জমা পড়েনি রিপোর্ট। তার বিষয়বস্তুও অজানাই। তবু আগেভাগে হইহই করে আক্রমণে নেমে পড়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিলেন সনিয়া গাঁধীর দলের নেতারা এবং তাঁর জামাই! রসিকতা করে অনেকেই বলছেন, এ তো ঠাকুর ঘরে কে, আমি তো কলা খাইনি!
সনিয়ার জামাই রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে হরিয়ানায় জমি কেলেঙ্কারির তদন্ত-রিপোর্ট বৃহস্পতিবার জমা পড়ার কথা ছিল। তদন্তকারী কমিশনের প্রধান তথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এস এন ধিংরা অবশ্য রিপোর্ট পেশের জন্য আজই আরও কিছুটা সময় চেয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু সেই রিপোর্টের বিষয়বস্তু কিছু না জেনেই রবার্ট এ দিন নিজেকে ঘুরিয়ে ‘নির্দোষ’ বলে দাবি করলেন! আর সেই পথে হেঁটে কংগ্রেস নেতারা বিজেপি তো বটেই আক্রমণ করে বসলেন বিচারপতি ধিংরাকেও!
এ দিন নিজের ফেসবুক পোস্টে রবার্ট বঢরা লিখেছেন, ‘‘এক দশক ধরে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে।’’ তাঁর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে কিছুই প্রমাণ করার নেই। একই সঙ্গে রবার্ট লিখেছেন, ‘‘আমি জানি, রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য আমাকে সব সময় ব্যবহার করা হয়েছে। আমি মাথা উঁচু করেই আমার বিরুদ্ধে গড়ে তোলা মিথ্যা ভাবমূর্তির মোকাবিলা করব।’’
রবার্টের এই পোস্টের পরেই কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা সরাসরি আক্রমণ করেন বিচারপতি ধিংরাকে। তাঁর অভিযোগ, হরিয়ানার বর্তমান বিজেপি সরকারের কাছ থেকে সুবিধা পেয়েছেন এই বিচারপতি। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযুক্তের বক্তব্য শোনেননি বিচারপতি ধিংরা। এই তদন্ত কমিটি গঠনই ভুল ভাবে হয়েছে বলেও জানান কংগ্রেস মুখপাত্র।
গত বছর হরিয়ানায় বিজেপি সরকার গঠিত হওয়ার পরেই সেখানে সনিয়া গাঁধীর জামাইয়ের বিরুদ্ধে জমি নিয়ে গুচ্ছ অভিযোগের তদন্ত করতে ধিংরা কমিটি গঠন করা হয়। আজই ছিল সেই কমিটির সেই কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার শেষ দিন। ফলে মনে করা হয়েছিল, আজই রিপোর্ট জমা পড়বে। ঘটনা হল, গত এক বছর ধরে কাজ করলেও এই কমিটি কিন্তু রবার্ট বঢরাকে ডাকেইনি। এমনকী ভূপিন্দর সিংহ হুডা সরকারের আমলে অশোক খেমকা নামে যে আমলা রবার্টের জমি-কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। নিছক নথির ভিত্তিতেই তদন্ত চালিয়ে গিয়েছে কমিটি। যে হেতু বিজেপি সরকার এই কমিটি গঠন করেছিল, তাই কংগ্রেস ধরেই নিয়েছে এই রিপোর্ট যাবে রবার্টের বিরুদ্ধে। তাই আগেভাগেই মাঠে নেমে পড়েছএন রবার্ট ও কংগ্রেস নেতৃত্ব।
বিচারপতি ধিংরা আজ বলেন, ‘‘এ’টিকে ‘বঢরা-রিপোর্ট’ বলাটা আদৌ ঠিক নয়। কংগ্রেস কী অভিযোগ করল, তাতেও কিছু এসে যায় না। আজই সকালে এক জনের থেকে বেনামি লেনেদেন নিয়ে আরও কিছু নথি পেয়েছি। সেটি খতিয়ে দেখতে আমি আরও ছয় সপ্তাহ সময় চেয়েছি। সরকার সেই অনুমতি না দিলে আমি কালই রিপোর্ট পেশ করে দেব।’’ রবার্ট বঢরার সংস্থায় গরমিল নিয়ে অনেক দিন ধরেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তদন্ত করছে। রাজস্থানের জমি নিয়ে তাঁকে নোটিসও দেওয়া হয়েছে। তখন রবার্টের স্ত্রী প্রিয়ঙ্কা সরাসরি নিশানা করেছিলেন মোদী সরকারকে।
সুযোগ পেয়ে আজ বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীও আসরে নেমেছেন। প্রিয়ঙ্কা ও রবার্ট- দু’জনকেই তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। তবে তার বিষয়বস্তু কিন্তু জমি কেলেঙ্কারি নয়! বরং তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন বিজেপির এই বিতর্কিত সাংসদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy