অবশেষে সিবিআইয়ের হাতেই তদন্তভার। আইএএস ডি কে রবির রহস্যজনক মৃত্যুর তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। গোড়ার আপত্তি কাটিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া আজ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। তদন্তের অন্তর্বর্তী রিপোর্ট পেলে সোমবারই হয়তো তদন্তভার তুলে দেওয়া হবে সিবিআইয়ের হাতে। এবং বিধানসভায় এই ঘোষণা করবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
মনে করা হচ্ছে, ঘরে-বাইরে বাড়তে থাকা বিরোধী চাপের কারণেই সুর নরমে বাধ্য হয়েছে কর্নাটক সরকার। ঘটনাচক্রে আজ সিবিআই তদন্ত চান সনিয়া গাঁধীও। কর্নাটক চাইলে কেন্দ্র সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল পাঠাতে প্রস্তুত বলে গত কালই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আজ সিদ্দারামাইয়ার কাছে সেই প্রস্তাবই রাখেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া।
রহস্যজনক এই মৃত্যুতে প্রথম থেকেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছেন ডি কে রবির পরিবার। সুবিচার না পেলে গণ-অত্মহত্যার হুমকিও দেন তাঁরা। একই দাবিতে সুর চড়ায় বিরোধী বিজেপি ও জনতা দল। অথচ গত কালও সিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দিতে অস্বীকার করেন কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে জে জর্জ। আজ বরং অন্য ছবি প্রশাসনের অন্দরে। রাজ্যের অশান্ত পরিস্থিতির জেরেই আজ বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপাল ভাজুভাইয়ের সঙ্গে দেখা করেন সিদ্দারামাইয়া। পরে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “তদন্তে এত দিন পর্যন্ত যা কিছু উঠে এসেছে, সমস্তটাই জানিয়েছি রাজ্যপালকে।” রাজ্যপালের তরফে অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
সুবিচারের আশায় আপাতত সিবিআইয়ের দিকেই তাকিয়ে রবির পরিবার। নাতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়েই ভেঙে পড়েন রবির ঠাকুমা। পরিবার সূত্রের খবর, আজ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
১৬ মার্চ বেঙ্গালুরুর মাদিভালায় সরকারি বাসভবন থেকে ডি কে রবির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার চার দিন পরেও তদন্তে তেমন কোনও অগ্রগতি নেই বলে অভিযোগ রাজ্যের একটা বড় অংশ থেকে। প্রশাসন অবশ্য প্রথম থেকেই বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে আসছে। এবং এর পিছনে কোনও ব্যক্তিগত কারণ আছে বলেই দাবি তদন্তকারী দলের। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার দিন রবি এক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর এক বান্ধবীকে ৪৪ বার ফোন করেন। তিনিও এক জন আইএএস এবং দক্ষিণ কর্নাটকে কর্মরতা। এক জনকেই কেন এত বার ফোন, খতিয়ে দেখতে চাইছে প্রশাসন।
বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, এই ফোনের সূত্র ধরে অহেতুক জলঘোলা করতে চাইছে কংগ্রেস। মৃত রবি ও মহিলা আইএএস অফিসারের ব্যক্তিগত জীবন কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে। জেডিএস নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারাস্বামী বলেন, “সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি রাজ্যের ছ’ কোটি সাধারণ মানুষও চাইছেন, এই মৃত্যুর তদন্ত হোক। সত্যিটা সামনে আসুক। তবু এর মধ্যে ভিত্তিহীন কিছু বিষয় এনে জটিলতা বাড়াতে চাইছে কংগ্রেসের সরকার।” নিজেদের সুবিধার্থে তদন্তের তথ্য অনৈতিক ভাবে সংবাদমাধ্যমের কাছে ফাঁস করা হচ্ছে বলেও প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy