Advertisement
E-Paper

প্রসাদ নেই, মানতে পারছে না শিলচর

এখনও যেন বিশ্বাস হচ্ছে না কালিকা নেই! সকাল সকাল তখনও অনেকেই ব্যস্ত রোজকার কাজকর্মের পালা সারতে। কেউ বা দোকান-বাজারের পথে পা বাড়িয়েছেন। তখনই টেলিভিশনের পর্দায় ভেসে এল খবরটা। কালিকাপ্রসাদ আর নেই। মাত্র সাতচল্লিশেই সব শেষ!

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ১৫:৫৮
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

এখনও যেন বিশ্বাস হচ্ছে না কালিকা নেই! সকাল সকাল তখনও অনেকেই ব্যস্ত রোজকার কাজকর্মের পালা সারতে। কেউ বা দোকান-বাজারের পথে পা বাড়িয়েছেন। তখনই টেলিভিশনের পর্দায় ভেসে এল খবরটা। কালিকাপ্রসাদ আর নেই। মাত্র সাতচল্লিশেই সব শেষ!

শিলচরের সেন্ট্রাল রোডে কালিকাপ্রসাদদের বিশাল বড় পারিবারিক বাড়ি। সেখানেই ভিড় জমাতে শুরু করেছেন একের পর এক মানুষজন। আত্মীয়স্বজন-বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে পাড়ার লোকজনে ভরে উঠেছে দালান। উঠোন ঘিরে গড়ে ওঠা চার দালানের মাঝের সিঁড়িতেই পা ছড়িয়ে বসে পড়লেন অনেকে। কারও মুখে যেন কথা সরছে না। খবরটাই যে বিশ্বাস করতে পারছেন না তাঁরা। কালিকার পিসি আনন্দময়ী ভট্টাচার্য দীর্ঘ দিন শয্যাশায়ী। বিলাপ করতে করতে বলে চলেছেন, “আমাকে কালিকার কাছে নিয়ে চল। আমি কালিকাকে দেখতে চাই।” খবর পাওয়ামাত্রই ছুটে এসেছিলেন দোহারের তবলাবাদক সুদীপ্ত চক্রবর্তীর বাবা সমরবিজয় চক্রবর্তী। কালিকাপ্রসাদের সঙ্গে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ছেলে সুদীপ্তও। এসেছেন কালিকাপ্রসাদের বোন ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্যও। কলকাতায় রওনা দেওয়ার জন্য ১টার বিমানে উঠে পড়েছেন ইন্দ্রাণী ও সমরবিজয়। বিকেলেই শহরে এসে পৌঁছবেন তাঁরা। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে শিল্পীর শেষকৃত্যে যোগ দেবেন দু’জনে।

আরও পড়ুন

গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রয়াত দোহারের কালিকাপ্রসাদ

ওর কাজটা আর শেষ হল না

গভীর বন্ধুতা ছিল কালিকার গলায়

কালিকাপ্রসাদের মৃত্যুতে আগামিকাল শহরে এক শোকমিছিলের আয়োজন করেছেন এলাকার সাংস্কৃতিক সংগঠনের তামাম শিল্পীরা। সকাল ৯টা থেকে নরসিংহতলা ময়দান থেকে সেই শোকমিছিলের যাত্রা শুরু। উদ্যোক্তাদারা জানালেন, সকাল থেকে শহরের দোকানপাট বন্ধ রাখার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছেন তাঁরা।

সকাল গড়িয়ে তখন দুপুর হতে চলল। পাড়ার মানুষজনের মুখে তখনও একটা অবিশ্বাসের ছায়া। রাস্তাতেই চেয়ার পেতে বসে পড়েছেন পড়শিদের অনেকে। তখনও বিশ্বাস হচ্ছে না, তাঁদের প্রসাদ আর নেই!

কালিকাপ্রসাদের মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ পরিজনেরা। দেখুন ভিডিও

ভিডিও সৌজন্যে রাহুল দেব।

সেন্ট্রাল রোডের বাড়ির বাইরেও তখন মানুষের ঢল নেমেছে। শহরের প্রায় সমস্ত সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত মানুষনজন, শিল্পী, সাহিত্যিক, নাট্যকর্মী, বুদ্ধিজীবীরা এসে জড়ো হয়েছেন। ভট্টাচার্য পরিবারের ছেলের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। শিলচরের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা কালিকার উত্থান তাঁদের অনুপ্রাণিত করে। শিলচরের নরসিংহ স্কুলের পাট চুকিয়ে স্থানীয় গুরুচরণ কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন কালিকাপ্রসাদ। পরিচিতদের কাছে শুধুই প্রসাদ। এমনই এক পরিচিতের দেখা মিলল। শহরের এক নাট্যকর্মী শেখর দেবরায়। কোনও রকমে কান্না চেপে তিনি বললেন, “খবরটা পাওয়ার পর থেকে আমরা একেবারে বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়েছি। প্রসাদ সত্যিই আজ আমাদের মধ্যে নেই ভাবতেও পারছি না। স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারি না রকম একটা উজ্জ্বল নক্ষত্র এ ভাবে চলে যাবে।”

আরও পড়ুন

মর্মান্তিক ধাক্কায় ভাষা হারিয়ে ফেলেছে বাংলার সঙ্গীতমহল

এই খবর শুনব বলেই কি বেঁচে আছি?

মৃত্যুর গান, দুঃখের গান— সব ছাপিয়ে এখন কালিকার মুখই ভেসে উঠছে


Kalikaprasad Dohar Folk Singer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy