অধিকাংশ বুথ ফেরত সমীক্ষা ইঙ্গিত দিয়েছে, বিপুল ভোটে জিতে আবার নরেন্দ্র মোদীর সরকারই ক্ষমতায় আসতে চলেছে। এতে আজ সকাল থেকেই শেয়ার সূচক ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু খাস দিল্লির সাট্টা বাজার এখনও বুথ ফেরত সমীক্ষার সঙ্গে একমত নয়। অতীতে অনেক বারই দেখা গিয়েছে, সাট্টা বাজার বিজেপির পক্ষে একটু বাড়িয়ে-চড়িয়ে বলেছে। এ বারে কিন্তু দিল্লি-মুম্বইয়ের সাট্টা বাজারের কারবারিরা বুথ ফেরত সমীক্ষার চেয়ে বেশ খানিকটা কম সংখ্যাই রাখছেন মোদীর ঝুলিতে।
দিল্লির সাট্টা বাজারের কারবারিদের মতে, এনডিএ সরকার আবার ক্ষমতায় আসবে ঠিকই। কিন্তু এনডিএ ৩০০ পার করে ফেলবে এমন সম্ভাবনা কম। কারণ দিল্লির সাট্টা বাজার বিজেপিকে ২৪০টির মতো আসন দিচ্ছে। কংগ্রেসের পক্ষে বাজি খেললে অবশ্য অনেক লাভ। কংগ্রেসকে দিল্লির সাট্টা বাজার গড়পরতা ৮০টি আসন দিচ্ছে।
অধিকাংশ বুথ ফেরত সমীক্ষাই গত কাল ইঙ্গিত দিয়েছে, এনডিএ ৩০০-র বেশি আসন পাবে। যার মধ্যে বিজেপির ভাগ ২৬০ থেকে ২৭০টি। বাকিটা শরিকদের। কিন্তু দিল্লির মতো মুম্বইয়ের সাট্টা বাজারও বিজেপিকে ২৪০টির মতোই আসন দিচ্ছে। মুম্বইয়ের শেয়ার বাজার যতই ঊর্ধ্বমুখী হোক না কেন, দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীর সাট্টা কারবারিরা তুলনামূলক ভাবে অনেক সাবধানী। তাঁদের মতে, কংগ্রেস ৯০ থেকে ১০০টি আসন জিতলে ইউপিএর আসন সংখ্যা ১৫০ ছুঁতে পারে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ব্যতিক্রম অবশ্যই রয়েছে। তা হল, রাজস্থানের জোধপুরের বিখ্যাত ফালোডি-র সাট্টা বাজার। লোকমুখে এমন প্রচার রয়েছে যে, দিল্লি-মুম্বইয়ের রাজনীতিক, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে গোটা দেশে এই সাট্টা বাজারের কারবারিদের জাল ছড়িয়ে রয়েছে। সাট্টার কারবারে আইনের সিলমোহর না-থাকলেও, ফালোডির সাট্টা বাজারের ভবিষ্যৎবাণী সব সময়ই মিলে যায়। অনেক কারবারিদের দাবি, আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ও মিলিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা।
সেই ফালোডির সাট্টা বাজার এ বার বলছে, বিজেপি ২৭০ থেকে ২৮০টি আসন জিতবে। তার সঙ্গে শরিকদের মিলিয়ে এনডিএ ৩০৫টি আসন পাবে। কংগ্রেস পাবে ৮০টি আসন। বুকিদের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি ও রাষ্ট্রীয় লোকদলের জোট হওয়ায় বিজেপি এই রাজ্যে ২০ থেকে ৩০টি আসন হারাতে পারে। তবে সেই ক্ষতি তারা পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা থেকে পূরণ করে নেবে। ফালোডির সাট্টা কারবারিদের ধারণা, পশ্চিমবঙ্গে ১৮ থেকে ২০ এবং ওড়িশায় ১০টি আসন পেতে পারে। সে ক্ষেত্রে শুধু এই দু’টি রাজ্য থেকেই ২৭-২৯টি আসন বাড়তে পারে বিজেপির। মহারাষ্ট্র, কর্নাটকও বিজেপিকে বাড়তি আসন দেবে বলে বুকিদের ধারণা।
গত সপ্তাহে মোদী দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে বলেছিলেন, ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে যারা সাট্টা বাজারে বিজেপি ২০৬ থেকে ২১০টি আসন ও কংগ্রেস ১৫০টি আসন পাবে বলে বাজি ধরেছিলেন, তাঁদের বিপুল ক্ষতি হয়েছিল। লক্ষ্যণীয় বিষয়, বুথ ফেরত সমীক্ষার দৌলতে শেয়ার বাজারের লগ্নিকারীরা যেমন আজ লাভের অঙ্ক ঘরে তুলেছেন, তেমনই রাজস্থানের ফালোডিতে যারা এনডিএ ৩০০-র বেশি আসন পাবে বলে বাজি ধরেছিলেন, তাঁরাও বিপুল অঙ্কের টাকা ঘরে তুলেছেন।
কত টাকা খাটে দেশের বেআইনি সাট্টা বাজারগুলিতে? কারবারিদের দাবি, নোট বাতিলের পর থেকেই সাট্টার বাজারে তুলনামূলক ভাবে কম টাকা খাটছে। আইনি সিলমোহর না-থাকায় সাট্টার কারবারে কত টাকা খাটছে, খাতায়-কলমে তার কোনও হিসেব নেই। কারবারিদের অনুমান, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে সাট্টায় অন্তত ১ লক্ষ কোটি টাকা খাটছে।
বিরোধী শিবিরের নেতারা অবশ্য বুথ ফেরত সমীক্ষার মতো সাট্টা বাজার নিয়েও সাবধানবাণী শুনিয়ে রাখছেন। তাঁদের যুক্তি, সাট্টা বাজার বরাবরই বিজেপির পক্ষে বেশি আসন অনুমান করে। তারাই যদি বিজেপিকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না-দিয়ে ২৪০টি বা তার কম আসন দেয়, তা হলে বাস্তবে বিজেপির আসন আরও কম হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy