আলোচনা: সনিয়ার সঙ্গে রাহুল। মঙ্গলবার অামদাবাদের গাঁধী আশ্রমে। পিটিআই
ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে নয়, ভোটে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে চারটি অস্ত্র নিয়ে প্রচার যুদ্ধে ঝাঁপাবেন বিরোধীরা। এক, কৃষিক্ষেত্রে সঙ্কট। দুই, চাকরির অভাব। তিন, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির রাজনৈতিক অপব্যবহার। এবং চার, মোদী সরকারের দুর্নীতি। আপাতত স্থির হয়েছে, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রশ্নে কোনও ধর্মীয় বিষয়কে সামনে রেখে প্রচার করা হবে না।
মাসখানেক আগে নয়াদিল্লিতে এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের বাড়িতে বৈঠক করে জাতীয় স্তরে একটি ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচি স্থির করেই ভোটে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতারা। কী হল তার?
সূত্রের খবর, খারিজ হয়ে গিয়েছে সেই পরিকল্পনা। কারণ, পরিকল্পনাটি শুনতে ভাল হলেও বাস্তবের জমিতে তার প্রয়োগ অসম্ভব। অনেক রাজ্যেই বিরোধী দলগুলি পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়ছে। পুলওয়ামা হামলার পর বিরোধীরা গত মাসে সংসদের লাইব্রেরি ভবনে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানেই অভিন্ন কর্মসূচির ভাবনাটি খারিজ করার প্রশ্নে একমত হন রাহুল গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রবাবু নায়ডু, শরদ পওয়ার, কেজরীবালের মতো নেতারা। কারণ, দিল্লি, কেরল পশ্চিমবঙ্গের মতো বেশ কিছু রাজ্যে বিরোধী দলগুলি পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়ছে। অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে সিপিএম-কংগ্রেস প্রচারে নামলে কেরলে তা অবাস্তব পরিস্থিতি তৈরি করবে। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস-সিপিএমের সঙ্গে তৃণমূলের লড়াই, দিল্লিতে আপ বনাম কংগ্রেস, উত্তরপ্রদেশে এসপি-বিএসপি জোট ও কংগ্রেসের সমান্তরাল প্রচারযুদ্ধে সঙ্কট তৈরি হবে।
বিরোধী শিবিরের লোকজন মনে করছেন, পওয়ার-মমতারা প্রথম যখন অভিন্ন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছিলেন, তখন এই বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়নি। তবে লিখিত ভাবে ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচি না হলেও মোদী সরকারের বিদায় নিশ্চিত করতে বিরোধী নেতারা চারটি প্রধান বিষয়কে চিহ্নিত করেন সংসদীয় লাইব্রেরিতে সাম্প্রতিক ওই বৈঠকে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তৃণমূলের এক শীর্ষ স্তরের নেতার কথায়, ‘‘যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী তারা বিজেপির বিরুদ্ধে ওই চারটি বিষয়কে সামনে রেখে প্রচারে ঝাঁপাবে। ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচি হোক বা না-হোক বিরোধী নেতারা গত দু’মাসে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় রেখেই একের পর এক যৌথ পদক্ষেপ করেছেন। এই মুহূর্তেও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগে রয়েছি।’’ এই সূত্রে ওই তৃণমূল নেতা মনে করিয়ে দেন, এই বিরোধী জোটের সলতে পাকানোর কাজটি হয়েছিল ব্রিগেডে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা ১৯ জানুয়ারির সমাবেশে। এর পর সংসদে বিরোধীদের মধ্যে সমন্বয়, অন্ধ্রভবনে চন্দ্রবাবু নায়ডুর অনশন সমাবেশ, কেজরীবালের ডাকে দিল্লির যন্তরমন্তরে বিরোধী কর্মসূচি, শরদ পওয়ারের বাড়িতে বিরোধীদের বৈঠক, ইভিএম-কারচুপি নিয়ে সমস্ত বিরোধী দলের সই করা ওকালতনামা শীর্ষ আদালতে জমা দেওয়ার মতো পদক্ষেপগুলি ধারাবাহিক ভাবে বিরোধী ঐক্যকেই তুলে ধরেছে। এ বার মোদীর বিরুদ্ধে সকলেরই অস্ত্র অভিন্ন চার বিষয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy