কৌশিক বসু।
সরকারি পরিসংখ্যানে স্বচ্ছতার নিরিখে বিশ্বে যথেষ্ট পোক্ত ছিল ভারতের ভাবমূর্তি। কিন্তু ‘রাজনৈতিক বসদের’ খুশি করার তাগিদে এখন বার বার তা ধাক্কা খাচ্ছে বলে অভিমত অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের মতে, এতে আন্তর্জাতিক আঙিনায় শুধু যে ভারতের তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা কমছে, তা নয়। পরিসংখ্যান ঠিক না হলে, সরকারের পক্ষে অর্থনীতি মেরামতের নীল নকশা তৈরিও অসম্ভব।
বৃহস্পতিবার এক অনলাইন আলোচনায় পরিসংখ্যানে সাম্প্রতিক এই স্বচ্ছতার অভাবের কথা তুলে ধরেছেন বিশ্বব্যাঙ্কের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ। বলেছেন, বিশ্বব্যাঙ্কে ওই পদে থাকাকালীন ভারতের সরকারি তথ্যের গুণমান
ও স্বচ্ছতা নিয়ে যথেষ্ট গর্ব বোধ করতেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে তা প্রশ্নের মুখে।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে ফাঁস হওয়া এক রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল, সরকারি পরিসংখ্যানেই দেশে বেকারত্বের হার সাড়ে চার দশকে সর্বোচ্চ। কিন্তু তার পরে দীর্ঘদিন ওই তথ্য আর প্রকাশিত হয়নি। একেবারে হালেও এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে ২০ শতাংশ ছাড়ানো বৃদ্ধির হার নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সাফল্যের প্রচারে নেমেছে কেন্দ্র এবং বিজেপি। অথচ আগের বছরের একই সময়ে ২৪% সঙ্কুচিত জিডিপির সঙ্গে তুলনার কারণেই যে তাকে চকচকে দেখাচ্ছে, সে বিষয়ে কার্যত নীরব তারা। টিকাকরণের গতি, জিডিপি হিসাবের পদ্ধতি থেকে বেকারত্বের হার— বিভিন্ন সময়ে অসম্পূর্ণ কিংবা অস্বচ্ছ পরিসংখ্যান পেশের অভিযোগ উঠেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে। অনেকের মতে, সেই সমস্ত কথারই ইঙ্গিত এ দিন কেন্দ্রের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টার মন্তব্যে।
সম্প্রতি টিকাকরণে গতিবৃদ্ধি নিয়ে প্রচারে নেমেছে কেন্দ্র ও বিজেপি। জনসংখ্যার সিংহভাগকে অন্তত একটি ডোজ়ের আওতায় আনা গিয়েছে বলে সরকারের দাবি। কিন্তু কৌশিক বলেন, এ ক্ষেত্রে টিকাকরণ কত শতাংশ মানুষের সম্পূর্ণ হয়েছে, সেই অনুপাত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাতে ভারতের আগে ১০৯টি দেশ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সেই সঙ্গে তিনি মনে করিয়েছেন, ২০১৬ সালের পর থেকে প্রত্যেক বছর কমছে বৃদ্ধির হার। ফলে জিডিপি হিসাবের পদ্ধতি ‘সুবিধাজনক’ করেও অর্থনীতির সুস্বাস্থ্য চোখে পড়ছে না বলে ইঙ্গিত তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy