Advertisement
E-Paper

কমিশনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরেরই নাম নেই ভোটার তালিকায়! ভোট দিতে পারবেন না রাহুল দ্রাবিড়

দ্রাবিড়ের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য ৭ নম্বর ফর্ম জমা দিয়েছিলেন তাঁর ভাই ভাই বিজয় দ্রাবিড়। কিন্তু নতুন করে আর নাম তোলার জন্য ৬ নম্বর ফর্ম জমা দেননি প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৯ ২১:১৫
প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড়। —ফাইল চিত্র

প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড়। —ফাইল চিত্র

কর্নাটকের অলিতে গলিতে এখন রাহুল দ্রাবিড়ের পোস্টার। ক্রিকেটের কৃতিত্বে নয়, নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে। ভোটারদের আরও বেশি করে বুথমুখী করতে তাদের প্রচারের মুখ প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক। তিনিই কমিশনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। তাঁর ছবি, ভিডিয়ো ব্যবহার করেই বুথে গিয়ে ভোট দেওয়ার জন্য আর্জি জানাচ্ছে কমিশন। অথচ, সেই দ্রাবিড়ই নিজে ভোট দিতে পারবেন না!

আজব মনে হলেও এটাই সত্যি। কারণ ভোটার তালিকা থেকে কাটা পড়েছে ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’-এর নাম। পরে আর তালিকায় নামও ওঠেনি। কমিশন দায় ঠেলেছে দ্রাবিড়ের ঘাড়েই। তাদের বক্তব্য, নতুন করে নাম লেখানোর জন্য অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট দলের কোচ দ্রাবিড়ের বাড়িতেও একাধিক বার গিয়েছেন দফতরের কর্মীরা। কিন্তু তার পরও বিফল হয়েছেন নাম তুলতে।

কেন? কমিশন সূত্রে খবর, রাহুল দ্রাবিড় আগে থাকতেন বেঙ্গালুরুর ইন্দিরানগরে, পৈত্রিক বাড়িতে। সেটা ব্যাঙ্গালোর সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। কিন্তু সেখান থেকে বর্তমানে তিনি মালেশ্বরম এলাকায় নতুন বাড়িতে পাকাপাকি চলে গিয়েছেন। এই স্থানান্তরের কিছু দিন পরে তাঁর নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য সাত নম্বর ফর্ম জমা দিয়েছিলেন তাঁর ভাই ভাই বিজয় দ্রাবিড়। কমিশনও খতিয়ে দেখে ‘মিস্টার ওয়াল’-এর নাম কেটে দেয় ভোটার তালিকা থেকে।

আরও পড়ুন: মোদীর কপ্টারে ‘রহস্যজনক’ কালো ট্রাঙ্ক, নির্বাচন কমিশনে তদন্তের আর্জি কংগ্রেসের

কিন্তু বিপত্তি বাধে দ্রাবিড়কে কমিশন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করার পর। সব সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ার পর দেখা যায়, দ্রাবিড়ের নামই নেই ভোটার তালিকায়। তার পরই ঘুম উড়ে যায় কমিশনের কর্মী-অফিসারদের। দ্রাবিড়ের নতুন ঠিকানা ব্যাঙ্গালোর নর্থ কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত। মাথিকেড়ে মহকুমার মধ্যে পড়ে। সেখানকার মহকুমা শাসক তথা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তাঁরা দ্রাবিড়ের নাম তোলার জন্য তাঁর নতুন ঠিকানায় অন্তত দু’বার গিয়েছেন। কিন্তু কমিশনের কর্মীদের বাড়িতে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। তাঁদের বলা হয়, দ্রাবিড় বিদেশে রয়েছেন এবং ভোটার তালিকায় নাম তোলা সম্পর্কিত কোনও তথ্য তাঁদের কাছে নেই। বাধ্য হয়ে ফিরে এসেছেন কমিশনের কর্মীরা।

নির্বাচন আইন অনুযায়ী নিয়ম অনুযায়ী কেউ ৭ নম্বর ফর্ম জমা দিয়ে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিলে, নতুন করে নাম তোলার জন্য ৬ নম্বর ফর্ম জমা দিতে হয়। এবং সেটাও জমা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট ভোটারকেই। সেই অনুযায়ী নথিপত্র যাচাই করে ফের ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেন কমিশন কর্মীরা। কিন্তু দ্রাবিড়ের ক্ষেত্রে সেই ৬ নম্বর ফর্ম জমা পড়েনি। তাই কমিশনও নিরুপায়।

আরও পড়ুন: স্মৃতির ডিগ্রি বিভ্রাট! লখনউয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের কংগ্রেস নেতার

উপায় কী তা হলে আর কিছুই নেই? লোকসভা ভোটের আগে কী আর কোনও ভাবেই কর্নাটকে ভোটের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরের নাম তোলা যাবে না? কমিশনের মতে, সম্ভব নয়। কারণ ভোটার তালিকা সংশোধনের শেষ তারিখ ছিল ১৬ মার্চ। তার পর লোকসভা ভোটের আগে আর কোনও সংশোধনী হবে না। অন্য দিকে দ্রাবিড়ের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, বিষয়টিও তিনিও জানতে পেরেছেন ১৬ মার্চের পরে। ফলে তখন আর ৬ নম্বর ফর্ম জমা দেওয়ারও সুযোগ ছিল না।

কর্নাটকের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘দ্রাবিড় নিজে থেকে তাঁর নাম কেটে দিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে নতুন ঠিকানায় আবার নাম তুলতে ভুলে গিয়েছেন। বৈধ ভাবে আর তাঁর নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব নয়। শীঘ্রই এ নিয়ে নির্বাচন কমিশন সরকারি বিবৃতি দেবে।’’

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ভারতীয় এ দলের কোচ হিসেবে তিনি দেশের বাইরে থাকতেই পারেন। পারিবারিক সূত্রে না হোক, সরকারি সূত্রে বা ক্রিকেট বোর্ডের সূত্রেও তাঁর মোবাইল নম্বর জোগাড় করা বা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা আজকের দিনে খুব একটা অসম্ভব নয়। তাঁর বাড়ি গিয়ে যখন ফিরে আসতে হয়েছে, তখন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে নাম তোলার চেষ্টা কি কমিশন কর্তারা করেছিলেন? তা ছাড়া ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করার সময় কি কমিশনের আধিকারিকরা জানতেনই না যে দ্রাবিড়ের নাম ভোটার তালিকায় নেই? এই সব প্রশ্নের উত্তর অবশ্য কমিশন কর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।

Lok Sabha Election 2019 Election Commission Rahul Dravid Bengaluru
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy