Advertisement
০২ মে ২০২৪
Himachal Pradesh Crisis

কন্যার বিয়ের দিন মোদীর জমানায় সিবিআই হানা বাড়িতে! প্রয়াত বীরভদ্রের স্ত্রী-পুত্র কি বিজেপিতে?

আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন সম্পত্তির মামলায় সিবিআইয়ের ওই ‘সক্রিয়তা’ নিয়ে সে দিন প্রশ্ন তুলেছিল বীরভদ্রের দল কংগ্রেস। মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ উঠেছিল।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:০০
Share: Save:

শিমলার সঙ্কটমোচন মন্দিরে তখন আয়োজন চলছিল ছোট মেয়ে মীনাক্ষীর বিয়ের। তদারকিতে ব্যস্ত ছিলেন বাবা, হিমাচল প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংহ। আচমকাই এল সঙ্কটে পড়ার খবরটা। সিবিআই তল্লাশি চালাচ্ছে বাড়িতে! শুধু শিমলার বাড়িতেই নয়, ২০১৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বীরভদ্রের দিল্লির বাড়ি-সহ আরও একাধিক জায়গায় হানা দিয়েছিল সিবিআই।

আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন সম্পত্তির মামলায় সিবিআইয়ের ওই ‘সক্রিয়তা’ নিয়ে সে দিন প্রশ্ন তুলেছিল বীরভদ্রের দল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার হিমাচল প্রদেশে রাজ্যসভা ভোটে কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে হারিয়ে বিজেপির হর্ষ মহাজনের জয়ের পর প্রয়াত নেতার স্ত্রী প্রতিভা এবং পুত্র বিক্রমাদিত্যের ‘ভূমিকা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রথম জন হিমাচল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা কংগ্রেস সাংসদ। দ্বিতীয় জন কংগ্রেস বিধায়ক তথা সদ্য পদত্যাগী মন্ত্রী। বীরভদ্রের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের দায়ের করা আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন সম্পত্তির সেই মামলায় দু’জনেই অন্যতম সহ-অভিযুক্ত।

মঙ্গলবার রাজ্যসভা নির্বাচনে অবশ্য বিক্রমাদিত্য কংগ্রেস প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছেন। তবে তার আগে প্রতিভা সরাসরি কংগ্রেস বিধায়কদলে ভাঙনের কথা জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘বর্তমান সরকারের কার্যকলাপে কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশের ক্ষোভ রয়েছে। রাজ্যসভা ভোটে তার প্রভাব পড়তে পারে।’’ রাত গড়াতেই স্পষ্ট হয়ে যায়, প্রদেশ কংগ্রেস সভানেত্রী প্রতিভার ‘অনুমান’ নির্ভুল। কংগ্রেসের ছ’জন এবং ‘সরকার সমর্থক’ তিন নির্দল বিধায়কের ‘ক্রস ভোটিং’-এর জেরে জেতে বিজেপি। যার পরিণামে, প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে সুখু সরকারের অস্তিত্ব।

প্রতিভার পুত্র তথা সুখু সরকারের মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য গত মাসে দলীয় অবস্থানের উল্টো রাস্তায় হেঁটে অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তখনই তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল কংগ্রেসের অন্দরে। রবি ঠাকুর এবং রাজেন্দ্র রানা-সহ ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের সঙ্গে তাঁর ‘সম্পর্ক’ও সুবিদিত। বুধবার সুখু মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে বিক্রমাদিত্য বলেছেন, ‘‘আমার প্রয়াত পিতাকে অসম্মান করেছে কংগ্রেস। তিনি হিমাচলে ছ’বার কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু শিমলার তাঁর মূর্তি গড়ার জন্য জমিটুকুও দেয়নি এই সরকার।’’

মুখ্যমন্ত্রী সুখুকে শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের সঙ্গেও তুলনা করেন কংগ্রেস নেতা বিক্রমাদিত্য। তবে মোদী জমানায় বোনের বিয়ের দিন বাড়িতে সিবিআই হানাদারি নিয়ে কোনও কথা বুধবার শোনা যায়নি তাঁর মুখে। প্রয়াত বীরভদ্রের পরিবার পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংহের আত্মীয়। প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা অমরিন্দর বর্তমানে বিজেপিতে। কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির সঙ্গে ‘যোগসূত্র’ গড়ে তুলতে তাঁর ‘ভূমিকা’ রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE