পর্ন দেখা এবং স্বমেহনের অভ্যাস দাম্পত্যে ‘নিষ্ঠুরতা’ বলে গণ্য হতে পারে না এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের শর্ত পূরণ করে না বলে রায় দিল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। স্ত্রীর পর্ন দেখা এবং স্বমেহনের অভ্যাস রয়েছে বলে বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন স্বামী। হাই কোর্ট তা মঞ্জুর করেনি। বরং বলেছে, নারীর যৌন স্বাধিকার এবং ব্যক্তিগত পরিসরের অধিকার দু’টোই এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
বুধবার মাদুরাই বেঞ্চের বিচারপতি জিআর স্বামীনাথন এবং বিচারপতি আর পূর্ণিমা বলেন, আইন লঙ্ঘন না করে ব্যক্তিগত ভাবে পর্ন দেখা এবং সেই অভ্যাসের জেরে দাম্পত্যের কর্তব্য পালনে প্রতিকূল প্রভাব যদি না পড়ে, তা হলে তা নিষ্ঠুরতা বলে গণ্য হতে পারে না এবং বিবাহবিচ্ছেদের কারণও হতে পারে না। স্ত্রীর স্বমেহন নিয়ে স্বামীর অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁদের বক্তব্য, কোনও মহিলাকে এই সংক্রান্ত অভিযোগের জবাব দিতে বলা মানেও তাঁর স্বাধিকারে হাত দেওয়া। পুরুষের স্বমেহন যদি সর্বজনগ্রাহ্য হয়, মহিলাদের ক্ষেত্রে তা আপত্তিকর হতে পারে না, বলেছে হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে বিচারপতিদের বক্তব্য, “বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপন বিবাহবিচ্ছেদের কারণ বলে গণ্য হয়। আত্মরতি বিচ্ছেদের কারণ হতে পারে না। কোনও কল্পনাতেই একে নিষ্ঠুরতা বলে দাগিয়ে দেওয়া যায় না।”
তামিলনাড়ুর করুর জেলার ওই বাসিন্দা এর আগে পারিবারিক আদালতেও বিচ্ছেদের মামলা করেছিলেন। সেখানেও বিচ্ছেদ মঞ্জুর হয়নি। এর পর তিনি হাই কোর্টে আসেন। তাঁর দাবি, স্ত্রী মিতব্যয়ী নন। ঘরকন্নার কাজ করেন না। পর্ন দেখেন এবং স্বমেহনে লিপ্ত থাকেন। স্ত্রীর যৌনরোগ আছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। যদিও তার সপক্ষে কোনও প্রমাণ পেশ করতে পারেননি। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে এই দম্পতির বিয়ে হয়। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করেন। পরবর্তী কালে স্ত্রী দাম্পত্য পুনরুদ্ধারের আবেদন করলেও স্বামী বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন। হাই কোর্টের বেঞ্চ বলেছে, ‘‘ব্যক্তি পরিসরের অধিকার মৌলিক অধিকার। এর পরিধির মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিপরিসরও অন্তর্ভুক্ত। আত্মরতি নিষিদ্ধ ফল নয়। সেই ফল খেলে বিবাহের ইডেন গার্ডেন থেকে পতন হয় না।” সংবাদ সংস্থা
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)