মুথুকৃষ্ণণ। ছবি: সংগৃহীত।
বন্ধুর ফ্ল্যাটে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন এক ছাত্র। খাওয়াদাওয়া শেষে তিনি ঘুমাতে চান বলে একটা ঘরে ঢুকে তার দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়েন। কিন্তু, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর ওই ছাত্র মুথুকৃষ্ণণ সকালে দরজা খুলছেন না দেখে তাঁর বন্ধু উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তিনি বহু ডাকাডাকি করার পড়েও কোনও সাড়া মেলেনি। এর পর কোনও রকমে চাপাচাপি করে দরজা সামান্য ফাঁক করা যায়। দেখা যায়, মুথুকৃষ্ণণ ঘরের ভিতর গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছেন। পরে পুলিশ দরজা ভেঙে তাঁর দেহ উদ্ধার করে।
এটা কি আত্মহত্যার ঘটনা? পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে প্রাথমিক তদন্তের পর তাদের অনুমান, মুথুকৃষ্ণণ নামে জেএনইউ-এর ওই দলিত ছাত্র আত্মহত্যাই করেছেন। যদিও কোনও সুইসাইড নোট খুঁজে পায়নি পুলিশ।
আরও পড়ুন: অযোধ্যায় পেটের টানই বড়
তামিলনাড়ুর সালেমের বাসিন্দা মুথুকৃষ্ণণ হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। জেএনইউতে তিনি সেন্টার ফর হিস্টোরিক্যাল স্টাডিজে এমফিল পড়তেন। নিজে দলিত সম্প্রদায়ের হওয়ায় জাতিবৈষম্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব সময়েই সরব থাকতেন ২৭ বছরের ওই ছাত্র। যদিও পুলিশের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়ে কোনও আন্দোলনে তিনি তেমন ভাবে সক্রিয় ছিলেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের শেষ পোস্টটিতেও তিনি সকলের জন্য সমানাধিকারের কথাই লিখেছিলেন।
তবে কি তিনি কোনও অবসাদে ভুগছিলেন? জেএনইউ-র দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্র বলেন, ‘‘মুথুকৃষ্ণণ খুব দরিদ্র পরিবার থেকে পড়তে এসেছিল। আর্থিক সমস্যার কথা অনেক বার ওর মুখে শুনেছি। পড়াশোনার চাপও ছিল। তবে অবসাদগ্রস্ত অবস্থায় ওকে কখনও দেখিনি।’’
মুথুকৃষ্ণন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী, সেই হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার ঘটনা গোটা দেশের নজর কেড়েছিল। গত বছরের ১৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের একটি ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। বছরখানেকের মধ্যে সমানাধিকারের দাবিতে সরব অন্য এক দলিত ছাত্রের এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু তাই রোহিতের আন্দোলনের কথাই মনে পড়িয়ে দিচ্ছে মানবাধিকার কর্মীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy