কেউ ধর্ষণে সাজাপ্রাপ্ত। কেউ ‘সিরিয়াল কিলার’। কেউ আবার আইএস জঙ্গি। বেঙ্গালুরুর সেন্ট্রাল জেলে কুখ্যাত সব অপরাধী বহাল তবিয়তে রয়েছে। তাদের জন্য জেলের ভিতরেই ব্যবস্থা করা হয়েছে টিভি, ফোন— এ রকম নানা বিলাসের ব্যবস্থা। শনিবার জেলের অন্দরের এমন বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে গোটা কর্নাটকে (যদিও সেই সব ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
জেলের ভিতরে সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য এ রকম এলাহি আয়োজনের ঘটনায় এ বার জেল কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর। রাজ্য পুলিশের এডিজি বি দয়ানন্দের কাছে জরুরি ভিত্তিতে এই ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছেন তিনি। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘এই ধরনের অপদার্থতা বরদাস্ত করব না। যথেষ্ট হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা কোনও ভাবেই হওয়া উচিত নয়। বলা হচ্ছে যে, জেলে কর্মীর সংখ্যা কম। কিন্তু যাঁরা আছেন, তাঁরা কী করছেন? এই ধরনের অজুহাত মেনে নেওয়া হবে না।’’ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘যদি বন্দিরা জেলের ভিতরেই টিভি, ফোন— সব রকমের সুযোগ পায়, তা হলে জেল কিসের জন্য? সিসিটিভি, জ্যামার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু খুব সামান্য জায়গাতেই তা লাগানো হয়েছে।’’
গত ৩১ জুলাই এডিজি দয়ানন্দকে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল জেলের দায়িত্বে আনে রাজ্য সরকার। ডিজি (কারা) মালিনী কৃষ্ণমূর্তির জায়গায় দয়ানন্দকে আনা হয়েছে। এই প্রথম নয়, গত ৪ জুলাই বেঙ্গালুরুতে আইপিএল দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিজয়োৎসব ঘিরে যে পদপিষ্টে ১৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল, সেই সময় পুলিশ কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন দয়ানন্দ। তখন তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। পরে আবার তাঁকে সেন্ট্রাল জেলের দায়িত্বে পাঠানো হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ডিজি দয়ানন্দের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ওঁকে বলেছি, এই ধরনের ঘটনা বার বার ঘটছে। যে বা যাঁরা এই ঘটনার জন্য দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে।’’
শনিবার বেঙ্গালুরুর সেন্ট্রাল জেলের কয়েকটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। সেখানে দেখা গিয়েছে, জুহেব হামিদ শাকিল মান্না নামে এক আই জঙ্গি জেলের ভিতরে আয়েশ করে ফোন ঘাঁটছে। আরও একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ঊমেশ রেড্ডি নামে ধর্ষণে সাজাপ্রাপ্ত আসামির কাছে দু’টি ফোন। তারা যে ব্যারাকে রয়েছে, সেখানে আবার টিভিও রয়েছে। ঊমেশ ১৮টি ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত। আরও এক বন্দি তরুণ রাজুকে জেলের ভিতরে রান্না করতে দেখা গিয়েছে। কন্নড় অভিনেত্রী রান্যা রাওয়ের সহযোগী। সোনা পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত হয়ে জেলবন্দি।