Advertisement
E-Paper

জোটের জোর বাড়িয়ে এক মঞ্চে রাহুল-কেজরী

লোকসভা ভোটের আগে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত দিল কৃষকদের বিক্ষোভ সমাবেশ। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:২৭
একসঙ্গে: কৃষক সমাবেশে অরবিন্দ কেজরীবাল, সীতারাম ইয়েচুরি, ফারুক আবদুল্লা ও রাহুল গাঁধী। নয়াদিল্লির সংসদ মার্গে। নিজস্ব চিত্র

একসঙ্গে: কৃষক সমাবেশে অরবিন্দ কেজরীবাল, সীতারাম ইয়েচুরি, ফারুক আবদুল্লা ও রাহুল গাঁধী। নয়াদিল্লির সংসদ মার্গে। নিজস্ব চিত্র

লোকসভা ভোটের আগে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত দিল কৃষকদের বিক্ষোভ সমাবেশ।

এই প্রথম এক মঞ্চে এলেন রাহুল গাঁধী ও অরবিন্দ কেজরীবাল। কুশল বিনিময় হল। দু’জনেই একই সুরে নিশানা করলেন নরেন্দ্র মোদীকে।

মোদী সরকারের বিরুদ্ধে চাষিদের ক্ষোভকে সামনে রেখে আজ প্রায় বিরোধী দলের নেতারাই সংসদ মার্গের মঞ্চে এককাট্টা হয়েছেন। কংগ্রেস সভাপতিই বিরোধীদের আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু তা-ই বলে সেই মঞ্চ এড়িয়ে যাননি এক সময়ের ঘোর কংগ্রেস-বিরোধী কেজরীবাল। সভার শেষে বিরোধী নেতারা যখন হাত ধরাধরি করে ছবি তুলছেন, তখন রাহুল ও কেজরীবালের মাঝখানে শুধু সীতারাম ইয়েচুরি ও ফারুক আবদুল্লা।

তবে এ দিনের মঞ্চে অনুপস্থিত থেকেছে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি। ‘বহেনজি’ কোন দিকে যাবেন, তা নিয়ে জল্পনা আছেই। রাজনীতিকরা মনে করছেন, পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল দেখেই ভবিষ্যৎ পন্থা ঠিক করবেন মায়াবতী। ছিলেন না ডিএমকে-র কোনও নেতাও। যদিও সিপিএমের কৃষকসভার নেতা হান্নান মোল্লার দাবি, ‘‘এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ নেই।’’

মায়া, ডিএমকে না থাকলেও মোদী-বিরোধী জোট আরও মজবুত হওয়ার ইঙ্গিতই মিলেছে এ দিন। কৃষিঋণ মুক্তি, চাষের খরচের দেড় গুণ ফসলের দাম ও কৃষকদের সমস্যা নিয়ে সংসদের বিশেষ অধিবেশনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেই মঞ্চে একজোট হয়েছেন শরদ পওয়ার, ফারুক আবদুল্লা, শরদ যাদব, সীতারাম ইয়েচুরি, দীনেশ ত্রিবেদী, সুধাকর রেড্ডিরা। বাদ যাননি অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি, চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম, অজিত সিংহের রাষ্ট্রীয় লোক দলের নেতারাও।

আরও পড়ুন: ‘হোক না মন্দির! কিন্তু মন্দিরে পুজো করতে যাওয়ার জন্য তো পেটে রুটি চাই, সেটা কোথায়?’

এর আগে কর্নাটকে এইচ ডি কুমারস্বামীর শপথগ্রহণের সময় মোদী-বিরোধী সব নেতা একজোট হয়েছিলেন। তখন কেজরীবালও বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন। কিন্তু সনিয়া, রাহুল, মায়া, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অখিলেশদের সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা যায়নি কেজরীবালকে।

এ দিন ঘটেছে ঠিক উল্টো। রাহুল যখন বক্তৃতা করছেন, তখন আসেন কেজরী। রাহুল বলেন, ‘‘এখানে সব বিরোধী দলের নেতারা আছেন। আমাদের বিচারধারা আলাদা হতে পারে। কিন্তু আমরা এখানে সবাই এক। সবাই কৃষকদের সঙ্গে আছি।’’

ঠিক ছিল রাহুলই শেষ বক্তৃতা দেবেন। কিন্তু কেজরী আসায় রাহুলের পরে বক্তৃতা করেন তিনি। চাষিদের সমস্যা নিয়ে নিশানা করেন মোদীকে।

এই সংসদ মার্গ-যন্তর মন্তর চত্বরে অণ্ণা হজারের অনশন মঞ্চ থেকেই কেজরীবালের রাজনীতিতে প্রবেশ। তার পর কংগ্রেসের শীলা দীক্ষিতকে সরিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসেন তিনি। কংগ্রেস সরকারের দুর্নীতিই তাঁর প্রধান অস্ত্র ছিল। কিন্তু সময় পাল্টেছে। কংগ্রেস এবং কেজরীর আম আদমি পার্টি, দু’দলই এখন মোদী সরকারের ঘোর বিরোধী। ফলে আসন্ন লোকসভা ভোটে আপ, কংগ্রেস জোট হবে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। রাহুল জোট চাইলেও দিল্লির কংগ্রেস নেতারা অনেকেই নারাজ। মতানৈক্য রয়েছে কেজরীর দলেও। এই অবস্থায় রাহুল, কেজরীর এক মঞ্চে থাকাটা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

যদিও বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্রের কটাক্ষ, ‘‘দুর্নীতি ও বিভ্রান্তির সঙ্গে এ বার নাটকও যুক্ত হল!’’ আর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিম মন্তব্য, বিরোধী জোটের নেতা হওয়ার জন্য অনেকেই উৎসুক। কিন্তু তাঁদের কারওরই জনভিত্তি নেই।’’

রাহুল এ দিন অভিযোগ করেন, নরেন্দ্র মোদী ১৫ জন শিল্পপতির ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ মকুব করেছেন। কিন্তু চাষিদের ঋণ মাফ করছেন না। কেজরীবালও একই সুরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে চাষিদের ‘পিঠে ছুরি মারা’-র অভিযোগ তুলে বলেন, কেন্দ্র আদানি-অম্বানীদের কথা যেমন ভাবছে, চাষিদের কথাও ভাবুক।

Rahul Gandhi Politics Arvind Kejriwal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy