Advertisement
১১ মে ২০২৪
Kiren Rijiju

বিচার বিভাগ এবং কেন্দ্রের টানাপড়েনে নতুন তির রিজিজুর

সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ শীর্ষ বিচারপতির কলেজিয়ামের মাধ্যমে বিচারপতি নিয়োগের বিরুদ্ধে বেশ কয়েক বার মুখ খুলেছেন রিজিজু। বিরোধীদের দাবি, কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের পছন্দের বিচারপতি নিয়োগ করতে চায়।

কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু।

কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:২৩
Share: Save:

ভারতের সাংবিধানিক ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী বিচার বিভাগ না সংসদ, তা নিয়ে টানাপড়েন নতুন মোড় নিল। আজ এক প্রাক্তন বিচারপতির বক্তব্যকে হাতিয়ার করে ফের বিচার বিভাগকে নিশানা করেছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু।

এ দিন দিল্লি হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আর এস সোধির একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন রিজিজু। তাতে প্রাক্তন বিচারপতি সোধিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘এই প্রথম সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানকে হাইজ্যাক করেছে। তারা বলছে আমরাই বিচারপতি নিয়োগ করব। হাই কোর্টগুলি সুপ্রিম কোর্টের সব বক্তব্য বিনা বাক্যব্যয়ে মানে না। কিন্তু হাই কোর্টের বিচারপতিরা সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে থাকেন ও শীর্ষ আদালতের সব কথা বিনা বাক্যব্যয়ে মানতে থাকেন।’’

প্রাক্তন বিচারপতির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রিজিজুর বক্তব্য, ‘‘এটা এক জন বিচারপতির বক্তব্য। ভারতীয় গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হল তার সাফল্য। দেশবাসী তাঁদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে দেশ শাসন করেন। জনপ্রতিনিধিরাই মানুষের স্বার্থ ও আইনের প্রতিনিধিত্ব করেন। আমাদের বিচারবিভাগ স্বাধীন ও সংবিধান সকলের ঊর্ধ্বে।’’ রিজিজুর বক্তব্য, ‘‘আসলে অধিকাংশ দেশবাসীই এমন বিচক্ষণ (বিচারপতি সোধির মতের অনুরূপ) ভাবনায় বিশ্বাসী। কেবল কিছু মানুষ সংবিধান ও মানুষের রায়ের পরোয়া করেন না। তাঁরা নিজেদের সংবিধানের ঊর্ধ্বে বলে মনে করেন।’’ আইনমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের শীর্ষ স্তরকেই নিশানা করেছেন বলে মত বিরোধীদের।

সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ শীর্ষ বিচারপতির কলেজিয়ামের মাধ্যমে বিচারপতি নিয়োগের বিরুদ্ধে বেশ কয়েক বার মুখ খুলেছেন রিজিজু। বিরোধীদের দাবি, কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের পছন্দের বিচারপতি নিয়োগ করতে চায়। তাই বিচারপতি নিয়োগে আরও ক্ষমতার পক্ষে সওয়াল করছে। মুখ খুলেছেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ও। তিনি আবার ১৯৭৩ সালের কেশবানন্দ ভারতী মামলার রায়ে সংবিধানের কিছু অংশকে ‘মূল কাঠামো’ বলে চিহ্নিত করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি ওই রায়ের সঙ্গে একমত নই। সংবিধানের মূল কাঠামোর কথা বলে সুপ্রিম কোর্ট একাধিক আইন খারিজ করে দিয়েছে। এতে সংসদের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস করা হয়েছে। যে কোনও কাঠামোর মূল হল মানুষের রায়। তাই সংসদ বা বিধানসভার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করা যায় না।’’ সংসদে পাশ হওয়া কোনও সংশোধনীর মাধ্যমে কেশবানন্দ ভারতী মামলায় নির্দেশিত সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিবর্তন করা যায় না। সংবিধানের মূল কাঠামোর কথা উল্লেখ করেই সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি নিয়োগের জন্য মোদী সরকারের আনা বিচারপতি নিয়োগ কমিশন আইন খারিজ করেছিল।

ধনখড়ের বক্তব্যের পরেই প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় আবার সংবিধানের মূল কাঠামোকে ‘উত্তরের তারা’ বলে ধনখড়ের মত খারিজ করেছেন বলে মত আইনজীবীদের।

বিরোধীদের মতে, আজ রিজিজু সংসদের সার্বভৌমত্বের পক্ষে ধনখড়ের বক্তব্যেই কার্যত সিলমোহর দিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kiren Rijiju Judiciary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE