Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বারাণসীতে কেন নন প্রিয়ঙ্কা? নানা যুক্তি দলে

কংগ্রেসের প্রবাসী বিভাগের প্রধান স্যাম পিত্রোদা আজ ছিলেন জয়পুরে। সেখানে তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, কংগ্রেস সভাপতি এই সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কার উপরে।

প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। —ফাইল চিত্র।

প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৯ ০২:২৭
Share: Save:

বারাণসীতে গত কাল নরেন্দ্র মোদী পা রাখার আগেই কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছিল, সেই কেন্দ্র থেকে লড়বেন না প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। দলের একটি অংশ কিন্তু এখনও মনে করে, প্রিয়ঙ্কা যদি মোদীকে সরাসরি টক্কর দেন, তা হলে শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, গোটা দেশেই কংগ্রেসের পক্ষে সদর্থক হাওয়া তৈরি হবে। গত কয়েক সপ্তাহে খোদ প্রিয়ঙ্কাই বারাণসী থেকে লড়ার জল্পনা উস্কে দিয়েছেন। কংগ্রেসের অন্য নেতারাও সম্ভাবনা জিইয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু প্রিয়ঙ্কাকে বারাণসী থেকে না-লড়ানোর সিদ্ধান্ত কার? রাহুল গাঁধীর না প্রিয়ঙ্কার নিজের?

আজ এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই দলের মধ্যে অসমাঞ্জস্য বেরিয়ে এল।

কংগ্রেসের প্রবাসী বিভাগের প্রধান স্যাম পিত্রোদা আজ ছিলেন জয়পুরে। সেখানে তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, কংগ্রেস সভাপতি এই সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কার উপরে। তার পর প্রিয়ঙ্কা নিজেই ভেবেছেন, তাঁর কাঁধে এত দায়িত্ব। কোনও একটি কেন্দ্রে জোর দেওয়ার বদলে এখন সেই দায়িত্বকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ফলে সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত প্রিয়ঙ্কাই নিয়েছেন।

স্যাম যখন বারাণসীতে না-লড়ার সিদ্ধান্ত প্রিয়ঙ্কার বলে দাবি করছেন, সেই সময়েই দিল্লিতে এআইসিসি দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন কংগ্রেস নেতা রাজীব শুক্ল। স্বাভাবিক ভাবে তাঁকেও এই প্রশ্ন করা হয়। প্রিয়ঙ্কার টিমেও কাজ করেন রাজীব। কংগ্রেসের এই নেতা বলেন, সিদ্ধান্ত কংগ্রেস সভাপতিরই। প্রিয়ঙ্কা তো বারাণসী থেকে লড়তে তৈরিই ছিলেন। গোড়া থেকে সে-কথা তিনি বলে আসছেন। কিন্তু কংগ্রেস সভাপতি মনে করেছেন, বারাণসীতে অজয় রাই পাঁচ বছর ভাল কাজ করেছেন। তাই তাঁকেই প্রার্থী করা হোক।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কংগ্রেসের অনেক নেতা আবার যুক্তি দিচ্ছেন, আসলে মায়াবতীর জন্যই প্রিয়ঙ্কা প্রার্থী হতে পারলেন না। কংগ্রেস চেয়েছিল, বারাণসী থেকে বিরোধী জোটের প্রার্থী হোন প্রিয়ঙ্কা। অখিলেশ যাদব রাজি থাকলেও মায়াবতী তাতে সম্মত ছিলেন না। ‘বহেনজি’ মনে করেন, প্রিয়ঙ্কা বারাণসী থেকে লড়লে পূর্ব উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের পক্ষে হাওয়া তৈরি হবে। তাতে ক্ষতি হবে এসপি-বিএসপি জোটের। কিন্তু এই যুক্তিও তেমন ধোপে টিকছে না। বারাণসীতে এমনিতেই কম ওজনদার প্রার্থী দিয়েছে সমাজবাদী পার্টি। এ দিকে রাহুলও উত্তরপ্রদেশে নিজের দলকে শক্ত করতে আক্রমণাত্মক। সে ক্ষেত্রে মায়াবতীর আপত্তির তিনি পরোয়া করবেন, এমন মনে করাও শক্ত।

কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা দু’দিন আগে জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রিয়ঙ্কা লড়তে চাইলেও রাহুল রাজি নন। গাঁধী পরিবারের কেউ ভোটে লড়ে পরাজয় দিয়ে শুরু করবেন, তেমন চান না সনিয়া গাঁধীও। কিন্তু গত কালের ঘোষণার পরে যে ভাবে বিজেপি পাল্টা হামলা শুরু করেছে, তাতে অস্বস্তিতে পড়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রধানমন্ত্রী অবশ্য আজ এক সাক্ষাৎকারে প্রিয়ঙ্কার না-লড়ার বিষয়টি লঘু করে এড়িয়ে যান। শুধু বলেন, তাঁর কোনও বিরোধী নেই। সকালে অবশ্য খোঁচা দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এখন সংবাদমাধ্যমের আগ্রহ কমে গিয়েছে বারাণসীতে। তাদের টিআরপি শেষ হয়ে গিয়েছে।’’

খোদ অরুণ জেটলির মতো মন্ত্রী বলছেন, “ভাই অমেঠী ছেড়ে পালিয়েছেন। আর বোনও এ বার বারাণসী থেকে পালালেন। আমি তো ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছিলাম, এক বার নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে প্রিয়ঙ্কার লড়াই হয়েই যাক। এক দিকে পরিবার, অন্য দিকে কাজের মানুষের ফারাকটা সামনে আসুক।”

বিজেপির এই হামলার জবাব দিতেই এখন খেই হারাচ্ছেন কংগ্রেস নেতারা। ক্ষত নিরাময়ে এক-এক জন এক-এক যুক্তি নিয়ে আসছেন নিজের মতো করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Politics Lok Sabha Election 2019 Priyanka Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE