E-Paper

দুই স্থায়ী কমিটির শীর্ষে তৃণমূলের কীর্তি-দোলা, বিরোধ বিজেপির সঙ্গে

কংগ্রেসের চার জন পাচ্ছেন বিভিন্ন মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন শশী তারুর (বিদেশ মন্ত্রক), দিগ্বিজয় সিংহ (শিক্ষা), চরণজিৎ সিংহ চন্নি (কৃষি) সপ্তগিরি উলাকা (গ্রামোন্নয়ন)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০২
বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ কীর্তি আজ়াদ।

বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ কীর্তি আজ়াদ। —ফাইল ছবি।

বিস্তর টালবাহানার পরে বৃহস্পতিবার রাতে ঘোষণা হল নতুন লোকসভার সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পূর্ণ তালিকা। বাণিজ্য মন্ত্রক এবং সার ও মন্ত্রক — এই দুই স্থায়ী কমিটির চেয়ারপার্সনের পদ তৃণমূলের জন্য বরাদ্দ করেছে সরকার। রসায়ন ও সার মন্ত্রকে বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ কীর্তি আজ়াদ এবং বাণিজ্য মন্ত্রকে রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনকে কমিটির চেয়ারপার্সন মনোনীত করা হয়েছে।

এই বিষয়টি নিয়ে গত তিন সপ্তাহ ধরে টানাপড়েন চলেছে। শাসক দল এবং স্পিকারের অফিস থেকে বলা হয়েছিল, লোকসভা এবং রাজ্যসভার আসন মিলিয়ে তৃণমূলের সাংসদ সংখ্যা বেড়েছে, দু’টি পদ তাদের দেওয়া হবে। কিন্তু তৃণমূলের লোকসভা এবং রাজ্যসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েন গতরাত পর্যন্ত দাবি করেছেন, তাঁদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। অথচ সরকারের তরফে আজও বলা হয়েছে, তৃণমূলই তাদের সাংসদদের নাম দিতে দেরি করেছে এবং সে কারণেই বিলম্ব হয়েছে। সরকারপক্ষের অভিযোগ, তাদের নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি (সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়) বিদেশে থাকার জন্য। যদিও তৃণমূলের পাল্টা দাবি, সুদীপ দেশে ফিরেছেন এবং বিদেশ থেকেও যোগাযোগে সমস্যা ছিল না।

তবে আজ জট কেটেছে। সকালে ডেরেকের সঙ্গে কথা হয়েছে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর। তার পর দোলা এবং কীর্তি আজ়াদের নাম তাঁকে পাঠিয়ে দেন ডেরেক। কীর্তি এক সময় বিজেপির সাংসদ ছিলেন। পরে কংগ্রেস ঘুরে ২০২১ সালের নভেম্বরে তৃণমূলে যান। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর থেকে দিলীপ ঘোষের মতো নেতাকে হারিয়ে সংসদে পা রাখেন তিনি। সেই 'জায়ান্ট কিলার' কীর্তির গুরুত্ব সংসদে বাড়াল দল। আর দোলা সেন দলের পুরনো সৈনিক। দীর্ঘ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন।

লোকসভা বা রাজ্যসভায় অন্য প্রবীণ নেতাকে না দিয়ে কেন দোলা এবং কীর্তিকে এই পদ দেওয়া হল, এই প্রশ্ন উঠছে। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের জবাব, এ ক্ষেত্রে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতিকেই অনুসরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি কীর্তি চার বার এবং দোলা তিন বারের সাংসদ। তাঁদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর কথা ভাবা হয়েছে। দোলা বলেছেন, “আমি চেষ্টা করব, যাতে বাংলার পাট এবং চা শিল্পক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার কিছু সুবিধাজনক নীতি তৈরি করে। এই দু’টিই পরিবেশবান্ধব, ঐতিহ্যগত কৃষিশিল্প। পাশাপাশি গোটা দেশেই বহু কারখানা বন্ধ। কেন্দ্র যাতে এগুলির পুনরুজ্জীবনের নীতি তৈরি করে, তা দেখা দরকার। এই কারখানাগুলির অব্যবহৃত জমি কাজে লাগিয়ে আর্থিক দায় মেটানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে নবান্নের পরামর্শ জরুরি।” দোলা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেককে। কীর্তির কথায়, ‘‘আমি জানতামই না এর বিন্দুবিসর্গ। দু’দিন আগেও দিদির সঙ্গে কথা হয়েছে, উনি কিছু বলেনইনি। খুবই খুশি দায়িত্ব পেয়ে। সার ও রসায়নের বিষয়টি কৃষক সমস্যার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। বাংলার জন্য কী ভাবে এই দায়িত্বকে কাজে লাগানো যায়, তা স্থির করতে হবে।”

কংগ্রেসের চার জন পাচ্ছেন বিভিন্ন মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন শশী তারুর (বিদেশ মন্ত্রক), দিগ্বিজয় সিংহ (শিক্ষা), চরণজিৎ সিংহ চন্নি (কৃষি) সপ্তগিরি উলাকা (গ্রামোন্নয়ন)। এসপি-র রামগোপাল যাদব স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান।

বিজেপি হাতে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী কমিটির প্রধানের পদ। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র পেয়েছেন দলের সাংসদ রাধামোহন দাস আগরওয়াল, অর্থ পেয়েছেন বিজেডি থেকে বিজেপিতে যাওয়া ভর্তৃহরি মহতাব, প্রতিরক্ষা পেয়েছেন রাধামোহন সিংহ, কয়লা ও খনি মন্ত্রকে অনুরাগ ঠাকুর, তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ পেয়েছেন নিশিকান্ত দুবে এবং শ্রম মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইকে। ডিএমকে-ও দু’টি স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদ পেয়েছে। তা দেওয়া হয়েছে কানিমোঝি এবং তিরুচি শিবাকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Parliamentary Standing Committee kirti azad Dola Sen TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy