তাঁর নিজের আসন নওয়াদা থেকে সরিয়ে বেগুসরাইয়ে প্রার্থী করায় গতকালই দলের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ। শেষ পর্যন্ত আরএসএসের হস্তক্ষেপে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই ক্ষোভ সরিয়ে রেখে গিরিরাজ বললেন, ‘‘বেগুসরাই থেকে নির্বাচনে লড়া সম্মানের বিষয়। এটা আমার জন্মভূমি এবং কর্মভূমি।’’ তবে তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই। তাঁর সঙ্গে কথা না বলে রাজ্য নেতৃত্ব আসন বদল করায় তাঁর দুঃখ হয়েছে।
২০১৪ সালে বিহারের নওয়াদা কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন গিরিরাজ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়েছিল তাঁর। গতবার বিজেপির জোটে ছিল না নীতীশ কুমারের জেডিইউ। এ বার এনডিএতে জেডিইউ শামিল হওয়ায় বিহারে পাঁচটি জেতা আসন ছাড়তে হয়েছে বিজেপিকে। একটি আসন বদল করা হয়েছে। ফলে গিরিরাজের আসন বদলে দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব। তিনি এ দিন জানিয়েছেন, ১৯৯৬ সালে বেগুসরাই থেকে নির্বাচনে লড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি।
তাঁর কথায়, ‘‘২০১৪ সালেও বেগুসরাইয়ে লড়তে চেয়েছিলাম। তখনও তা মানা হয়নি।’’
বিজেপির রাজ্য রাজনীতিতে প্রধানত দু’টি গোষ্ঠী। একটি উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদীর এবং অন্যটি প্রদেশ সভাপতি নিত্যানন্দ রায়ের। সরকারে থাকা মন্ত্রীরা সকলেই প্রায় সুশীল মোদীর দিকে। রাজ্য সংগঠন নিত্যানন্দ রায়ের সঙ্গে রয়েছে। গিরিরাজ সিংহ প্রকাশ্যেই দু’জনের বিরুদ্ধে। নিজেকে নরেন্দ্র মোদীর সমর্থক এবং শিবভক্ত বলে প্রচার করে থাকেন। রাজ্য মন্ত্রিসভায় থাকার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক ছিল না। গিরিরাজ সমর্থকদের দাবি, নীতীশই কলকাঠি নেড়ে নওয়াদা থেকে সরিয়েছেন তাঁকে।
গিরিরাজের ‘অভিমান’ নিয়ে শুরু থেকেই আক্রমণে নেমেছেন বেগুসরাইয়ে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী, সিপিআই প্রার্থী কানহাইয়া কুমার। তিনি বলেন, ‘‘টিভিতে দেখলাম কথায় কথায় বিজেপি-বিরোধী যে কোনও মানুষকে পাকিস্তানে পাঠান যিনি, সেই বিজেপি মন্ত্রী বেগুসরাই থেকে নির্বাচনে লড়তে চাইছেন না। তিনি বরং বলুন, ভনক্কম (বিদায়) বেগুসরাই!’’ উল্লেখ্য, দলীয় কর্মীদের অস্বস্তিকর প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে পুদুচেরিতে ‘ভনক্কম’ বলে চলে গিয়েছিলেন মোদী। এরপরেই ব্যঙ্গার্থে ‘ভনক্কম’ শব্দটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। কানহাইয়াও আজ তাঁর কটাক্ষে মোদী-ভক্ত গিরিরাজকে সেই শব্দটিই জুগিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার এক ভাইপো আছে। সে হোমওয়ার্ক না হওয়ায় স্কুলে যেতে চায় না। কিন্তু সে তার শিক্ষককে পাকিস্তানেও পাঠাতে চায় না। কাউকে ঘৃণাও করে না।’’ কু-কথা বলার
জন্য খ্যাত গিরিরাজও ছাড়েননি।
তিনি বলেন, ‘‘পাপড় ভাঙা পালোয়ানকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই!’’