পিনারাই বিজয়ন। ফাইল চিত্র।
সরকারি ভাষা সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সুপারিশে কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি যদি ইংরেজির বদলে হিন্দিতে পড়ানো শুরু করে, চাকরি ও উচ্চশিক্ষায় বঞ্চিত হবেন অনেকে— প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে এই অভিযোগ করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। অন্য দিকে, আগামী ১৬ অক্টোবর ভোপালে ডাক্তারি পাঠ্যক্রমের হিন্দিতে অনূদিত বইয়ের উদ্বোধন করতে চলেছেন ওই সংসদীয় কমিটির প্রধান তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চহ্বানের দাবি, দেশে এমনটা এই প্রথম। এমবিবিএস প্রথম বর্ষের অ্যানাটমি, বায়োকেমিস্ট্রি ও ফিজিওলজির বইয়ের উদ্বোধন করার কথা শাহের। সরকার হিন্দিতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার বইও তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন চহ্বান।
সম্প্রতি বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছে, হিন্দিকে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের সরকারি ভাষা করা, কেন্দ্রীয় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিন্দিতে পাঠদান, হিন্দিভাষী রাজ্যের হাই কোর্টে হিন্দিতে কাজ এবং সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বাধ্যতামূলক ইংরেজির পেপার তুলে দিয়ে হিন্দি আনার সুপারিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে করেছে সরকারি ভাষা সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি। গত সেপ্টেম্বরে সেই রিপোর্ট গিয়েছে রাষ্ট্রপতির কাছে। সুপারিশ অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, নবোদয় বিদ্যালয়, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি, আইআইএম, এমসে পড়াশোনা হিন্দিতে হওয়ার কথা। নেহাত উপায়ান্তর না থাকলে আপাতত ইংরেজি থাকতে পারে, তবে ক্রমশ সর্বত্র হিন্দি আনার কথা বলা হয়েছে।
সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বিজয়ন বলেছেন, ‘‘সংবিধানে উল্লিখিত সমস্ত জাতীয় ভাষার ব্যবহারে উৎসাহ দিতে হবে। আমাদের উচ্চশিক্ষায় হিন্দিকে শিক্ষার প্রধান ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।’’ সংবিধানের অষ্টম তফসিলে বাংলা, তামিল, হিন্দি-সহ ২২টি ভাষার সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। বিজয়নের প্রস্তাব, কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র হোক অষ্টম তফসিলে নির্দিষ্ট সমস্ত ভাষায়। মঙ্গলবার টুইটেও তাঁর বার্তা, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ ভারতের আদর্শ এবং বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের উপরে আক্রমণ। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রীয় সহযোগিতামূলক কাঠামোরপ্রতি অবমাননা। ঐক্যবদ্ধ ভাবে এর বিরোধিতা করতে হবে।’
ক’দিন আগেই বিবৃতি দিয়ে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তাঁর বার্তা ছিল, দেশকে যেন আর একটা ‘ভাষা যুদ্ধের’ দিকে ঠেলে দেওয়া না-হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy