Advertisement
E-Paper

ওঁর স্মিত হাসিই চিরদিনের স্মৃতি হয়ে রয়ে যাবে: আডবাণী

জরুরি অবস্থার সময়ে কংগ্রেস-বিরোধী লড়াই চালিয়েছি। ১৯৮০ সালে অনেকের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে গড়ে তুলেছি বিজেপি।

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৮ ০৪:০৯
অটল বিহারী বাজপেয়ী। ইনসেটে লালকৃষ্ণ আডবাণী। —ফাইল চিত্র।

অটল বিহারী বাজপেয়ী। ইনসেটে লালকৃষ্ণ আডবাণী। —ফাইল চিত্র।

কথা বলতে পারছি না। ৬৫ বছরের পুরনো বন্ধু চলে গেল। তিনি ভারতের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রনেতা ছিলেন। আমার সিনিয়র সহকর্মী, কিন্তু সেই আরএসএসের প্রচারকের সময় থেকে যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, তাতে সিনিয়র-জুনিয়রের বিভেদটি ঘুচে গিয়ে ক্রমশ পরস্পরের গভীর বন্ধু হয়ে উঠেছিলাম। জনসঙ্ঘের সময়ে এক সঙ্গে কালো দিনগুলির মোকাবিলা করেছি। জরুরি অবস্থার সময়ে কংগ্রেস-বিরোধী লড়াই চালিয়েছি। ১৯৮০ সালে অনেকের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে গড়ে তুলেছি বিজেপি।

এমন একটি দিনের কথা মনে পড়ে, সে দিন ভোটে পর্যুদস্ত হয়েছে জনসঙ্ঘ। ফল খুব খারাপ হয়েছিল দলের। আমরা মনের দুঃখে পাহাড়গঞ্জের রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম। খুব মন খারাপ। তখন পাহাড়গঞ্জে একটি সিনেমা হল ছিল। তাতে রাজ কপূরের সিনেমা ‘ফির সুবহ হোগি’ চলছিল। ছবির নাম দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা ঠিক করলাম, আপাতত মনের দুঃখ কাটাতে ওই সিনেমাটা দেখা যাক। বিজেপিরও নিশ্চয় অন্ধকার কেটে সকাল আসবে।

এর পরের ইতিহাস তো আপনাদের জানা। বাজপেয়ী প্রথম অ-কংগ্রেসি জোট সরকারের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন। সেই সরকারটি ছ’বছর স্থায়ী হয়েছিল। বাজপেয়ীর উপপ্রধান হিসেবে তাঁর সঙ্গে ছ’বছর কাজ করেছি। বুঝেছি নেতা হতে গেলে কী কী গুণ থাকা প্রয়োজন। কী অসাধারণ বাগ্মী ছিলেন তিনি। আমি চেষ্টা করেও ওঁর মতো বাগ্মী হতে পারিনি। প্রতিপক্ষের মন জয় করার এক অসাধারণ ক্ষমতা ছিল তাঁর। মতাদর্শগত পার্থক্য থাকলেও সেটিকে তিনি কখনওই বড় করে দেখেননি। বরং সব সময় চেষ্টা করেছেন, যাতে সেই মতপার্থক্য ঘুচিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়। অনেকে জানেন না অটলজির একটি অদ্ভুত গুণ ছিল। আমি যদি কোনও প্রস্তাব দিতাম তা হলে তিনি কোনও দিনই তাতে ‘না’ বলতেন না। আর ‘না’ বলতেন না বলেই আমার উপর চাপ বেড়ে গিয়েছিল। কোনও কিছু বলার আগে বারবার ভাবতাম— এটা আমার বলা ঠিক হচ্ছে তো!

হাসিমুখে: লালকৃষ্ণ আডবাণীর সঙ্গে। —ফাইল চিত্র।

আরও পড়ুন: ভারত রত্নহীন, চলে গেলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী

বাজপেয়ী সকলের নেতা ছিলেন। তাঁকে কখনও দলের কর্মীরা ভয় পেতেন না। দলের শুধু নয়, সরকারের ভিতরে কোনও জটিলতা তৈরি হলে আমায় ডেকে পাঠাতেন এবং সে সবের মীমাংসা করতে বলতেন। প্রত্যেক বছর বাজপেয়ীর জন্মদিনে আমি সকলের আগে ওঁর সঙ্গে দেখা করতে যেতাম। এটা যে কত বছরের অভ্যাস তা ভুলে গিয়েছি। আবার আমার জন্মদিনে উনি আসতেন আমার সঙ্গে দেখা করতে।

আরও পড়ুন: আমরা ছিলাম প্রাতর্ভ্রমণের সঙ্গী: প্রণব মুখোপাধ্যায়

শেষের দিকে বেশ কিছু দিন তিনি অসুস্থতার কারণে বাড়িতেই ছিলেন। কাউকেই বিশেষ চিনতে পারতেন না। কিন্তু আমাকে সব সময়েই চিনতে পারতেন। মুখে থাকত এক টুকরো স্মিত হাসি। ওই হাসিটুকুই আমার শেষ স্মৃতি।

আমি অটলজিকে খুব মিস করছি।

(কী বললেন প্রধানমন্ত্রী, কী বলছে সংসদ- দেশের রাজধানীর খবর, রাজনীতির খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

L K Advani Atal Bihari Vajpayee লালকৃষ্ণ আডবাণী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy