সমাজমাধ্যমে ভুয়ো খবরের প্রচার রুখতে এ বার কঠোর পদক্ষেপ করার পথে কর্নাটক। বিধানসভায় এ বিষয়ে একটি বিল পেশ করেছে দক্ষিণী এই রাজ্যের কংগ্রেস সরকার। ভুল তথ্য এবং ভুয়ো খবর (প্রতিরোধ) বিল, ২০২৫ পেশের মাধ্যমে ভুয়ো খবর প্রচারকারী যে কোনও সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীকে কঠিন শাস্তি দিতে বদ্ধপরিকর সরকার।
ওই বিলে বলা হয়েছে, এক্স, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা হোয়টস্যাপের মতো সমাজমাধ্যমের যে কোনও প্ল্যাটফর্মে কেউ ভুয়ো খবর বা ভুল তথ্য ছড়ালে তাঁর সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। তা ছাড়াও ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সেই ব্যক্তিকে জরিমানাও দিতে হতে পারে। কোনও সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ভুয়ো তথ্য বা খবর ছড়ানোর পরে অন্য কেউ সেই খবর বা তথ্য আরও অন্যত্র ছড়ালে শাস্তি হবে তাঁরও। এ ক্ষেত্রে কারাবাসের মেয়াদ ২ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে। আর্থিক জরিমানা কিছুটা কম হবে। ভুয়ো তথ্য ছড়ানোয় অভিযুক্তদের যাতে জামিন-অযোগ্য ধারার মামলা দেওয়া হয়, বিলে সে কথাও বলা হয়েছে।
গোটা বিষয়টিকে নিয়ে কর্নাটক সরকার এতটাই গুরুত্ব দিতে চাইছে যে, এই সমস্ত মামলার শুনানির জন্য বিশেষ আদালত গঠনের কথাও বলা হয়েছে ওই নতুন বিলে। কর্নাটক হাই কোর্টের আওতায় থাকা ওই সব কোর্টের নির্দেশ অমান্য করলে তার শাস্তিও কঠোর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নির্দেশ অমান্যকারীর জরিমানার পরিমাণ হতে পারে ২৫ হাজার থেকে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। এক একটি আদালতের আওতায় একের বেশি জেলা রাখার কথাও বিলে বলা হয়েছে। সমাজমাধ্যমে নজরদারি রাখার জন্য ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাবও এনেছে সরকার। যার কাজ হবে বিভিন্ন সমাজমাধ্যম প্ল্যাটফর্মে নজরদারি রাখা। কোনও অ্যাকাউন্ট থেকে মহিলাদের প্রতি অসম্মানজনক কোনও বার্তা, সনাতন ধর্মের অসম্মান বা কুসংস্কারের প্রচার হলে ওই কমিটির তা নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা থাকবে।
শুধু কোনও ব্যক্তি নয়, যদি কোনও প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার তরফে সমাজমাধ্যমে ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়, সে ক্ষেত্রে সেই সংস্থার শীর্ষ কর্তা বা কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বিলে বলা হয়েছে। ইতিহাস, ধর্ম, দর্শন বা বিজ্ঞান সম্পর্কিত কোনও তথ্য বা খবর সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা হলে, তা যাতে যথাযথ গবেষণার পরে করা হয়, সে কথাও বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)