Advertisement
E-Paper

লকডাউনে উটির রাস্তায় হরিণ ঘুরে বেড়াচ্ছে! সত্যি না মিথ্যে?

প্রতি দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে এমন নানা ছবি। তাই একটু নেড়ে ঘেঁটে দেখা, সত্যিটা কী?

ঋত্বিক দাস

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২০ ১৯:৪১
প্রতি দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে এমন নানা ছবি।

প্রতি দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে এমন নানা ছবি।

কী তথ্য ছড়িয়েছে:

ভারতে লকডাউন শুরু হওয়ার পর উটি থেকে কোয়েম্বত্তুরের রাস্তায় নাকি এ ভাবেই সার দিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে এক দল হরিণকে!

কোথায় ছড়িয়েছে:

দিন দুয়েক হল টুইটার, হোয়াটস্অ্যাপ এবং ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে এই ছবি। ছবিটা এতটাই বিশ্বাসযোগ্য যে, পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত লেখিকা মৃণাল পাণ্ডে, আইপিএস অফিসার হরগোবিন্দ সিংহ ঢালিওয়াল নিজেদের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে সেই ছবি শেয়ারও করেন। মৃণাল পাণ্ডে টুইটারে লেখেন, ‘‘উটির রাস্তায় বন্যপ্রাণ নিজেদের হারানো জায়গা খুঁজে পেয়েছে।’’ ১ হাজার ৬৮৪ বার রিটুইটও হয় সেটি।

আইপিএস ঢালিওয়াল টুইটারে লেখেন, ‘‘এ যেন হরিণদের পার্টি টাইম!’’

এই তথ্য কি ঠিক?

না। প্রতি দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে এমন নানা ছবি। তাই একটু নেড়ে ঘেঁটে দেখা, সত্যিটা কী? আর সেটা করতেই দেখা গেল, এ তো ডাহা মিথ্যে! একেবারে ভুল।

সত্য কী এবং আনন্দবাজার সেটা কী ভাবে যাচাই করল:

মৃণাল পাণ্ডে ইতিমধ্যে ওই টুইট মুছে দিয়েছেন। তবে, আইপিএস ঢালিওয়ালের টুইটটা ছিল। প্রথমেই নজর যায় সেই টুইটের একটি কমেন্টে। উইনিং টস নামের এক অ্যাকাউন্ট থেকে সেখানে একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়েছে, তাতেই দেখা যাচ্ছে পূর্ণাঙ্গ ছবিটি। যেখানে হরিণদের ঠিক পিছনে দেখা যাচ্ছে জাপানি ভাষায় লেখা একটি বোর্ড। সেই ছবির শিরোনামে লেখা, ‘জাপান ডিয়ার পার্ক’।

এর পর ভাইরাল হওয়া ছবিটি ফেলা হল গুগ্‌ল-এর ইমেজ সার্চে। সঙ্গে সঙ্গে গুগ্‌ল‌ জানিয়ে দিল এটি জাপানের শহর নারা-র ছবি।

গুগ্‌লে জাপান ডিয়ার সিটি বলে টাইপ করুন, আপনিও দেখতে পাবেন এই ছবি। যা প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৪ সালে জাপান টুডে-র একটি প্রতিবেদনে।

সেই প্রতিবেদন থেকেই জানা যায়, জাপানের হোনশু দ্বীপের নারা পার্কে এক হাজার হরিণের বাস। জাপানের শিন্তো ধর্মাবলম্বী হরিণকে ভগবানের দূত হিসেবে মনে করা হয়। আর তাই ১২শো একরের এই মুক্তাঞ্চলে দিব্যি ঘুরে বেড়ায় হরিণরা। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে আছে এই হরিণদের নিয়ে অসংখ্য ভিডিয়ো।

যাচাই করে নিন ভুয়ো ছবি, গুগ্‌ল ইমেজ সার্চ দিয়ে, দেখুন কী ভাবে

• আপনার ডেস্কটপের ব্রাউজারে https://images.google.com খুলুন।
• সার্চ বারে ক্যামেরা আইকনে ক্লিক করুন
• যে ছবিটি নিয়ে অনুসন্ধান করতে চাইছেন, সেটির URL পেস্ট করুন, অথবা আপনার কম্পিউটারে সেভ করা থাকলে আপলোড করুন।
• সার্চ বাই ইমেজ অপশনে ক্লিক করুন

উটিতেও একটি ডিয়ার পার্ক আছে বটে তবে একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের গত ফেব্রুয়ারি মাসের একটি প্রতিবেদন বলছে, উটির ওই পার্কটিতে হরিণের সংখ্যা কমতে কমতে হয়েছে ১৭ এবং সেগুলির অবস্থাও শোচনীয়। এ ভাবে রাস্তায় ঘুরে বেড়ালে ওই ১৭টিও আর বাঁচবে না।

তবে, উটি আর জাপানের নারা উদ্যানের হরিণের মধ্যেও রয়েছে বিস্তার ফারাক। জাপানের ওই পার্কে যে হরিণগুলি পাওয়া যায়, তা হল সিকা প্রজাতির, বৈজ্ঞানিক নাম সার্ভাস নিপ্পন। এই ধরনের হরিণ পূর্ব এশিয়া, মূলত জাপানেই দেখা যায়। আর উটিতে যে হরিণ আছে, সেগুলি হল সম্বর প্রজাতির, বৈজ্ঞানিক নাম রুসা ইউনিকালার, এগুলি মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেই দেখা যায়।

হোয়াটস‌্অ্যাপে, ফেসবুক, টুইটারে যা-ই দেখবেন, সেটাই বিশ্বাস করবেন না। শেয়ারও করে দেবেন না। বিশেষত করোনা-আতঙ্কের এই আবহে তো নয়ই। এ ভাবেই ছড়িয়ে পড়ে ভুয়ো খবর। যাচাই করুন।

কোনও খবর, তথ্য, ছবি বা ভিডিয়ো নিয়ে মনে সংশয় দেখা দিলে আমাদের জানান এই ঠিকানায় feedback@abpdigital.in

Ooty Coimbatore Fact Check Japan Lockdown Coronavirus তথ্যান্বেষী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy