Advertisement
১৭ জুন ২০২৪

নির্বাচনের ফলের মুখে শরিক প্রেম মোদী-শাহের!

বিরোধী শিবির আরও সংগঠিত হচ্ছে। তাদের শরিক সংখ্যাও বাড়ছে। সেই সময় ভোটের ফল প্রকাশের আগেই এনডিএর শরিকদের আজ দিল্লিতে এনে ঐক্যের ছবি মেলে ধরতে চেয়েছিলেন মোদী-শাহ।

সংবর্ধনা: নয়াদিল্লিতে দলীয় কার্যালয়ে নরেন্দ্র মোদীকে সম্মান জানাচ্ছেন অমিত শাহ, নিতিন গডকড়ী ও রাজনাথ সিংহ। ছবি: রয়টার্স

সংবর্ধনা: নয়াদিল্লিতে দলীয় কার্যালয়ে নরেন্দ্র মোদীকে সম্মান জানাচ্ছেন অমিত শাহ, নিতিন গডকড়ী ও রাজনাথ সিংহ। ছবি: রয়টার্স

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৯ ০৩:০০
Share: Save:

বুথফেরত সমীক্ষার ফলকেই চূড়ান্ত ফল ধরে নিয়ে আজ নরেন্দ্র মোদীর বন্দনায় মেতে উঠল এনডিএ। পাঁচ বছর ধরে মোদী-অমিত শাহরা লাগাতার উপেক্ষা দেখালেও এখন তাঁদের কাছ থেকেই বিপুল সমাদর জুটছে অবহেলিত শরিকদের। আর তাতেই তাঁদের কী আনন্দ! কিন্তু তবু শরিকদের নিয়ে কাঁটা থেকেই যাচ্ছে গেরুয়া-শিবিরের অন্দরে। আর সেটাই চিন্তা বাড়াচ্ছে মোদী-শাহদের।

বুথফেরত সমীক্ষায় বিজেপির কপালে জুটেছে ভূরি ভূরি আসন। সামনের রবিবার রেডিয়োয় ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান করার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন মোদী। এমনকি রবিবারের মধ্যে শপথ গ্রহণের জন্যও না কি তিনি প্রস্তুত। তবু ফলপ্রকাশের আগে নিজের শরিকদের সকলকে দিল্লিতে আনতে আজ কালঘাম ছুটে গেল মোদী-শাহের।

বিরোধী শিবির আরও সংগঠিত হচ্ছে। তাদের শরিক সংখ্যাও বাড়ছে। সেই সময় ভোটের ফল প্রকাশের আগেই এনডিএর শরিকদের আজ দিল্লিতে এনে ঐক্যের ছবি মেলে ধরতে চেয়েছিলেন মোদী-শাহ। তার জন্য শীর্ষ শরিক নেতাদের দিল্লি আসার আমন্ত্রণও জানান অমিত। কিন্তু নীতীশ কুমার প্রথমেই বেঁকে বসেন। উদ্ধব ঠাকরেও। উদ্ধবের শিবসেনা তো আবার নিজেদের মুখপত্রে রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার প্রশস্তিও করেছে। আর নীতীশ পরে দিল্লি এলেও আসার আগে জানিয়ে দেন, ৩৭০ ধারা বিলোপ, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর মতো বিজেপির প্রস্তাবের তিনি বরাবরেরই বিরোধী। এনডিএর বাইরে কোনও শরিককেও হাজির করাতে পারেনি বিজেপি।

বিকালে দিল্লিতে দলের সদর দফতরে বিদায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন মোদী-শাহ। শাহ বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে তাঁদের কঠিন পরিশ্রম ও দাগ কাটা সাফল্যের জন্য টিম-মোদী সরকারকে অভিনন্দন জানাই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এই গতিকে ধরে রেখেই নতুন ভারত গড়তে হবে।’’ প্রধানমন্ত্রীও বলেন, ‘‘এ বারের ভোট প্রচার একেবারে অন্য রকম ছিল। মনে হয়েছে তীর্থযাত্রা করছি। ভোট লড়েছেন জনতা। কাউকে জেতানো বা হারানোর জন্য এ বারের ভোট ছিল না। ছিল একটি নবজাগরণের।’’

এই বৈঠকেও শরিক দলের মন্ত্রীদের ডাকা হয়। তার পর দিল্লির এক পাঁচতারা হোটেলে ৩৬টি শরিক দলের নেতা আসেন। তিনটি ছোট দলের কোনও প্রতিনিধি আসতে পারেননি। বড় শরিক দলের অনেক নেতাই প্রথমে এই বৈঠকে যোগ দিতে চাননি। শিবসেনার মুখপত্রে আজ সকালে প্রকাশিত হয়, মোদী সরকার আবার ফিরবে, কিন্তু কঠোর পরিশ্রম করেছেন রাহুল গাঁধী-প্রিয়ঙ্কা। কংগ্রেস এ বারে বিরোধী দলের মর্যাদা পাবে। আর তার পরেই দলের নেতা সঞ্জয় রাউত জানিয়ে দেন, ‘‘ভোট ফলের আগে এই বৈঠকের প্রাসঙ্গিকতা কতটা, তা না বুঝে উদ্ধব ঠাকরে যাবেন না। দলের পক্ষ থেকে অনিল দেশাই যাবেন।’’ অকালি দলের নেতা প্রকাশ সিংহ বাদল অবশ্য আগেই সপরিবার আসার কথা জানিয়ে দেন।

বেঁকে বসা নেতাদের মান ভাঙানোর জন্য আবার ফোনে অনুরোধ করা হয়। নৈশভোজের আসরে শরিক নেতারা ফুল দিয়ে মোদীকে আগাম অভিনন্দনও জানান। কিন্তু যে বড় মালা মোদীকে পরানো হয়, তা অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ, রামবিলাস পাসোয়ান ধরলেও এগিয়ে এলেন না নীতীশ, উদ্ধবের মতো নেতা। বিদেশে থাকার জন্য সুষমা স্বরাজ আজ থাকতে পারেননি, আর অসুস্থতার কারণে অরুণ জেটলি। বৈঠকে আজ একটি প্রস্তাব পাশ করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE