(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং (ডান দিকে) সনিয়া গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
আগামী সোমবার বেঙ্গালুরুতে সনিয়া গান্ধীর ডাকা নৈশভোজে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্ভবত থাকতে পারবেন না। অন্তত এখনও পর্যন্ত তেমনই ঠিক রয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, মমতাকে ফোন করে বেঙ্গালুরুতে বিরোধী শিবিরের বৈঠকের সময় সনিয়া গান্ধীর নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। কিন্তু তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, মমতা তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচারের পর খুব বেশি ধকল নিতে চাইছেন না। রয়েছে চিকিৎসকদের নিষেধাজ্ঞাও। তা সত্ত্বেও বেঙ্গালুরুতে ১৭ ও ১৮ জুলাই বিরোধীদের বৈঠকে তিনি গরহাজির থাকতে চাইছেন না। তাই মমতা বেঙ্গালুরু যাবেন ঠিকই, তবে খুব বেশি দৌড়ঝাঁপ করা বা পায়ে চাপ নেওয়া সম্ভব হবে না তাঁর।
১৭ জুলাই বেঙ্গালুরুতে বিরোধী দলের নেতানেত্রীর পৌঁছনোর পর তাঁদের একটি সামাজিক সৌজন্যমূলক সমাবেশ হবে। তার পরে সনিয়া গান্ধীর আমন্ত্রণে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত স্থির রয়েছে মমতা ১৭ জুলাই বিকেলে বেঙ্গালুরু পৌঁছবেন। সামাজিক সৌজন্যমূলক পঁয়তাল্লিশ মিনিটের বিরোধী সমাবেশে থাকবেন। তবে নৈশভোজে যোগ দিতে পারবেন না। কলকাতা থেকে বেঙ্গালুরু যাত্রার পর চিকিৎসকদের নির্দেশ মেনে তিনি হোটেলে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকবেন। নির্ধারিত ফিজ়িয়োথেরাপি করানোর কথাও রয়েছে। ১৮ জুলাই বৈঠকের পরে তাড়াতাড়ি কলকাতা ফেরার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। মমতা নিজে না থাকলেও তৃণমূলের প্রতিনিধি নৈশভোজে উপস্থিত থাকবেন।
২০২১-এর জুলাই মাসে শেষ বার দিল্লিতে এসে মমতা দশ জনপথে গিয়ে সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। রাহুল গান্ধীও ছিলেন সেই বৈঠকে। তার পর থেকেই কংগ্রেস সম্পর্কে তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের ‘অ্যালার্জি’ দেখা দেয়। মমতা তার পরে দিল্লিতে এলেও সনিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যাননি। উল্টে বলেছিলেন, দিল্লি এলে সনিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়াটা বাধ্যতামূলক নয়। একই সঙ্গে মেঘালয়, গোয়া, ত্রিপুরায় কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়েছিল তৃণমূল। ফলে সনিয়ার নৈশভোজে মমতার অনুপস্থিতি অন্য কোনও রাজনৈতিক বার্তা দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
কংগ্রেস বলছে, পটনার পরে বেঙ্গালুরুতে ২৪টি বিরোধী দল যোগ দিচ্ছে। কংগ্রেসের তরফে ২৩টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রায় সব দলের শীর্ষনেতাই হাজির হচ্ছেন। কংগ্রেস সভাপতির দফতরে সমন্বয়ের ভারপ্রাপ্ত নেতা নাসির হুসেন বলেন, ‘‘দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী, আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরীওয়ালও বৈঠকে যোগ দেবেন বলে আমরা আশা করছি।’’ কেজরীওয়াল দিল্লির আমলাদের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ নিয়ে কংগ্রেসের সমর্থনের নিশ্চয়তা চাইছেন। শনিবার কংগ্রেসের সংসদীয় রণকৌশল তৈরির গোষ্ঠীর বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হবে।
নাসির জানিয়েছেন, এ বারের বৈঠকে বিরোধী দলগুলির ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের মূল হাতিয়ার কী হবে, কোন মতাদর্শগত জায়গা থেকে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানানো হবে, সংসদে যে সব বিষয় বিরোধীরা তুলেছিলেন, তার মধ্যে কোনগুলি নিয়ে মানুষের কাছে যাওয়া হবে, কার কোথায় শক্তি, কোথায় দুর্বলতা, এ সবই আলোচনা হবে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, দেশ জুড়ে এক সঙ্গে মোদী সরকার বিরোধী আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হবে। তার জন্য একটি কমিটি তৈরি হতে পারে। রাজ্যস্তরে আসন সমঝোতা নিয়েও আলোচনা হবে।
রাজ্যস্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন রফা ও বিরোধী জোট প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমরা বৈঠকে যাব। আরও ১৪-১৫টি দল থাকবে। আলোচনার আগে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। সেখানে যে সিদ্ধান্ত হবে, সেই মতো আমরা লোকসভা ভোটে চলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy