Advertisement
২৮ মার্চ ২০২৩
Mamata Banerjee

Mamata Banerjee: ‘বাঘিনী’ মমতার প্রশংসা করেও কংগ্রেস-প্রশ্নে তৃণমূলের বিরোধী মত শিবসেনার মুখপত্রে

শিবসেনার মুখপত্রে লেখা হয়েছে, ‘লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ১০০-র বেশি আসন না পেলে কেন্দ্রে বদল এক প্রকার অসম্ভব। তাই জোটে প্রয়োজন কংগ্রেসকে।’

বাংলায় ‘বাঘের মতো’ লড়াই করে বিজেপি-কে একক ক্ষমতায় হারিয়েছেন মমতা। এমনই লেখা হয়েছে উদ্ধবদের মুখপত্রে

বাংলায় ‘বাঘের মতো’ লড়াই করে বিজেপি-কে একক ক্ষমতায় হারিয়েছেন মমতা। এমনই লেখা হয়েছে উদ্ধবদের মুখপত্রে গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২১ ১১:৫৮
Share: Save:

বাংলায় ‘বাঘের মতো’ লড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-কে একক ক্ষমতায় হারিয়েছেন তিনি। এ জন্য মমতার প্রশংসা প্রাপ্য। তবে, জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসকে ‘ব্রাত্য’ করে রাখলে পক্ষান্তরে তা বিজেপি-র মতো ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত শক্ত করবে। শিবসেনার মুখপাত্র ‘সামনা’-র সম্পাদকীয় স্তম্ভে কংগ্রেস-প্রশ্নে তৃণমূলের এমন বিরোধী অবস্থান ধরা পড়ল শনিবার। শিবসেনার মুখপত্রে এটাও লেখা হয়েছে, ‘লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ১০০-র বেশি আসন না পেলে কেন্দ্রে বদল এক প্রকার অসম্ভব। যে কারণেই কংগ্রেসকে জোট থেকে দূরে রাখলে তা নরেন্দ্র মোদী-র হাত শক্ত করবে।’

Advertisement

শুক্রবার মুম্বই থেকে ফিরেছেন তৃণমূল নেত্রী। মুম্বই সফরে শিবসেনা প্রধান তথা মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে মমতার সাক্ষাৎ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উদ্ধবের শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেই সাক্ষাৎ হয়নি। মমতার সঙ্গে দেখা করেন উদ্ধব-পুত্র আদিত্য। মমতার সঙ্গে বৈঠকে আদিত্যের সঙ্গে ছিলেন শিবসেনার রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় রাউত। বৈঠকের পর আদিত্য বলেছিলেন, ‘‘জাতীয় রাজনীতির অনেক বিষয়েই আমাদের কথা হয়েছে। আমাদের পুরনো বন্ধুত্বের সম্পর্ক। আগেও উনি যখন এসেছেন, আমাদের বৈঠক হয়েছে।’’ সফরের দ্বিতীয় দিনে শিল্পমহল, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা।

বৈঠক থেকে আভাস মিলেছিল, বিজেপি-বিরোধী অবস্থানেও মমতা-শরদ পওয়ার সমমনস্ক। তাঁরা দু’জনেই মনে করেন, বিজেপি-র বিরুদ্ধে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তিকে আরও জোরালো হতে হবে। সমমনস্ক দলগুলিকে জোট বাঁধতে হবে।

Advertisement

বস্তুত, কং‌গ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের ‘দূরত্ব’ সাম্প্রতিক অতীতে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছিল, যখন মমতা দিল্লি গিয়ে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেননি। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মমতা বলেন, ‘‘দিল্লি এলেই প্রত্যেক বার কেন দেখা করব?’’ এর পরই বলেছিলেন, ‘‘সনিয়ার সঙ্গে এ বার আর কোনও বৈঠক নেই। ওঁরা পঞ্জাবের ভোট নিয়ে ব্যস্ত। প্রত্যেক বার কেন আমাদেরই সনিয়ার সঙ্গে দেখা করতে হবে? এটা তো সাংবিধানিক বাধ্যতা নয়।’’

সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেও কংগ্রেসের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয়ে রাজি হয়নি তৃণমূল। এমনকি কংগ্রেসের ডাকা বিরোধী নেতাদের বৈঠকেও কোনও প্রতিনিধি পাঠায়নি মমতার দল। ফলে ‘ফাটল’ যে ক্রমেই চওড়া হচ্ছে, তার আভাস মিলেছে।

তবে জোট হলেও সেখানে যে কংগ্রেসকে পুরোপুরি বাদ রাখতে চায় তৃণমূল, এমনও নয়। শুক্রবার ধারবাহিক টুইট করে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ লেখেন, ‘কখনই কংগ্রেসকে বাদ রাখার কথা বলেননি (মমতা)। বিজেপি-বিরোধী জোট শক্ত করতে কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন। কংগ্রেস এখনও নীরব। তৃণমূল হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। মানুষ যেখানে চাইছেন, আমরা সাধ্যমতো দল বিস্তার করব। বাকিটা পরে শীর্ষ নেতৃত্ব যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’ তৃণমূলের মুখপত্রের সম্পাদকীয়তেও বিরোধী হিসাবে কংগ্রেস ভূমিকার সমালোচনা করে লেখা হয়েছিল, ‘বড় বিরোধী দল হিসাবে কংগ্রেস যেন পার্টিকে ডিপফ্রিজে বন্দি করে রেখেছে। সামান্য লোক দেখানো আন্দোলন ছাড়া নেতারা কার্যত ঘরবন্দি, টুইট সর্বস্ব। কিন্তু এই মুহূর্তে বিরোধী শক্তির জোটের দরকার। সেই দায়িত্ব বিরোধীরাই দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রীকে।’ নীল বাড়ির লড়াইয়ে বামফ্রন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেসের লড়াই যে তৃণমূল ভাল চোখে দেখেনি, পরবর্তী রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ সে দিকেই ইঙ্গিত করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.