প্রধানমন্ত্রীকে ‘ক্লিনচিট’ দিল নির্বাচন কমিশন। কমিশন আজ জানিয়ে দিল, নির্বাচন ঘোষণার পরেও ‘মিশন-শক্তি’-র ঘোষণায় জাতির উদ্দেশ্যে বক্তৃতা করে নরেন্দ্র মোদী নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করেনি।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, শুক্রবার সকালে এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই দাবি করেছিলেন, তিনি কোনও ভুল করেননি। তাঁর যুক্তি ছিল, ‘‘ভোট ঘোষণার পরেও অনেক সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে। ভোট-বিধি বলে কী সরকার হাত গুটিয়ে বসে থাকবে? এখনও অনেক রাজ্যে বাজেট হচ্ছে, বক্তৃতা হচ্ছে। অতীতে ২৬ জানুয়ারি, ১৫ অগস্টও ভোটের সময় পালন হয়েছে। সরকারের নেতারা বক্তৃতাও দিয়েছিলেন।’’
নির্বাচন কমিশনও আজ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী দূরদর্শন বা অল ইন্ডিয়া রেডিও-র মতো সরকারি প্রচারমাধ্যমকে ব্যবহার করেননি। একটি বেসরকারি সংবাদ সংস্থা তাঁর বক্তৃতা সম্প্রচার করেছিল। দূরদর্শনের ডিডি নিউজ-এ তা-ই দেখানো হয়। রেডিও-তেও সেই শব্দই ব্যবহার করা হয়। আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। আজ ইয়েচুরিকে কমিশনের তরফে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিধিভঙ্গ হয়নি। কমিশন এ জন্য অফিসারদের একটি কমিটি তৈরি করেছিল। সেই কমিটিই এই মত দিয়েছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিরোধীদের প্রশ্ন ছিল, কেন ঠিক ভোটের সময়ই মহাকাশে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হল? তা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সাক্ষাৎকারে নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘এ ধরনের উদ্যোগে বিভিন্ন দেশকে আগাম জানাতে হয়। মহাকাশে জায়গা চাই। অন্য কিছু সেই সময় যাতে না থাকে। খোলা জায়গা দরকার। দুনিয়ার হিসেবে যে সময় নির্ধারিত হয়। আমাদের সময় যখন এসেছে, তখনই করতে হয়। ভেবেচিন্তে করার বিষয় নয়।’’ মোদীর রসিকতা, ‘‘রাতে ঘুমোনোর সময় পুলিশের বাড়িতে চোর ঢুকল। তাঁর স্ত্রী দেখতে পেয়ে স্বামীকে উঠিয়ে দিলেন। কিন্তু পুলিশ যদি বলেন— এখন ডিউটি নেই, তা হলে কি চলে?’’
মিশন-শক্তির ঘোষণার দিনই বিজ্ঞানীদের সাধুবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নাট্য দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। মোদী আজ নাম না করে কটাক্ষ করেন, ‘‘দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। তাঁদের অনেক বড় নেতা রয়েছেন। তাঁদের থেকে অন্তত জেনে নিতে পারতেন তিনি, বিষয়টি আসলে কী? প্রাথমিক জ্ঞানের অভাব তাঁর বক্তব্যেই ধরা পড়ছে।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা অখিলেশ যাদবদের এই অভিযোগের ভিত্তিতেও প্রধানমন্ত্রীর জবাব, ‘‘এই নেতাদের হাতে দেশ যে নিরাপদ থাকতে পারে না, দেশের মানুষের নিশ্চিত করা উচিত।’’