের দাবি, তাঁদের পাশে রয়েছেন ৪৩ জন। এই আবহে বিজেপির ‘হাত’ থেকে বাঁচাতে ঝাড়খণ্ডের জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি জোটের ৪৭ বিধায়ককে কংগ্রেস শাসিত তেলঙ্গানার রাজধানী হায়দরাবাদের রিসর্টে পাঠানোর প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
৮১ আসনের ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ‘জাদুসংখ্যা’ ৪১। জেএমএম বিধায়ক সরফরাজ আহমেদের ইস্তফার কারণে এখন বিধায়ক সংখ্যা ৮০। শাসক জোটের রয়েছে ৪৮ জন বিধায়ক। জেএমএম ২৯, কংগ্রেস ১৬, আরজেডির ১ এবং সিপিআইএম লিবারেশন ১। কিন্তু হেমন্ত গ্রেফতার হওয়ার ফলে বিধানসভায় ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, বিরোধী শিবিরে রয়েছেন ৩২ বিধায়ক। বিজেপি ২৫, আজসু ৩, এনসিপি (অজিত) ১ এবং নির্দল ৩। অর্থাৎ আট জন বিধায়ক ভাঙাতে পারলেই রাঁচীর কুর্সি যাবে বিজেপির দখলে। বিরোধীদের একাংশের আশঙ্কা, বিধায়ক কেনাবেচার ‘সময়’ করে দিতেই চম্পইকে সরকার গড়তে আমন্ত্রণ জানাতে দেরি করা হচ্ছে। সেই আশঙ্কাকে আরও দৃঢ় করেছে, ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণের ‘রাজনৈতিক অতীত’। তামিলনাড়ুর প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তিনি।